মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে হত্যার ১৭ দিন পর ফেলে যাওয়া জুতা আর বাইসাইকেলের ভাঙা পেডেলের আলামত ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত দিবস রেংগেট (১৯) ও তার বন্ধু উজ্জ্বল বাউরিকে (২৩) আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।
ওসি জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি শমশেরনগর চা-বাগানের ১১ নম্বর সেকশনের ঢালে ১০-১১ বছর বয়সী মেয়ের মরদেহ পড়ে ছিল। নিহতের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন এবং গলা কাটা ছিল।
ঘটনাস্থলে কমলগঞ্জ থানা ও শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি সদস্যসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। অনুসন্ধানে তারা জানতে পারেন, মরদেহটি শমশেরনগর চা-বাগানের ৬ নম্বর টিলার আপ্পারাও রেলীর মেয়ে পূর্ণিমা রেলী (১০)।
সুরতহাল প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলাটির তদন্তে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) সার্কেলের তত্ত্বাবধানে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা হওয়া শুরু হয়।
ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভুঁইয়া, তদন্তকারী কর্মকর্তা রতন কুমার হালদারের সমন্বয়ে একটি অভিজ্ঞ টিম গঠন করা হয়।
কমলগঞ্জ থানা এই মামলা উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল সাপোর্ট সরবরাহ করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা তিন জোড়া স্যান্ডেল, একটি বাইসাইকেলের পেডেল, একটি পুরাতন গামছার সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তি ও নিয়োগ করা সোর্সের দেওয়া তথ্য মোতাবেক ওই আভিযানিক টিম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত নারায়ণ টিলার লাছানা রেংগেটের ছেলে দিবস এবং একই এলাকার সুনিল বাউরির ছেলে উজ্জলকে শমশেরনগর চা-বাগান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা উভয়ে পূর্ণিমাকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন করে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন দিবস। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা দুই জোড়া পুরুষ স্যান্ডেলের মধ্যে এক জোড়া তার এবং অপর জোড়া উজ্জলের বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, গামছাটি উজ্জ্বলের এবং বাইসাইকেলের পেডেলটি তার নিজের সাইকেলের। সাইকেলটি উজ্জ্বলের বসতভিটার গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। সাইকেলটির পেডেল ছিল না।
মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।
এই সংবাদ সম্মেলনে শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভুঁইয়া এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা রতন কুমার হালদারসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।