শিক্ষার্থীদের ব্যাপক মানসিক ক্ষতি হয়েছে : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শিক্ষার্থীদের ব্যাপক মানসিক ক্ষতি হয়েছে : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
সংগৃহীত ছবি

বিগত ১৭ বছরে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত দিনব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন
রাজনগরের ৮ ইউনিয়নে গঠিত বিএনপির আহবায়ক কমিটি বাতিল

রাজনগরের ৮ ইউনিয়নে গঠিত বিএনপির আহবায়ক কমিটি বাতিল

 

 উপাচার্য বলেন, ‘১৭ বছরে দেশব্যাপী বৈষম্য, ভোটাধিকার হরণ, খুন, গুম এবং নৈরাজ্যের রাজনীতি দেখে শিক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত। জুলাই বিপ্লবে তাদের আকাশ থেকে গুলি করে মারার মর্মান্তিক দৃশ্য দেখতে হয়েছে।

ভ্যানে করে শহীদের লাশ নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি দেখতে হয়েছে। বিপ্লবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের আগুনে পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে।’
 
তিনি আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দেখতে দেখতে আজ তারা ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। আর এজন্যই দেশব্যাপী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে পর্যায়ক্রমে কর্মশালা পরিচালনা করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরো পড়ুন
বিমানে হঠাৎ অসুস্থ বাবর, ভর্তি করা হলো দুবাই হাসপাতলে

বিমানে হঠাৎ অসুস্থ বাবর, ভর্তি করা হলো দুবাই হাসপাতলে

 


 
উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের। তিনি বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করলে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তন হবে। এ শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুনির্দিষ্টভাবে ঢেলে সাজাতে হবে যেন একজন শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে তার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।’
 
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব কাজী মো. আব্দুর রহমান এবং সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ মশিউল হোসাইন।

আরো পড়ুন
ঘোড়াঘাটে ইউনিয়ন আ. লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

ঘোড়াঘাটে ইউনিয়ন আ. লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

 


 
এছাড়া এই কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও কোর্স কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ তানভীর রহমান, ক্লিনিকেল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান মজুমদার, এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সিলিং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিজা ফেরদৌসী এবং বাংলাদেশ গার্হস্থ অর্থনীতি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক নাঈমা রুম্মান শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ক্যাম্পাসেই ঈদ, চাকরির স্বপ্নে উৎসবে ভিন্ন রং

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
ক্যাম্পাসেই ঈদ, চাকরির স্বপ্নে উৎসবে ভিন্ন রং
চাকরিপ্রত্যাশী নিয়ন লেখাপড়ায় মন দিতে এবার ক্যাম্পাসেই ঈদ করছেন

বাংলাদেশের তরুণদের বড় একটি অংশের স্বপ্ন সরকারি চাকরি। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণের পথটা সহজ নয়—প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং নিয়মিত পড়াশোনা। চাকরির প্রস্তুতির এই চাপে উৎসবের দিনগুলোতেও পড়ার টেবিল ছাড়ার সুযোগ মেলে না। ঈদের মতো আনন্দঘন মুহূর্তগুলো যখন পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়, তখন সেই উৎসবের রংও হয় অন্যরকম।

ঠিক তেমনই এক গল্প শোনালেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ নাজমুল আহসান হলের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান নিয়ন।

নিয়নের মতো অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যারা চাকরির প্রস্তুতির জন্য ঈদের ছুটিতেও ক্যাম্পাসে থেকে যান। পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটানোর ইচ্ছা থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির তাগিদে নিজেকে পড়ার টেবিলে আবদ্ধ রাখতে হয়। নিয়ন বললেন, 'অনেকেই মনে করেন, উৎসবের দিনে পড়াশোনা করতে কষ্ট হয়।

সত্যি বলতে, কষ্ট তো হয়ই। পরিবার ও প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরে থাকা সহজ নয়। তবে একটা লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে চলার জন্য এই ত্যাগ মেনে নিতে হয়।'

ক্যাম্পাসে ঈদ উদযাপনও এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

নিয়ন বলেন, ‘আমার মতো আরো অনেকেই ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পাসে থাকেন। বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র সবাই মিলে একসঙ্গে ঈদের দিনটি কাটানোর চেষ্টা করি। কাছে কোনো পরিচিতজনের বাসা থাকলে, সেখান থেকে আসা খাবার ভাগাভাগি করি, মজার গল্পে সময় কেটে যায়। হলে যারা কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাদের সঙ্গে গল্প-গুজব হয়। তবুও যখন সন্ধ্যা নামে, পরিবারের কথা আরো বেশি মনে পড়ে।
'

চাকরির প্রস্তুতির তাগিদে পরিবার থেকে দূরে থাকা নিঃসন্দেহে কষ্টকর। তবে নিয়নের মতে, এই কষ্টই ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়। ‘আমরা যারা ক্যাম্পাসেই ঈদ করি, তাদের উৎসবটা হয়তো একটু ভিন্ন; কিন্তু স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে চলার শক্তি জোগায়। এই সাময়িক কষ্টের পর একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে পারব—এই বিশ্বাসই আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে, বললেন নিয়ন।

নিজের স্বপ্ন পূরণ করে পরিবারের হাল ধরার জন্য যারা নিরলস পরিশ্রম করছেন, তাদের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে নিয়ন বলেন, ‘চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিটি তরুণের ত্যাগ যেন তাদের সাফল্যের পথকে সুগম করে, সেই প্রত্যাশা করি। সবার কাছে দোয়া চাই যেন একদিন এই পরিশ্রমের ফল মেলে এবং আমরা আমাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারি।’

পরিবার থেকে দূরে থাকলেও স্বপ্নের পথচলায় অনুপ্রাণিত নিয়নদের মতো হাজারো তরুণ। তাদের এই ত্যাগ আর পরিশ্রমই হয়তো বদলে দেবে আগামীর বাংলাদেশ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বাকৃবিতে ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারী ও অটোচালক আটক

বাকৃবি প্রতিনিধি
বাকৃবি প্রতিনিধি
শেয়ার
বাকৃবিতে ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারী ও অটোচালক আটক
ছবি: কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় এক ছিনতাইকারী ও তার সহযোগী অটোচালককে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (৩০ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান। এর আগে শনিবার (২৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টার তাদের আটক করা হয়। 

আটককৃতরা হলেন—ময়মনসিংহের ফকিরাকান্দা এলাকার মো. আসিফ (১৯) এবং একই এলাকার অটোচালক মো. ইয়াসিন মিয়া (জিয়াদ)।

উপপরিদর্শত মোখলেছুর রহমান জানান, শিকারাকান্দা থেকে ব্রিজের মোড়ে যাওয়ার জন্য এক যাত্রী মো. ইয়াসিন মিয়ার অটোতে উঠেছিলেন। পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয় ওই যাত্রী। ছিনতাইকারীরা তার কাছ থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে অটো থেকে নামিয়ে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে পৌঁছালে ছিনতাইকারীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়।

এতে আশপাশের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা ছিনতাইকারীদের দুইজন সদস্যকে আটক করেন। এ সময় আরো ৩-৪ জন পালিয়ে যায়।

এসআই মোখলেছুর রহমান বলেন, ‌‌‌‘প্রথমে ছিনতাইকারীরা তাদের অপরাধ অস্বীকার করলেও পরে নিজেদের দোষ স্বীকার করে নেয়। এরপর তাদের বাকৃবি পুলিশ ক্যাম্পে রাখা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।’
 

মন্তব্য

জালিয়াতির অভিযোগে তামীরুল মিল্লাতের অধ্যক্ষ বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জালিয়াতির অভিযোগে তামীরুল মিল্লাতের অধ্যক্ষ বরখাস্ত
সংগৃহীত ছবি

খাতা মূল্যায়নে জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎসহ একাধিক অভিযোগে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা যাত্রাবাড়ীর অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মাদ আবু ইউছুফকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ১২ মার্চ মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

অফিস আদেশে বলা হয়, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির ১২ মার্চের সভায় আপনার বিরুদ্ধে ট্রাস্ট কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আনীত ২০টি অভিযোগের প্রতিবেদন আলোচিত হয়। সব দিক বিবেচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে আপনার বরখাস্তের মেয়াদ ২০ মার্চ থেকে আরো দুই মাস বাড়িয়ে ছয় মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।

বরখাস্তকালে মাদরাসা থেকে সব প্রকার সুযোগ-সুবিধা বন্ধ থাকবে।

আরো পড়ুন
কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে গুজব

কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে গুজব

 

এ বিষয়ে মাওলানা আবু ইউছুফ বলেন, ‘কোনো বিষয়ে অভিযোগ থাকলে প্রথমে শোকজ দিতে হয়। শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট না হলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সে রকম হয়নি, আমাকে সরাসরি বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আবার দুই মাস বাড়িয়ে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটিও আইনসংগত হয়নি।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বাজারের মাংসে টাইফয়েড-ডায়রিয়ার জীবাণু, জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি

বাকৃবি প্রতিনিধি
বাকৃবি প্রতিনিধি
শেয়ার
বাজারের মাংসে টাইফয়েড-ডায়রিয়ার জীবাণু, জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি
সংগৃহীত ছবি

স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাংস প্রাপ্তি মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষ প্রতিদিন মাথাপিছু ১৪৩ দশমিক ৭৭ গ্রাম মাংস খেতে পায়। দৈনন্দিন জীবনে আমিষের চাহিদা পূরণে মাংসের অবদান অনস্বীকার্য। তবে, দেশের অধিকাংশ স্থানীয় পোল্ট্রি বাজারে এখনো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই করা হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি।

 

সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষকের পরিচালিত গবেষণায় ময়মনসিংহ সদরের বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে সাধারণভাবে জবাইকৃত মুরগির মাংসে মিলেছে টাইফয়েড (সালমোনেলা) ও ডায়রিয়া (ইকোলাই) রোগের জীবাণু। এছাড়াও দোকানে মুরগি অসুস্থ হলে বেশিরভাগ দোকান মালিক (৯৬.১৫ শতাংশ) মুরগি আলাদা রাখা বা মেরে ফেলার পরিবর্তে বিক্রি করে দেন বলে ওই গবেষণায় উঠে আসে। 

আরো পড়ুন
বাঘায় পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

বাঘায় পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

 

ময়মনসিংহ সদর ও এর আশেপাশের পোল্ট্রি বাজারসমূহের অবস্থা পর্যেবক্ষণ, বায়োসিকিউরিটি এবং পোল্ট্রি জবাইকরণ সম্পর্কে বিক্রেতাদের মনোভাব যাচাইকরণ এবং সেখানে বিক্রয়কৃত মাংসের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের (বাকৃবি) পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখা কর্তৃক আয়োজিত ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনার -২০২৫-এ উপস্থাপিত হয়।

 

ওই গবেষণায় দেখা গেছে, স্থানীয় বাজারের সাধারণভাবে জবাইকৃত মাংসে ক্ষতিকর ইকোলাই ও সালমোনেলা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উপস্থিতি রয়েছে, যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় মাংসে এগুলো থাকার কথা নয়। এসব মাংসের নমুনায় সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ লগারিদম ৪.০২ থেকে লগারিদম ৫.৫৯ সিএফইউ/গ্রাম এবং ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ লগারিদম ৪.০১ থেকে লগারিদম ৫.৯৪ সিএফইউ/গ্রাম পর্যন্ত পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাজারের নমুনায় মোট কার্যকর ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণও (টিভিসি) ছিল বেশি। 

গবেষণাটিতে ময়মনসিংহ সদরের চরপাড়া বাজার, মিন্টু কলেজ বাজার, মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, সানকিপাড়া বাজার, কেওয়াটখালী বাজার, শেষমোড় বাজার, সুতিয়াখালী বাজার, ভাবখালী বাজার, কে আর মার্কেট, শম্ভুগঞ্জ বাজার এবং গাছতলাসহ ১২টি স্থানীয় বাজারের পোল্ট্রি দোকানের তথ্য নেওয়া হয়।

একটি সুনির্ষ্টি প্রশ্নাবলীর তালিকা অনুসরণ করে এই ১২টি বাজারের ২৪টি পোল্ট্রি দোকানের কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। এসব বাজারে সাধারণভাবে জবাইকৃত এবং প্রসেসিং ইউনিটের পদ্ধতি অনুসরণ করে পোল্ট্রি ফার্মে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাইকৃত মোট ২৬টি মাংসের (উরু এবং বুকের মাংস) নমুনা এবং ২টি পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। নমুনাগুলো বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল বলে জানান অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন। 

গবেষণায় উঠে আসা স্থানীয় বাজারের মুরগির দোকানগুলোর অবস্থা সম্পর্কে গবেষকরা বলেন, গবেষণার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে ৮৪.৬২ শতাংশ দোকানে মুরগি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই, ৯২ শতাংশ দোকানে ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই এবং ৪৬.১৫ শতাংশ দোকানে পর্যাপ্ত আলো ছিল না। এছাড়াও, ৩০.৭৭ শতাংশ দোকানে মাংস কাটার জায়গা অস্বাস্থ্যকর ছিল এবং পরিকল্পিত বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না।

এরকম পরিস্থিতি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি এবং দূষণের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।

স্বাস্থ্যকর মাংস প্রাপ্তির বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারগুলোর অধিকাংশ পোল্ট্রি দোকানে অপর্যাপ্ত জায়গায় পাখিগুলোকে রাখা হয় এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই করা হয় যা অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পন্ন এবং নানা রোগ বিস্তারের কারণ হতে পারে। এর সমাধানে স্থানীয় বাজারগুলোতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাংস পৌছে দেওয়া সম্ভব। 

তিনি আরো বলেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাজারগুলোতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা গেলে তা একইসাথে যেমন নিরাপদ মাংস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে, পাশাপাশি স্থানীয় পোল্ট্রি দোকানগুলো আরো লাভজনকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। উল্লেখ্য যে, প্রসেসিং ইউনিটের মাংসে কোনো সালমোনেলা বা কলিফর্ম সনাক্ত করা যায়নি, যা ইঙ্গিত করে যে প্রসেসিং ইউনিট থেকে পাওয়া মাংস খাওয়ার জন্য নিরাপদ।

প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারের পোল্ট্রি দোকানীদের ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট স্থাপনে উৎসাহিত করতে হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পোল্ট্রি মুরগি বিক্রি বন্ধ করতে হবে। বাজার থেকে মাংস কেনার সময় ক্রেতাদের সতর্ক হতে হবে। ক্রেতা ও বিক্রেতাকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাইকৃত মাংসের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন ওই অধ্যাপক।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ