সাপ্তাহিক বাজারদর

মুরগি, ডিম ও সবজির দাম বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মুরগি, ডিম ও সবজির দাম বেড়েছে

সারা দেশে মাসখানেক ধরে চলা দাবদাহে খামারিদের মুরগি মারা যাওয়ায় বাজারে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে। এতে মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে প্রচণ্ড গরমে কৃষকের ক্ষেতের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সরবরাহ কমে বাজারে দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এখন বাজারে মুরগি, ডিম ও সবজির সরবরাহ কম।

এ কারণে তিনটি নিত্যপণ্যেরই দাম বাড়তি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা ও বাড্ডা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারগুলোতে ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ডজনপ্রতি ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম না বাড়লেও গত সপ্তাহে কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৩৭০ থেকে ৪০০ টাকায় উঠে যায়।

এখনো বাজারে আগের বাড়তি দামেই সোনালি মুরগি বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

রাজধানীর বাড্ডার ডিম বিক্রেতা মো. মিরাজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়। এখন পাইকারিতে দাম বাড়ার কারণে খুচরায় প্রতি ডজন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করছি।

গত সপ্তাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ডিমের চাহিদা কম ছিল, তাই দামও কম ছিল। এখন আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হওয়ায় ডিমের চাহিদা বাড়লেও বাজারে সরবরাহ কম। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।’

বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘মূলত উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। ডিমের সরবরাহ কম থাকলে বাজারে এমনিতেই দাম বাড়তি থাকে।

খামারিরা উৎপাদনে ফিরতে পারলে ডিমের দাম আবার কমে আসবে।’

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম বাড়লেও ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত ছিল। এবার ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মূলত খামারে মুরগি কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে দাম বাড়তি।’

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির দৈনিক বাজারদর প্রতিবেদনেও মুরগি ও ডিমের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি দেখা গেছে। গতকালের বাজারদরের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়, গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ১৮৫ থেকে ২০০ টাকায়। ফার্মের মুরগির প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা।

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) গত বছরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সাধারণত প্রতিদিন চার কোটি ডিম উৎপন্ন হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, উৎপাদনের পরিমাণ আরেকটু বেশি।

পেঁপে ৮০ টাকা কেজি

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। টমেটো ৬০ টাকা, বেগুন মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চালকুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকা।

বাড্ডা বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল খায়ের বলেন, গত দুই সপ্তাহের প্রচণ্ড তাপমাত্রার কারণে কৃষকের  ক্ষেতের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে ঢাকার বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। মূলত এ কারণেই সবজির দাম বেড়েছে।

হিলিতে ওঠানামা করছে পেঁয়াজের দাম

ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার খবরে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দরে কোনো প্রভাব নেই। আগের বাড়তি দামেই দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২৪০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

আমদানি পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। তবে রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বন্দরের আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি করেননি।

পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর আমদানি হবে—এমন খবরে বাংলাহিলি বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করেছে। গতকাল দুপুরে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা জানান, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এরই মধ্যে ২০ জন আমদানিকারক নতুন করে ২৭ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত সরকারের আরোপ করা ৪০ শতাংশ শুল্ক এখনো অব্যাহত আছে। ৪০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার না করলে পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব হবে না। ৪০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে অতিরিক্ত ২৫ টাকা গুনতে হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠ’র হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি]

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রি কবে? যা জানা গেল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রি কবে? যা জানা গেল
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকে ১০ বছর মেয়াদি গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বন্ড বিক্রির নিলাম মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে মঙ্গলবার ১০ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বন্ড বিক্রির নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এ নিলামে ১০ বছর মেয়াদি ৪ হাজার কোটি টাকা অভিহিত (লিখিত) মূল্যের বন্ড ইস্যু করা হবে।

এ বন্ডের জন্য বার্ষিক কাট অব ইয়েল্ড হারে কুপন বা মুনাফা ষাণ্মাষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হবে।

আরো পড়ুন

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট এবং দোকানপাট বন্ধ

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট এবং দোকানপাট বন্ধ

 

বাংলাদেশ ব্যাংক আরো জানায়, নিলামে শুধু সরকারি সিকিউরিটিজের প্রাইমারি ডিলারের ভূমিকায় নিয়োগ পাওয়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিড করতে পারবে। তবে অন্যান্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও নিজস্ব খাতে তাদের ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের জন্য প্রাইমারি ডিলারের মাধ্যমে নিলামে বিড করতে পারবে।

অভিহিত (লিখিত) মূল্যে প্রতি ১০০ টাকা মূল্যের বন্ড ক্রয়ের জন্য কাঙ্ক্ষিত প্রাইস ও বন্ড ক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখ করে নিলামে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থাপিত এফএমআইর মাধ্যমে বিড দাখিল করতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আরো পড়ুন

আজ ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায়

আজ ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায়

 

তবে বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতি নিয়ে ম্যানুয়াল বিডস ইন সিলড কভারস পদ্ধতিতে বিড দাখিল করা যাবে।

এদিকে নিলামে অংশগ্রহণের বিস্তারিত নির্দেশনা এরই মধ্যে প্রাইমারি ডিলারসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মন্তব্য

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ২০ রমজানের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ২০ রমজানের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে
সংগৃহীত ছবি

শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, বোনাসসহ সকল পাওনা ২০ রমজানের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া মার্চ মাসের বেতনের কমপক্ষে ১৫ দিনের বেতন মালিকপক্ষ তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী দেবেন।

আসন্ন ঈদুল ফিতর পূর্ববর্তী শ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের বেতন বোনাস ও ছুটি সংক্রান্ত পর্যালোচনার জন্য ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৫তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিজয়নগর শ্রম ভবনে আয়োজিত সভায় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ থেকে ৭টি বিষয়ে যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্তগুলো হলো :

১. আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা যাবে না।

২. কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক প্রতিনিধিরা আলোচনা করে শ্রম আইন অনুযায়ী দ্রুত ঈদুল ফিতরের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করবেন। এক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী কারখানার সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রক্ষা করা বাঞ্ছনীয়।

৩. শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, বোনাসসহ সকল পাওনা ২০ রমজানের মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে হবে।

শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতনের কমপক্ষে ১৫ দিনের বেতন মালিকপক্ষ তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী দেবে।

৪. বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএসহ মালিক পক্ষের ক্যাশ ইনসেনটিভ বাবদ সরকারের কাছে পাওনা পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হবে।

৫. আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ, ছুটি সংক্রান্ত বিষয়সহ সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় সজাগ দৃষ্টি রাখবে।

৬. সার্বিক পরিস্থিতি কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিংয়ের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গঠিত কমিটির পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শ্রম)-এর নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করা হবে।

কমিটিতে শ্রমিক-মালিক পক্ষের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/সংস্থার প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

৭. বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমঘন এলাকায় ২৮-০৩-২০২৫ থেকে ২৯-০৩-২০২৫ তারিখ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো খোলা রাখতে হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) এর সদস্য হিসেবে শ্রমিকপক্ষ, মালিকপক্ষ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

আরো ৩ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আরো ৩ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বেসরকারি খাতের আরও তিনটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো– এনআরবি কমার্শিয়াল, এনআরবি ও মেঘনা ব্যাংক। বুধবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এসব ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পরিচালকদের অনেকেই পলাতক।

সরকার পতনের পর থেকে এ নিয়ে ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

উল্লেখ, সরকার পরিবর্তনের পর এস আলম নিয়ন্ত্রণাধীন ইসলামী ব্যাংকসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্বিতীয় বারের মতো একশনে গিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

আরো পড়ুন
প্রশ্ন ফাঁসে অভিযুক্ত শিক্ষককে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রশ্ন ফাঁসে অভিযুক্ত শিক্ষককে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, তদন্ত কমিটি গঠন

 

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পরই ব্যাংকিং খাতে বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আর্থিক খাতকে ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেন। এর মধ্যে বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের হাত থেকে রাহুমুক্ত করেন ইসলামী, এসআইবিএল, ফার্স্ট সিকিউরিটিসহ আরো কয়েকটি ব্যাংক। এ ছাড়া আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, কঠোর নজরদারির মাধ্যমে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচার রোধ, মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদহার বৃদ্ধিসহ আরো কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গত সাত মাসে। সাহসী পদক্ষেপে আস্থায় ব্যাংক খাতএরই মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে খুব শিগগির আরো ইতিবাচক ফল আসবে বলে আশাবাদী গভর্নর।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর ধরেই নানামুখী সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত। গত দুই বছরে এই সংকট আরো গভীর হয়েছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাধ্যমে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ, ঋণের নামে ব্যাংক লুটপাট আর বিদেশে অর্থপাচার, লাগামহীন খেলাপি ঋণ, ব্যাংকে তীব্র তারল্য সংকট, ডলার ও রিজার্ভ সংকটে ব্যাংক খাতের ক্ষত আরো গভীর হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, সেটিও পালন করেননি ওই সময়ের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

বরং দফায় দফায় তার ভুল নীতির খেসারত দিতে হয়েছে ব্যাংক খাতকে। এতে ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থাহীনতা বাড়ে।

মন্তব্য

সোনার দোকানে বাড়ছে চুরি-ডাকাতি, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা চায় বাজুস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সোনার দোকানে বাড়ছে চুরি-ডাকাতি, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা চায় বাজুস
সংগৃহীত ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই ও ব্যবসায়ীদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। এসব অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীদের হাতে জুয়েলারি ব্যবসায়ী খুন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনাও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জান-মালের নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে জুয়েলারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে সংঘটিত অপরাধ ও অপরাধীদের দমনে বর্তমান সরকারের নেওয়া কার্যকর উদ্যোগের জন্য কৃজ্ঞতা প্রকাশ করেছে দেশের পণ্যভিত্তিক সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বুধবার (১২ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় বাজুস।

বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমের তথ্য পর্যালোচনা করে বাজুস বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চোর ও ডাকাত চক্রের মূল লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ৮ মাসে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ১৭টি প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে।

যাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এই ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ বলেন, বারবার টার্গেট করা হচ্ছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের ওপর। এই সব ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।

এই পরিস্থিতিতে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সহযোগীতা কামনা করছি।

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় বলেন, এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ও সোনা ব্যবসায়ীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সাথে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সকৃত বৈধ অস্ত্র অনতিবিলম্বে ফেরত প্রদানের জন্য তিনি অনুরোধ করেন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নতুন বছরের প্রথম তিন মাসেই সারা দেশে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে ১১টি।

যার মধ্যে গত ৩ জানুয়ারি সীমান্ত সম্ভার মার্কেটস্থ ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স থেকে ১৫৯ ভরি সোনার অলংকার, ৯ জানুয়ারি সিলেটের নুরানী জুয়েলার্স থেকে ২৫০ ভরি সোনা, একই দিন ফরিদপুরের প্রগতি জুয়েলার্সে ভরদুপুরে চুরির চেষ্টা, ১২ জানুয়ারি পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ঐশী জুয়েলার্স থেকে ৬০ ভরি সোনার অলংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা, ২৪ জানুয়ারি ঢাকার হাজারীেবাগস্থ ইতি জুয়েলার্স থেকে ৭০ ভরি সোনার অলংকার, ৯ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ২৫ ভরি সোনা, ২০ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের পুস্পিতা জুয়েলার্স থেকে ১৪ ভরি সোনা ও ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়।

এ ছাড়া গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বনশ্রীতে ব্যবসা শেষে ফেরার সময় নিজ বাসার সামনে গুলি করে ২০০ ভরি সোনা ও ২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

২৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১০ এর শাহআলী প্লাজা মার্কেটে জুমার নামাজের সময় ১৪-১৫ জনের একটি ডাকাতচক্র লুনা জুয়েলার্স থেকে তালা কেটে ডাকাতির চেষ্টা করে। দিনদুপুরেও এরূপ ঘটনা ব্যবসায়ীদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। শুধু তা-ই নয়, গত ৯ মার্চ ঝালকাঠিতেও সোনার দোকানে ডাকাতির চেষ্টা করে। সর্বশেষ ৯ মার্চ রাতে আশুলিয়াতে নিজ দোকানে দিলীপ কুমারকে কুপিয়ে হত্যা করে ১৫-২০ ভরি সোনা লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

এ ছাড়া গত বছর দেশের বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ