<p style="text-align:justify">গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো দুই বছর সময় দিতে হবে। সংস্কারের ক্ষেত্রে এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। হাসিনার পতন না ঘটলে আরো চার বছর থাকত, তাই এই সরকারকে ২ বছর সময় দিলে ক্ষতি নেই।’</p> <p style="text-align:justify">২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে তৎকালীন ভিপি নুরুল হক নুর ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এ হামলার ৫ বছর পর জড়িতদের বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আলোচনাসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। আজ রবিবার বিকেল ৩টায় ডাকসু ভবনের সামনে এই আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এসব কথা বলেন নুরুল হক নুর।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো উপদেষ্টা ব্যর্থ হলে তাদের সমালোচনা করতে হবে, দরকার হলে তাদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করতে হবে। কিন্তু দেশের সংস্কারকাজ ও গণহত্যার বিচারগুলো এই সরকারকেই করতে হবে। শুধু পুলিশের সংস্কার নয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, সশস্ত্র বাহিনীসহ সব ক্ষেত্রে সংস্কার লাগবে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সব সেক্টরে তাদের দোসরদের বসিয়েছে।’</p> <p style="text-align:justify">নুর বলেন, ‘২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী সাদ্দাম-সনজিতের নেতৃত্বে হামলা হয়েছিল। সেদিন ঢাবির প্রক্টরকে কল দিয়েও আমরা সহযোগিতা পাইনি, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের হামলাগুলোর পেছনে ঢাবির প্রক্টর গোলাম রব্বানী ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করত। ঢাবির ওই প্রক্টর শিক্ষক নামের কলঙ্ক, একজন বিকৃত মনের মানুষ। ছাত্রলীগের সব অপকর্মের দায় এই গোলাম রাব্বানী ও সাবেক ভিসি আখতারুজ্জামানকে নিতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমে শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবন যাপন করে। সেখানে পড়াশোনা করে কেউ কেউ বিসিএস ক্যাডার হয়। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবার এত খারাপ, খাবার খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও খাবারের ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘সারা দেশে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আগামী দেশের নেতৃত্বে তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে।’</p> <p style="text-align:justify">গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, “শুধু ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এ দেশীয়  ‘র’-এর এজেন্ট কুখ্যাত মাফিয়া সাদ্দাম ও সনজিতের নেতৃত্বে ডাকসুতে নারকীয় হামলা করে জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বিচারহীনতার ৫ বছর। আজও আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। সে সময় পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল, কোনো হামলা হয়নি, হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ওই সময় শিক্ষক নামের কলঙ্ক প্রক্টর গোলাম রব্বানীকে কল দিলে, তিনি বলেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে কেন এসেছি? তাকে বারবার কল দিলেও আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। সাবেক উপাচার্য আক্তারুজ্জামানেরও ইন্ধন ছিল।”</p> <p style="text-align:justify">রাশেদ বলেন, ‘এই শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করতে হবে, যারা হামলা করেছে, তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। অবৈধভাবে যারা ডাকসুতে বিজয়ী হয়, তাদের ডাকসু পদ বাতিল করতে হবে এবং ডাকসু নির্বাচনের তদন্ত হতে হবে। যে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের হত্যা, নির্যাতন করেছে, এদের নাম মুছে ফেলতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে অনেক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, ছাত্রলীগের ক্যাডার প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে চাকরি করে। এদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি সানাউল্লাহ, সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম।</p> <p style="text-align:justify">আলোচনা সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতির শিক্ষক রাশাদ ফরিদী। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ডাকসু হামলায় আহত ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা আবু হানিফ, মাহফুজুর রহমান খান, মনজুর মোর্শেদ মামুন, বরিউল হাসান প্রমুখ।</p>