ভারি বৃষ্টিতে মক্কা-মদিনায় বন্যা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারি বৃষ্টিতে মক্কা-মদিনায় বন্যা
ছবি : এএফপি

সৌদি আরবের মক্কা-মদিনা অঞ্চল ও জেদ্দা শহরে ভারি বৃষ্টিপাতে বন্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল সোমবার এ অঞ্চলগুলোতে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টিপাত হয়। সৌদির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।  

মক্কার দক্ষিণ-পূর্বে আল-আওয়ালি এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাতের পর বন্যা দেখা দিয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, রাস্তাঘাটে গাড়িগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং লোকজন বন্যার পানির মধ্য দিয়ে হাঁটছেন।

দেশটির ন্যাশনাল মেটিওরোলজিক্যাল সেন্টার (এনএমসি) সারা সপ্তাহে হালকা থেকে মাঝারি ভারি বৃষ্টি, বজ্রপাত এবং ধূলিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে।

সৌদি আরবের পরিবেশ, জল ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বদর প্রদেশের আল-শাফিয়াহতে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে জেদ্দার আল-বাসাতিনে।

সেখানে ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মদিনায় মসজিদে নববীতে ৩৬ দশমিক ১ মিলিমিটার ও কুবা মসজিদে ২৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।   

এদিকে আকস্মিক বন্যার কারণে জেদ্দা, মদিনায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত, ধূলিঝড়ের পূর্বাভাসসহ এ ধরনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আগামীকাল ৮ জানুয়ারি বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

 

গালফ মিডিয়া, আরব নিউজসহ বিভিন্ন সৌদি মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে, মদিনায় তীব্র বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যার কারণে রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে। 

মদিনা ছাড়াও রিয়াদ, মক্কা, আল-বাহা এবং তাবুকসহ অন্যান্য অঞ্চলও বিরূপ আবহাওয়ার প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এনএমসি উত্তর সীমান্ত, আল-জউফ, হাইল, কাসিম এবং পূর্বাঞ্চলজুড়ে একই রকম পরিস্থিতির পূর্বাভাস দিয়েছে।

আরো পড়ুন
ট্রুডোর পদত্যাগ, কানাডাকে ফের অঙ্গরাজ্য বানাতে চাইলেন ট্রাম্প

ট্রুডোর পদত্যাগ, কানাডাকে ফের অঙ্গরাজ্য বানাতে চাইলেন ট্রাম্প

মক্কার ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেন্টার জনসাধারণকে, বিশেষ করে গাড়িচালক এবং সমুদ্রসৈকতগামীদের সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো এড়াতে অনুরোধ করেছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভারতে পটকা বানানোর সময় বিস্ফোরণ, চার শিশুসহ নিহত ৭

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারতে পটকা বানানোর সময় বিস্ফোরণ, চার শিশুসহ নিহত ৭
সংগৃহীত ছবি

ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা এলাকায় পটকা বানানোর সময় বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চার শিশু রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন একজন।

সোমবার পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানার রায়পুরের তৃতীয় ঘেরি এলাকার বণিক পরিবারে এই ঘটনা ঘটে।

বংশ পরম্পরায় দীর্ঘ দিন ধরেই পটকা বানাত ওই বণিক পরিবার। পটকা তৈরির লাইসেন্সও তাদের। 

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তাদের পরিবারে মোট ১১ জন সদস্য। চন্দ্রকান্ত বণিক এবং তুষার বণিক দুই ভাই।

সোমবার এই দুর্ঘটনায় তাদের বাবা অরবিন্দ বণিক (৬৫), দাদী প্রভাবতী বণিক (৮০) , চন্দ্রকান্তের স্ত্রী সান্ত্বনা বণিক (২৮), দুই সন্তান অর্ণব বণিক (৯) ও অস্মিতা বণিক (৮ মাস) এবং তুষারের দুই সন্তান আনুষ্কা বণিক (৬ মাস) এবং অঙ্কিত বণিক (৬ মাস) মারা গেছেন। তুষারের স্ত্রী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তিন জন বাড়ির বাইরে ছিলেন। 

আরো পড়ুন
গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সুমাইয়ার পরিবারের খোঁজ নিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ

গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সুমাইয়ার পরিবারের খোঁজ নিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ

 

পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আচমকা বিকট শব্দ শোনা যায়।

তার কিছুক্ষণ পর স্থানীয়েরা দেখতে পান আগুনের ধোয়া। পরে আগুন নেভানোর সময় আবার কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। বাড়িতেই পটকা মজুত ছিল। সেখান থেকে এই অগ্নিকাণ্ড। গ্যাস সিলিন্ডার ছিল সেটিও বিস্ফোরণ হয়।
 
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

স্কুলের ধ্বংসস্তূপে সন্তানদের নাম ধরে ডাকছেন মা-বাবারা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্কুলের ধ্বংসস্তূপে সন্তানদের নাম ধরে ডাকছেন মা-বাবারা
সংগৃহীত ছবি

মায়ানমারের ভূমিকম্পে বিধস্ত একটি প্রাক প্রাথমিক স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে সন্তানদের নাম ধরে ডাকছেন অসহায় মা বাবারা। মান্দালয় থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে কিয়ুকসে শহরে অবস্থিত এই স্কুলটি ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাচ্চাদের গোলাপী-নীল-কমলা রঙের স্কুলব্যাগগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে বিধ্বস্ত ভবনটির নিচে। চূর্ণ-বিচূর্ণ ইটের সঙ্গে মিশে গেছে ভাঙা চেয়ার, টেবিল।

পাশেই স্পাইডারম্যান খেলনা আর অক্ষর সাজানোর বর্ণমালাগুলো। প্রায় ১৫টি শিশুর স্কুলব্যাগ ধ্বংসস্তূপের নিচে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। 

এরই মাঝে ছোট সন্তানদের খুঁজছেন, নাম ধরে ডাকছেন অসহায় বাবা-মায়েরা। কাঁদতে কাঁদতে রাত পর্যন্ত সন্তানদের নাম ধরে ডাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, পুরো শহরের লোকজন উদ্ধার কাজে সাহায্য করতে এসেছিল এই স্কুলে। শুক্রবার বেশ কয়েকটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় সেখান থেকে। তারা বলছেন, ওই দিন স্কুলে দুই থেকে সাত বছর বয়সী প্রায় ৭০ জন শিশু আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করছিল। কিন্তু এখন ইট, সিমেন্ট ও লোহার রডের স্তূপ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে ১২ জন শিশু ও একজন শিক্ষক মারা গেছেন। তবে স্থানীয়দের বিশ্বাস- সংখ্যাটি কমপক্ষে ৪০ জন হবে।   

৭১ বছর বয়সী কিউয়ে নাইইন স্কুলটির ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন। পাঁচ বছর বয়সী নাতনি থেট হটার সানের শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিচ্ছে তার পরিবার। 

আরো পড়ুন
যশোরে ঈদের রাতে পটকা ফোটানো নিয়ে সংঘর্ষে কিশোর খুন

যশোরে ঈদের রাতে পটকা ফোটানো নিয়ে সংঘর্ষে কিশোর খুন

 

তিনি জানান, ভয়াবহ ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সময় সানের মা দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন।

তিনি দৌড়ে স্কুলে যান, কিন্তু ভবনটি সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর ছোট্ট শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘটনার ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত, আমরা আমাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ অক্ষত অবস্থায় পেয়েছি, মানে এক টুকরো অবস্থায়।’
 

মন্তব্য

মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়াল, এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছাড়াল, এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা
ভয়াবহ ভূমিকম্পের তিন দিন পর ৩১ মার্চ মায়ানমারের মান্দালয়ে লোকজন অস্থায়ী তাঁবুতে দিন কাটাচ্ছে। ছবি : এএফপি

মায়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা সোমবার দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

মায়ানমারের শাসক সামরিক জান্তা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবারের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ‘জীবনহানি ও ক্ষতির প্রতি সমবেদনা জানাতে’ ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিট ২ সেকেন্ডে ৭.৭ মাত্রার এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে, যা ভূমিকম্পটি আঘাত হানার সুনির্দিষ্ট সময়।

সে সময় জনগণকে থেমে গিয়ে ভূমিকম্পের শিকারদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সম্প্রচার বন্ধ রেখে শোক চিহ্ন প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মন্দির ও প্যাগোডায় প্রার্থনার আয়োজনও করা হবে।

জান্তা সোমবার আরো জানায়, এখন পর্যন্ত নিশ্চিত মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৫৬ জন।

আর আহতের সংখ্যা তিন হাজার ৯০০ ছাড়িয়েছে এবং এখনো ২৭০ জন নিখোঁজ। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃতদের মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিক ও দুজন ফরাসি নাগরিক রয়েছেন বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও প্যারিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

উদ্ধার অভিযান ধীর হয়ে আসছে
এদিকে এই ঘোষণার মধ্যেই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম মান্দালয়ে উদ্ধার অভিযানের গতি কমে আসছে।

১৭ লাখেরও বেশি জনসংখ্যার এ শহরটিতে এখনো হাজারো মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেনি।

মান্দালয়ের সাজ্জা নর্থ মসজিদের প্রধান প্রশাসক অং মিন্ট হুসেইন বলেন, ‘পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে এটি ব্যাখ্যা করা কঠিন।’

টানা চার রাত ধরে বহু মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় রাত কাটাচ্ছে। কেউ কেউ তাঁবুর ব্যবস্থা করতে পারলেও অনেকেই রাস্তার ওপর কম্বলে শুয়ে আছে, ভবনধসের আশঙ্কায় দালান থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে। 

ভূমিকম্পের প্রভাব এতটাই ভয়াবহ ছিল যে শত শত কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেও ৩০ তলাবিশিষ্ট একটি নির্মীয়মাণ ভবন ধসে পড়ে।

সেখানে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।  

খোলা আকাশের নিচে হাসপাতাল
অন্যদিকে মান্দালয়ের এক হাজার শয্যার সাধারণ হাসপাতাল খালি করে ফেলা হয়েছে এবং শত শত রোগীকে বাইরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা অনেক রোগীকে কেবল একটি পাতলা ত্রিপল দিয়ে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বজনরা তাদের পাশে থেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন, কেউ হাত ধরে আছেন, আবার কেউ বাঁশের পাখা দিয়ে বাতাস করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমরা যা পারছি, তা-ই করছি। আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

অস্বাভাবিক গরমে উদ্ধারকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন এবং মৃতদেহ দ্রুত পচে যাওয়ায় শনাক্তকরণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে সোমবার থেকে মান্দালয়ের রাস্তায় কিছু যানবাহন চলতে শুরু করেছে, রেস্তোরাঁ ও হকাররা ফের কাজ শুরু করেছেন। শহরের একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মসজিদের সামনে শত শত মুসলিম ঈদুল ফিতরের নামাজও আদায় করেন।  

মানবিক সংকট আরো ঘনীভূত
মায়ানমার এমনিতেই বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ছিল। দেশটি ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর চার বছর ধরে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভূমিকম্পটিকে সর্বোচ্চ স্তরের জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং জীবন বাঁচানোর জন্য আট মিলিয়ন ডলারের জরুরি তহবিল চেয়েছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সংস্থাও ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছে।

অত্যন্ত বিরল এক পদক্ষেপে সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন। অতীতে বিচ্ছিন্ন মায়ানমারের শাসকগোষ্ঠী বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও বিদেশি সহায়তা নিতে অপারগতা দেখিয়েছিল।

জান্তা মুখপাত্র জাও মিন টুন সোমবার চীন, রাশিয়া, ভারতসহ কয়েকটি মিত্র দেশের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আহতদের চিকিৎসা ও নিখোঁজদের সন্ধানে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’  

তবে ভূমিকম্পের পরও সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একটি সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন এএফপিকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরপরই তাদের ওপর বিমান হামলায় সাতজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সোমবারও আরো কিছু বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।  

মায়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বাহিনী ও বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী লড়াই করছে, যা ইতিমধ্যে ৩৫ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।

এদিকে ব্যাঙ্ককে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং অন্তত ৭৫ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনো জীবিতদের উদ্ধারের আশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি।

মন্তব্য

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

    জোরপূর্বক উচ্ছেদের আদেশ ঘোষণা শোকের ছায়ায় ঈদ উদযাপন
আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা
নতুন ইসরায়েলি উচ্ছেদ আদেশের পর রাফা থেকে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা ৩১ মার্চ গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে পৌঁছয়। ছবি : এএফপি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে তাদের নতুন হামলা জোরদারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সেখানে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের আদেশ ঘোষণা করেছে।

সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিখাই আদরেয়ি সোমবার সকালে এক্সে ঘোষণা করেন, সেনাবাহিনী রাফা ও তার আশপাশের এলাকায় ‘অত্যন্ত কঠোরভাবে যুদ্ধ করতে’ ফিরছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের তাৎক্ষণিকভাবে উপকূলীয় এলাকা আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেন। যদিও গাজার ওপর চলমান যুদ্ধে এই এলাকাও বারবার ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, তা সত্ত্বেও এটিকে একটি ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

উচ্ছেদ আদেশ জারির কিছুক্ষণ পরই আলজাজিরা আরবি জানায়, ওই এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুর ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছিল, জানুয়ারিতে ঘোষিত নাজুক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে গাজার ওপর নতুন করে হামলা শুরুর করলে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে শুরু হওয়া বোমাবর্ষণে ইতিমধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

ওই বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল গাজার ওপর যুদ্ধ শুরু করে।

শোকের ছায়ায় ঈদ উদযাপন
এদিকে পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি উপলক্ষে তিন দিনের ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে ফিলিস্তিনিরা, তবে গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকায় ঈদও বেদনায় ভরে উঠেছে। ঈদের প্রথম দিন রবিবার অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। সোমবার সকালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

ইসরায়েলি হামলায় আরো অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।

গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনী ‘কমপক্ষে সাতটি পরিবারের বাড়িতে’ হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরো জানান, গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় অঞ্চল নুসেইরাত ও নেতজারিম করিডরের খুব কাছাকাছি এলাকায়ও প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। দেইর আল-বালাহতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং সেখানে তিনজন কৃষক নিহত হয়েছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুনে এখন ফিলিস্তিনিরা ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, যেখানে একসময় শিশুদের ঈদের আনন্দে মেতে ওঠার কথা ছিল।

উইসাম নাসার নামের এক ফিলিস্তিনি শিশু আলজাজিরাকে বলে, ‘আমরা সৈকতের কাছেও যেতে ভয় পাচ্ছি, যদি ইসরায়েলি সেনারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

পাশাপাশি হুসেইন আলকাফারনা বলেন, ‘এই ঈদে আমাদের কোনো আনন্দ নেই। আমরা নতুন পোশাকও কিনতে পারছি না, তার ওপর সারাক্ষণ ভয় আর আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ