জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বকরত উল্লাহ বুলু বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রশাসন এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। এজন্য যদি তার হাজার বছর জেল হয়, তার পরও শেখ হাসিনার শাস্তির পরিমাণ শেষ হবে না। বিএনপির ৩১ দফা। ৩১ বার শেখ হাসিনাকে ফাঁসি দিতে হবে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাগেরহাট খানজাহান আলী (দরগা) মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বকরক উল্লাহ বুলু বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৩০ লাখ শহীদকে এবং শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা যারা স্বীকার করে না তারা যতবড় দল হোক বা যেই হোক তাদের বাংলাদেশর মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার কোনো অধিকার নেই। তাদের নির্বাচন করারও কোনো অধিকার নেই।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে।
তার পরিবার ২৭ লাখ কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। মেঘা প্রজেক্টের নামে ২৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। লুট-পাট করে দেশের মানুষকে ফকির বানিয়েছে। শেখ হাসিনাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য ভারতে প্রতি তিনি আহবান জানান।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, দেড় মাসের আন্দোলনে একহাজার ৪০০ মানুষ শহীদ হয়েছেন। এরমধ্যে বিএনপির ৮৬২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়। আর এই সময়ে ১২৮ জন শিশু নিহত হয়েছে। এই আন্দোলনের সব চেয়ে বেশি শরিকদার ও হকদার হচ্ছে বিএনপি। অন্য কেউ না।
তিন বলেন, দেড় মাসের আন্দোলনে সফলতা আসেনি। ১৭ বছর বিএনপি রাজপথে ছিল। জেলাখানায় ও আদালতের বারান্দায় ছিল। বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হাসিনা হত্যা করেছে। দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গুম করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ৬৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিএনপির এমন কোনো নেতা নেই যে, যার বিরুদ্ধে মামলা নেই বা জেল ঘাটেনি।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংসদ পর্যন্ত যেসব নির্বাচন হয়েছে এর কোনো নির্বাচনে দেশের সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ডিসি-এসপি আর আওয়ামী লীগের গুন্ডারা ভোট করেছে। নির্বাচনে তাদের দলের মধ্যে টাকার খেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন বাস ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা অবনতি, দ্রব্যমূল্যে উর্ধগতি এসব কারণকে সামনে রেখে এই সম্মেলন। প্রশাসনের উদ্দেশে করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি হয়েছে অতিশিগগিরই তার উন্নতি ঘটানোর আহবান জানান।
বকরত উল্লাহ বুলু, প্রধান উপদেষ্টকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, দুই একজন উপদেষ্টার কথায় বিভ্রান্ত হয়ে আপনার ইমেজ ক্ষুন্ন করবেন না। নুন্যতম সংস্কার দিয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপ তৈরি করেন। কীভাবে, কবে নির্বাচন হবে তার রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।
তিনি বলেন, শেখ পরিবারের একজন মানুষও মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখ সারিতে যুদ্ধ করেনি। কিন্তু তারা দেশটা লুট করেছে। তারা লুণ্ঠন ছাড়া আর কিছুৃই জানে না। এই লুণ্ঠনের ভার থেকে জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে রক্ষা করতে হবে। সেজন্য ঐক্যবদ্ধ ছাড়া কোনো উপায় নেই। এজন্য দলের মধ্যে কোনো বিবেধ তৈরি করা যাবে না।
বরকত উল্লাহ বুলু হুশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, যারা আওয়ামী লীগের দালালি করবে তারা যতবড় নেতা হোক না কেন তাদের বিএনপি করার অধিকার নেই। যারা অপকর্ম করবে তারা বিএনপি করার অধিকার রাখে না। তাদেরকে বিএনপি থেকে বের করে দিতে হবে।