<p>কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মামলা জন্য প্রস্তুত করা এজাহারের কপি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ফেনী জেলা আদালতের গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।</p> <p>মুক্তিযোদ্ধার ছেলে এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বিপ্লব বলেন, ফেনী আদালতের একজন আইনজীবীর মাধ্যমে মামলার এজাহার তৈরি করেছিলাম। এজাহারে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। বিকেলে তার বাবাকে আদালতে নিয়ে আসেন এজাহারে স্বাক্ষর করানোর জন্য। বিকেল ৪টার দিকে তারা আদালতের গেট থেকে বের হওয়া মাত্রই ২০-৩০ জন লোক তাদেরকে ঘিরে ফেলে। জোর করে এজাহারের কপি ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।</p> <p>তিনি আরো বলেন, 'এ ঘটনার পর বাবাকে নিয়ে ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রবেশ করে নিজেদের রক্ষা করি। পুলিশের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। পুলিশ বলেছে, সরাসরি যেতে সমস্যা হলে এজাহারের কপি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে। আমরা মামলা করব।' </p> <p>বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু বলেন, 'আমরা কি এমন দিন দেখার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম? আজকে মামলার এজাহার নিয়ে ফেনী কোর্ট থেকে বের হতেই এজাহারের কপি ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি' যারা এ ঘটনা করেছে তারা সবাই ফেনীর জামায়াত-শিবিরের লোক। আমার শরীর ভালো না। এই বয়সে এতো লাঞ্ছনা সহ্য হয় না।'</p> <p>চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান বলেন, 'ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য আজকে গাড়িও পাঠিয়েছিলাম। বলেছি, নিরাপত্তা দিয়ে তাকে নিয়ে আসব। এরপরও মামলাটা হোক। কিন্তু তিনি তখন আসেননি। এরপর বলেছি, আসতে সমস্যা হলে হোয়াটসঅ্যাপে এজাহারের কপি পাঠাতে। আর ফেনীর আদালত গেটে কী হয়েছে- সেটা আমি বলতে পারব না।' </p> <p>ফেনী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিআইও ওয়ান) পরিদর্শক মোহাম্মদ রশিদ বলেন, 'বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু ও তার ছেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসে তাদের ওপর হামলা হয়েছে বলে নিরাপত্তা চান। তাৎক্ষণিকভাবে ফেনী মডেল থানা পুলিশকে কল করে তাদের নিরাপত্তা দিয়ে নিরাপদ গন্তব্যে পাঠিয়ে দিয়েছি।' </p> <p>ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, ফেনী আদালত এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু হামলা বা লাঞ্ছনার বিষয়টি সঠিক নয়। তিনি আদালত এলাকায় অনিরাপত্তা বোধ করায় পুলিশের আশ্রয় নিয়েছেন। পরে থানা পুলিশের একটি দল তাকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।</p> <p>রবিবার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানুর (৭৮) গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওইদিন রাতেই এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলার সৃষ্টি হয়।</p>