ডিএসবির এসআই পরিচয়ে গৃহবধূকে তুলে নেওয়ার হুমকি

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
শেয়ার
ডিএসবির এসআই পরিচয়ে গৃহবধূকে তুলে নেওয়ার হুমকি
সংগৃহীত ছবি

গোয়েন্দা সংস্থা ডিএসবির এসআই পরিচয় দিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এক গৃহবধূকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকালে ওই গৃহবধূর ওয়াটসঅ্যাপ নম্বরে টাকা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে এ ধরনের হুমকি দেওয়া হয়।

ওই গৃহবধূর স্বামী জানান, একটি নম্বর থেকে তার স্ত্রীর নম্বরে ফোন করে বলা হয় তিনি জনৈক সাদেক মিয়ার বিরুদ্ধে চেক ডিজওনার মামলা করেছেন। আদালত থেকে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পড়েছে তার ওপর।

তিনি ডিএসবির উপপরিদর্শক (এসআই)। আজই তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এজন্য কিছু খরচ লাগবে। 

এ কথা শুনে গৃহবধূ জানতে চান কত টাকা? সম্মানজনকভাবে দেওয়ার জন্য বলে ফোনটি কেটে দেন।

টাকা না দেওয়ায় কিছুক্ষণ পরপর ফোন করে তাগাদা দিতে থাকেন ওই ব্যক্তি। 

আরো পড়ুন
শিশুকে নিপীড়নের চেষ্টা, যুবককে গণধোলাই

শিশুকে নিপীড়নের চেষ্টা, যুবককে গণধোলাই

 

এক পর্যায়ে তিনি গৃহবধূকে বলেন, ‘আমার ফোনটি আপনারা কেটে দেন, সাহস কম না! আপনি জানেন আমি কি করতে পারি। চেক মামলায় ৫১ লাখ টাকা লিখেছেন। আসলে একের আগে ৫ বসিয়ে টাকার অঙ্ক বাড়িয়েছেন।

এটা অপরাধ প্রতারণা। এই জন্য দুইজনেরই জেল খাটতে হবে। তাছাড়া ১১ টা ৫৬ মিনিটে রকেট বা বিকাশের নম্বর দিতে চাইলে নিলেন না। এতে পস্তাতে হবে।’ 

এ সব কথা শুনে গৃহবধূর স্বামী প্রতিবাদ করলে ওই কথিত এসআই হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ঈদের আগেই আপনার স্ত্রীকে তুলে নেওয়া হবে।

জেলে ঈদ করতে হবে। তৈরি থাকেন।’ এসব কতাবার্তার রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে।

জানা যায়, হুমকির শিকার গৃহবধূ গোল্লাজয়পুর গ্রামের কাজিম উদ্দিনের ছেলে সাদেকের বিরুদ্ধে ৫১ লাখ টাকার চেক ডিজওনারের মামলা করেছেন। ওই মামলায় সাদেক বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে উত্তেজিত হয়ে যান এসআই পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি। এক পর্যায়ে তার সাথে ঈশ্বরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে দেখা করতে বলেন। কিছুক্ষণ পর ফের মোবাইলে কল দিয়ে গালাগাল শুরু করেন। বারবার পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে ডিএসবির এসআই পরিচয় দেন। এক পর্যায়ে এ প্রতিনিধিকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি উবায়দুর রহমানকে ওই এসআইয়ের ফোন নম্বরটি দিলে তিনি বেশ কয়েকবার ফোন করলে ফোনটি ধরেননি বলে জানান। 

ময়মনসিংহ ডিএসবির ডিআই-১ মো. জসিম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, আশিকুর রহমান নামে কেউ এখানে নেই। তাছাড়া এ সংস্থার কেউ কোনো ঘটনা তদন্ত করে না। ভুক্তভোগি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়রি করে আমাদের কাছে দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

‘আমার পরিবারের একমাত্র সম্বল ছিল সজীব’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘আমার পরিবারের একমাত্র সম্বল ছিল সজীব’
সংগৃহীত ছবি

নরসিংদীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ ডা. সজীব সরকারের পরিবারের সদস্যদের মনে ঈদের আনন্দ নেই। তার শোকে স্মৃতিতে ডুবে আছেন পরিবারের সদস্যরা। সজীববিহীন ঈদের আনন্দ যেন শূন্য হয়ে গেছে তাদের জীবনে। এমন শূন্যতার দৃশ্য নরসিংদীর তরোয়া এলাকায় ডা. সজীব সরকারের ভাড়া বাড়িতে।

আরো পড়ুন
ঈদের মধ্যেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত, নিহত ৮০ ফিলিস্তিনি

ঈদের মধ্যেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত, নিহত ৮০ ফিলিস্তিনি

 

নরসিংদী শহরের তরোয়া এলাকার বাসিন্দা মো. হালিম সরকারের ছেলে ডা. সজীব সরকার। ডা. সজীব সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কমর্রত ছিলেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন সজীব। গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ মধ্যে ছোট ভাইকে আনতে গিয়ে ঢাকার উত্তরার আজমপুরে গুলিতে নিহত হন তিনি।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে গেছে পরিবার। ঈদের দিনেও তাদের পরিবারে নেই কোনো আনন্দ। সজীবের মা শয্যাশায়ী। অক্সিজেন ছাড়া একমুহূর্তও চলতে পারেন না।
সবসময় নাকে লাগানো অক্সিজেনের মাধ্যমে শ্বাস নিতে হয়। বিছানায় শুয়ে শুয়েই ছেলের জন্য বিলাপ করতে থাকেন তিনি। মোবাইলের স্কিনে ছেলের ছবির দিকে একপলকে চেয়ে থাকেন। আর আল্লাহর কাছে ছেলের জন্য দোয়া করতে থাকেন।

শহীদ ডা. সজীব সরকারের বোন সুমাইয়া সরকার বলেন, ভাইয়া পরিবারের প্রাণ ছিলেন।

তিনি পরিবারটাকে আগলে রাখতেন। প্রতি রমজানে আমরা পরিবারের সবাই একসঙ্গে ইফতার করতাম। তিনি পিঠা, পায়েস খেতে পছন্দ করতেন। প্রতি ঈদেই তিনি নামাজ পড়ে এসে সেমাই, পিঠা খেতেন। নামাজে যাওয়ার আগে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে খাবার তৈরি করতে বলতেন। আজ ভাই নেই, আমাকে কেউ ঘুম থেকে ডাকেনি। বাড়িতে কোনো ঈদের আয়োজন নেই। পুরো বাড়িতে এখন শূন্যতা ও নীরবতা বিরাজ করছে।

আরো পড়ুন
‘মোগো বাড়ি কোনো ঈদ হয় না’

‘মোগো বাড়ি কোনো ঈদ হয় না’

 

সজীব সরকারের মা ঝর্ণা বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, সজীব প্রতি ঈদে বাড়ির সবার জন্য কেনাকাটা করত। সবচেয়ে বেশি সে আমার জন্য কাপড় কিনে আনত। আমার পরিবারের সে একমাত্র সম্বল ছিল। তাকে কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়ে ডাক্তার বানিয়েছি। সেও আমার সেবা করত। আমার ছেলে এখন আমার কাছে নাই। আমি কান্নাকাটি করি না, আল্লাহর কাছে দোয়া করি ছেলেকে যেন ভালো রাখেন।

সজীবের এই আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ও স্মরণ রাখার জন্য হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবার কোনো প্রতিষ্ঠানের নামকরণ ডা. সজীব সরকারের নামে করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেন তিনি।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

‘মোগো বাড়ি কোনো ঈদ হয় না’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘মোগো বাড়ি কোনো ঈদ হয় না’
সংগৃহীত ছবি

‘সিডরে সাগরে মাছ ধরার সময় নিখোঁজ হয় স্বামী। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে এখনো আছি। ছেলে রিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। অনেক কষ্ট করে দিন যাপন করছি।

’ 

ঈদের আয়োজনের কথা জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মোগো বাড়ি কোনো ঈদ হয় না। পাশের বাড়ি সেমাই নাস্তা দেয় তা দিয়া ঈদ হয়।’

কথাগুলো বলছিলেন বরগুনার পাথরঘাটার সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা গ্রামের লাভলী আক্তার। গতকাল ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।

সবাই ঈদের আনন্দে মেতে উঠলেও লাভলী আক্তারের মনে ঈদের আনন্দ নেই। শুধু লাভলী নয়, তার মতো এমন হাজারো লাভলী রয়েছে বাদুরতলার জেলে পরিবারগুলোতে। যারা একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যদের হারিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। 

আরো পড়ুন
মায়ানমারে স্কুলের ধ্বংসস্তূপে সন্তানদের নাম ধরে ডাকছেন মা-বাবারা

মায়ানমারে স্কুলের ধ্বংসস্তূপে সন্তানদের নাম ধরে ডাকছেন মা-বাবারা

 

জানা গেছে, পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের রুহিতা, পদ্মা, চরলাঠিমারা, জিনতলা, টেংরা, চরদুয়ানী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরদুয়ানী, তাফালবাড়িয়া, জ্ঞানপাড়া, গাববাড়িয়াসহ একাধিক গ্রামের অসংখ্য জেলে পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ।

একে তো কর্মক্ষম ব্যক্তি বছরের পর বছর ধরে সাগরে গিয়ে নিখোঁজ অপরদিকে অভাবের সংসারের টানাপোড়েন এমন অবস্থায় ঈদ তাদের জন্য আদার ব্যাপারির জাহাজের খোঁজ নেওয়ার মতো অবস্থা।  

২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বরে সাগরে মাছ শিকার করতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কবলে পড়ে নিখোঁজ হন ২৫ জেলে। নিখোঁজ জেলে পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদ এখনো থামছে না। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তাদের বাবা-ভাই আদৌ বেঁচে আছেন কি-না, জানেন না স্বজনেরা।

তবু প্রিয়জনের আশায় বুক বেঁধে নীরব অপেক্ষায় দিন কাটছে এসব জেলের পরিবারের সদস্যদের।

আরো পড়ুন
রামুতে গরু চোরাচালান নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ১

রামুতে গরু চোরাচালান নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ১

 

নিখোঁজ জেলেরা হলেন - আবু কালাম (৬০), মজিবর চাপরাশি (৪৫), ইউসুফ আলী (৩৫), মো. জাফর (৩৫), আব্দুস সত্তার (৬৫), নাদিম (২০), মো. বেল্লাল (২৫), মো. ইয়াসিন (২৫), আউয়াল বিশ্বাস (৪৮), সফিকুল ইসলাম (৪০), মো. ফারুক (৩৫), আব্দুল খালেক (৫০), মো. নান্টু মিয়া (৩৫), মাহতাব (৪৫), সিদ্দিক মৃধা (৪৩), কালু মিয়া (৪০), মো. মনির হোসেন (৪৫), সহিদুল ইসলাম (৪০), মো. সুবাহান খাঁ (৭১), মো. ইউনুস সরদার (৭৩), মো. খলিল (৬১), আব্দুর রব (৬০), মো. আল আমিন (৩৫), মো. লিটন (৪১) ও মো. কালাম (৩৬)।  

রুহিতা গ্রামের কালু মাঝির মেয়ে রাইসা মনি বলেন, ‘প্রতিমুহূর্তে বাবার জন্য মন কাঁদে। মাঝেমধ্যে নিজের অজান্তে বাবাকে ডাক দিই। বাড়ির দরজায় দৌড়ে আসি, এই বুঝি বাবা আসছেন। এতোদিন কীভাবে কেটেছে, আমাদের সঙ্গে না থাকলে কেউ বুঝবেন না। প্রায় দিনই না খেয়ে থাকি। সংসার কীভাবে চলে কেউ খোঁজ নেয় না। মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় মায়ের পাশে থাকতে হয়। শ্বশুর বাড়িতে থাকি না।’

প্রতিবেশী নিখোঁজ ইউসুফের ছোট ভাই ইয়াকুব আলী বলেন, ‘ভাই দুই সন্তান রেখে সাগরে যান। আর ফিরে এলেন না। সন্তানদের মুখের দিকে তাকালে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। সারা দিন বাবা বাবা বলে কান্না করে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, আজও ভাইকে পাইনি। জীবিত আছেন না মারা গেছেন, তা-ও জানি না।’ 

আরো পড়ুন
তৃতীয় মেয়াদেও কি প্রেসিডেন্ট হতে চান ট্রাম্প, সংবিধানে কী আছে

তৃতীয় মেয়াদেও কি প্রেসিডেন্ট হতে চান ট্রাম্প, সংবিধানে কী আছে

 

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ‘উপকূলের জীবন-জীবিকা, জেলেদের নিয়ে এখন ভাবার সময় এসেছে। প্রতিনিয়ত পরিবার হারাচ্ছে উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে। নিখোঁজ পরিবারকে বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে, যা চলমান রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পাথরঘাটায় ১৯৯৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত নিখোঁজ জেলেদের তালিকাসংবলিত স্মৃতিফলক করা হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে ১৮৮ জেলে পরিবারের মাঝে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

‘গরিব গো আবার কিয়ের ঈদ’

এম সোহেল, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
এম সোহেল, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
শেয়ার
‘গরিব গো আবার কিয়ের ঈদ’

নদীর কিনারে সারি সারি নৌকা, এরই একটির গলুইতে বসে আছেন ঝুমুর বেগম। ছোট্ট শিশু মুন্নি নায়ের নৌকার বৈঠায় হাত রেখে আনমনা তাকিয়ে রয়েছে। চোখের সামনে শান্ত নদী। কিন্তু বুকের ভেতর তোলপাড় করে কষ্ট।

ঝলমলে আকাশে খাঁ খাঁ রৌদ্দুর। সব জায়গায় ঈদের আমেজ। কিন্তু তাদের ভাসমান এই জীবনে সেই আমেজের ছিটেফোঁটাও নেই।

‘গাঙে মাছ নাই, হাতে টাহা (টাকা) নাই।

গরিব গো আবার কিয়ের (কিসের) ঈদ’—এমন কথাই আক্ষেপের সুরে বেরিয়ে এলো ঝুমুর বেগমের মুখ থেকে। তাঁর স্বামী শহীদ হাওলাদার চুপচাপ নৌকার ছইয়ে শুয়ে আছেন। নদীতে মাছ ধরে সংসার চলত, এখন নদী যেন অভিমান করে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। নদীতে তেমন মাছ নেই, যাও পাওয়া যায়, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলাই দায়।

আরো পড়ুন
রামুতে গরু চোরাচালান নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ১

রামুতে গরু চোরাচালান নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ১

 

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নঘেঁষা বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতীরে মান্তা পল্লীতে বাস করেন ঝুমুর-শহীদ দম্পতি। ঝুমুর বেগমের পাশের নৌকাটি সোহেল ভূঁইয়ার। তাঁর নৌকায় তাকাতেই আরেক দৃশ্য। ছোট্ট মেয়ে জমেলা নৌকার সামনেই বসা। তীরের শিশুদের দিকে তাকিয়ে আছে।

আরেক বোন মিমিলা নৌকার পেছনের দিকে বসা। নৌকার কাছে যেতেই সোহেল বললেন, ‘নদীতে মাছ নাই। অনেক কষ্টে ধারদেনা করে বাচ্চার পোশাক কিনছি। নিজেরা অহনও (এখনো) লই নাই। বাজারে গেছিলাম দুইজনার কাপড় কিনতে, দাম কইল দুই হাজার টাকার বেশি। এত টাকা কই পাব?’ হতাশ কণ্ঠে বলেন তিনি।

এই হতাশার গল্প শুধু এই দুই পরিবারেরই নয়। ঈদ সামনে রেখে মান্তা পল্লীর বেশির ভাগ পরিবারের উত্সবের গল্পে এমন করুণ সুর বাজছে। মান্তা সম্প্রদায়ের লোকজনের ভাষ্যমতে—গাঙে (নদীতে) তেমন মাছ নেই, ঈদের আনন্দ নেই। ঈদ মানেই তাদের কাছে শুধুই বিলাসিতা। নদীই মান্তা সম্প্রদায়ের জীবন। কিন্তু এবার ঈদের আগে সেই নদীর বুকে নৌকাগুলোতে কেবল হতাশা আর দারিদ্র্যের ছাপ।

আরো পড়ুন
ভারতে পটকা বানানোর সময় বিস্ফোরণ, চার শিশুসহ নিহত ৭

ভারতে পটকা বানানোর সময় বিস্ফোরণ, চার শিশুসহ নিহত ৭

 

ঝুমুর বেগমের মতো মায়েরা সন্তানদের নতুন জামা দিতে পারেননি, পুরনো কাপড় ধুয়ে ঈদের দিন কাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সোহেল মাঝির মতো বাবারা ঈদের বাজারে গিয়ে সন্তানের জন্য কিছু কিনলেও নিজেদের জন্য কিনতে পারেননি। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ফিরে এসেছেন শূন্য হাতে। শহীদ হাওলাদারের মতো জেলেরা কাজ হারিয়ে নৌকার ছইয়ে শুয়ে থাকেন। দিন পার করেন দুশ্চিন্তায়। গ্রামে ঈদের বাজার জমজমাট। কিন্তু মান্তা পল্লীতে নেই কোনো খুশির ঝলকানি।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘সরকার ও প্রশাসন তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। মান্তা পল্লীর জেলেদের জন্য বিশেষ সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করব।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

রামুতে গরু চোরাচালান নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ১

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও রামু প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও রামু প্রতিনিধি
শেয়ার
রামুতে গরু চোরাচালান নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ১
প্রতীকী ছবি

মায়ানমারের গরু চোরাচালানের বিরোধকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের রামুর কাউয়ারখোপে গোলাগুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

নিহত মো. নবী হোসেন (৪০) কাউয়ারখোপের পশ্চিম গনিয়াকাটা এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে।

সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন বিকাল ৫টার দিকে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড উখিয়ারঘোনা রাবার বাগান চৌধুরী খামার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, সীমান্ত ফাঁকি দিয়ে মায়ানমার থেকে চোরাচালানে আনা গরুর চালান টানার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলিতে তিনি ঘটনাস্থলে নিহত হন।

এদিকে পুলিশ বলছে, খুনের ঘটনাটি তদন্তে উঠে আসবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, নিহত মো. নবীর ঘনিষ্ঠজন মো. হানিফ, মো. হাছন, মো. হোছন ও সানী গরু পাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। 

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে কাজ করছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম সীমান্ত দিয়ে মায়ানমার থেকে পাচার করে আনা গরুর অবৈধ কারবার চলছে গত কয়েক বছর ধরে।

রামুর সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলের পৃষ্ঠপোষকতায় শাহীন ডাকাত গ্রুপের বিশাল বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা সীমান্ত থেকে গরু পাচারে জড়িত রয়েছে।

মায়ানমারের চোরাই গরু রামু উপজেলার গর্জনিয়া বাজারে বিক্রির জন্য তোলা হয়। এরপর প্রতি গরু পিছু ৮/১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি রশিদ নিয়ে মায়ানমারের গরুকে করা হয় দেশীয় গরু। 

এ কারণে গর্জনিয়া বাজারটির নীলাম ডাক এবার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাজারটি অন্যান্য বছর ২/৩ কোটি টাকায় নিলাম হলেও এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি টাকায়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ