<p style="text-align:justify">দেড় যুগ ধরে হামলা-মামলা, জুলুম-নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করেছে যশোর বিএনপি।</p> <p style="text-align:justify">রবিবার (১২ জানুয়ারি) যশোর শহরতলির একটি বেসরকারি পার্কে এই আয়োজনে প্রায় চার হাজার মানুষ অংশ নেয়।</p> <p style="text-align:justify">দীর্ঘ জুলুমের ট্রমা কাটাতে এই আয়োজন বলে জানান, দলটির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।</p> <p style="text-align:justify">আয়োজকরা জানান, এই অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অংশ নেন দলের শুভাকাঙ্ক্ষীরাও; যারা বৈরী সময়ে দলের জন্য ভূমিকা রেখেছেন। যেমন আওয়ামী লীগ জামানায় বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য সাউন্ড সিস্টেম, ডেকোরেটর সামগ্রী, গাড়িভাড়া দেওয়া নিষেধ ছিল সরকারি দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে। এরপরও গোপনে অনেক ব্যবসায়ী তাদের মাইক, গাড়ি, চেয়ার-টেবিল, শামিয়ানা দিয়ে সহযোগিতা করেছে বিএনপিকে।</p> <p style="text-align:justify">এই আয়োজনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য সবার চোখে পড়ে। তা হলো, কারাগারে বন্দিরা যেভাবে মেঝেতে বসে খাবার গ্রহণ করেন, এখানেও সেই ব্যবস্থা রাখা হয়। দলের যেসব নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন, শুধু তাদের জন্যই ছিল এই ব্যবস্থা। আমন্ত্রিত অতিথিসহ অন্যরা চেয়ারে বসে খাবার গ্রহণ করেন।</p> <p style="text-align:justify">আয়োজকরা জানান, যশোর নগর ও সদর উপজেলা বিএনপি যৌথভাবে বেলা ১১টায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। চলে বিকাল পর্যন্ত। শহর ও সদর উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার ব্যক্তির এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার মানুষ অংশ নেন। যোগ দিয়েছিলেন সব উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতারাও।</p> <p style="text-align:justify">জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘আমার নামে ৪২টা মামলা। অনেকবার জেল খেটেছি। বাড়িতে হামলা হয়েছে কয়েক দফা। অন্য নেতাকর্মীদের অবস্থাও এমন। নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতাকর্মীদের নিয়ে আজকের এই অভিনব আয়োজন।’</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। তিনি বলেন, ‘এই আয়োজনের জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে বিএনপিকে ধন্যবাদ। বিএনপি ও জামায়াত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে সবচেয়ে নির্যাতিত ছিল। একই মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা আসামি হয়েছেন।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমরা একই সাথে ছিলাম, একই সাথে থাকবো।’</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক নারীর উপস্থিতি দেখা যায়। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও যেসব নারী বিপদের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের আশ্রয় দিয়েছেন তারা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।</p> <p style="text-align:justify">বিএনপি নেতা অমিত বলেন, ‘আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না কত মানুষ আমাদের কতভাবে সহযোগিতা করেছেন। যারা নিজ বাড়িতে বিএনপি নেতাকর্মীদের দিন-রাত আশ্রয় দিয়ে নিরাপদে থাকতে সহযোগিতা করেছেন, আমরা তাদের ভুলতে পারি না।’</p>