<p>বর্তমানে বাজারে নানা অজুহাতে আলু ও পেঁয়াজসহ প্রায় সবধরনের নিত্যপণ্য উচ্চমুল্যে বিক্রি হচ্ছে। এতে চাপে থাকা ভোক্তারা আরো চাপে পড়েছেন। বাজারে আলু, পেয়াঁজ ও ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। একইসঙ্গে বাজারে নিত্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা ও বাজার মনিটরিং বৃদ্ধি করাসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।</p> <p>সোমবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ক্যাবের এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. শওকত আলী খান, বাহাদুর সাজেদা আক্তার, ক্যাবের সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।</p> <p>সিন্ডিকেট, আমদানি জটিলতা ও তদারকির অভাবে এসব নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে চলছে বলে মনে করে ক্যাব।  </p> <p>মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আলু, পেঁয়াজ এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস অবস্থা। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু মান ভেদে এখনো ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১৩০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫ থেকে ১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।</p> <p>বাজার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে তারা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে এমন চড়া দামে আলু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। মূলত সিন্ডিকেটের কারণেই এবার আলুর দামের এমন অবস্থা। বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে মজুদ থাকায় ও আমদানি জটিলতার কারণে এবার আলুর দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। অবশ্য দাম নিয়ন্ত্রণে বা আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক করতে যথাযথ তদারকি নেই। হিমাগার পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর তদারকি না থাকায় আলুর দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। একইসঙ্গে আলুর মতো নিয়ন্ত্রণে আসেনি পেঁয়াজের দাম। দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি থাকা পেঁয়াজের দামও এখনও কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা।</p> <p>বক্তারা বলেন, কৃষক পর্যায় থেকে নামমাত্র মূল্যে আলু কিনে মজুদ করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন থেকে এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও বেশি সজাগ ও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।</p> <p>এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে তারা তাদের ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো— অসাধু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।<br /> নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।<br /> বাজার অভিযান বা মনিটরিং বৃদ্ধি করতে হবে।<br /> টিসিবির ট্রাক সেল বাড়াতে হবে।<br /> ভোজ্য তেল খোলা বাজারে বিক্রেতাদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে।<br /> ভোক্তার স্বার্থ দেখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা বিভাগ বা কনজুমারস মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।<br /> সরকার ১ কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপণ্য দিচ্ছে— এর সংখ্যা দেড় কোটি করতে হবে। <br /> আইনে নিষিদ্ধ থাকা বাজারে খোলা ভোজ্য তেল (ড্রামে) বিক্রেতাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।</p>