<p>গুণী অভিনেতা আফজাল হোসেন। অভিনয়ে যেমন সুনাম কুড়িয়েছেন, তেমনি দেশের নানা ইস্যুতে সরব থাকেন এই অভিনেতা। যেমন আজকের বিজয় দিবস নিয়ে নিজের একটি ছবিসহ পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। তিনি লেখেন, ‘বিজয় দিবস নিয়ে আমাদের বুকভরা গৌরব আর প্রাণভরা অহংকার। তিপ্পান্নটি বিজয় দিবস পার করা এই জাতি, কতটুকু দায়িত্বশীল, শক্তপোক্ত এবং প্রেমময় হতে পেরেছে? এই প্রশ্নে বহু মনে বিরক্তি জেগে উঠতে পারে। সংবেদনশীল বলেই কি বিরক্তি! না। কিছু কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা, প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া অনেকেরই পছন্দ নয়। কার ঘাড়ে কয়টা মাথা- আমাদের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ করে! তা করা যাবে না জানা সত্ত্বেও যদি কোনো দুর্মূখ বলেই ফেলে আমরা মুখে যতটা, প্রাণে ততটা দেশপ্রেমিক নই। শোনামাত্র অনেক মহৎ প্রাণ  ছ্যাঁৎ করে উঠবে। আমাদের ছ্যাঁৎ করে ওঠার উচ্চতা ছোট খাটো নয়- তা আকাশ সমান। কোনো কিছুতে কম বা মাঝারি হওয়া পছন্দ নয়, সব কিছুতে সর্বোচ্চ, বিশেষ হওয়া চাইই আমাদের- তা না হলে ইজ্জতহানি ঘটে যায়। ঠুনকো ইজ্জতের মালিক হলে এই এক ভয়- সর্বক্ষণ গেলো গেলো আশঙ্কায় কাটাতে হয়।’</p> <p>তিনি আরো লেখেন, ‘একশো রকম আশঙ্কায় ভুগে ভুগে আমরা স্বস্তি ও শান্তিহারা। আমরা অতিমাত্রায় ধৈর্য্যহীন, যুক্তির তোয়াক্কা করি না কেউ এবং প্রায় প্রত্যেকেই শতভাগ স্বার্থপন্থী। যে যা যেমন করে ভাবব, সেটাই ঠিক। বিনা বাক্যে অন্যদের তা মেনে নিতে হবে। যে যারা মানতে পারবে না- খারাপ তারা, খুবই খারাপ।  আমাদের অসুখ হচ্ছে, মনভর্তি সুখের আকাঙ্ক্ষা কিন্তু সুখের পথে হাঁটতে ইচ্ছা করে না। সে পথে হাঁটার চেষ্টা বা তাগিদও জাগে না মনে। নিজের যা আছে, তা নিয়ে আনন্দ হয় না, যা নেই তা নিয়ে দুঃখে মরে যাই। আমাদের আশা, দাবি, লোভ, ক্রোধ, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা সবই বেশি বেশি। আমরা ভুল স্বীকারে অক্ষম। অনেক বেশি প্রতিহিংসাপরায়ণ তাই ক্ষমা করে দেওয়ার মনোবৃত্তি এবং বিনীত থাকা দুর্বলতা বলে বিবেচনা করে থাকি।</p> <p>তিনি পোস্টটি শেষ করেছেন এভাবে, ‘আমরা কোথায় সবল? নিজ নিজ রাজনৈতিক বিশ্বাসে। বিশ্বাস করি, ধর্ম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা যেতে পারে কিন্তু নিজের তালগাছের গায়ে টোকা দেওয়া যাবে না। দেশের কথা, নিজের কথা পরে, সবার আগে দলের সম্মান। অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই চেষ্টা অব্যাহত। এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের সচেতনতা, দায়িত্বশীলতা ও দেশপ্রেমের নমুনা কেমন? কখনোই কেউ ভাবতে পারিনি, দেশের জন্য একজন ভালো, জ্ঞানী, দেশপ্রেমিক মানুষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে।’</p>