<p>ভারতে উত্তরপ্রদেশে শুরু হয়েছে ৪৪ দিনব্যাপী কুম্ভমেলা। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। সেই মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মহাকুম্ভ আয়োজিত হচ্ছে প্রয়াগরাজে। সেই উপলক্ষে ঢেলে সাজানো হয়েছে উত্তরপ্রদেশের সেই শহরকে। এ বছরের মহাকুম্ভে ৪৫ কোটিরও বেশি ভক্তের সমাগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।</p> <p>অন্যদের মতো মহাকুম্ভে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন অনেক সাধু-সন্ন্যাসী। ‘অ্যাম্বাসাডর বাবা’, ‘চাওয়ালা বাবা’ থেকে শুরু করে ‘পরিবেশ বাবা’— অনেক অদ্ভুত নামের সাধুও জড়ো হয়েছেন।</p> <p>১২ বছর অন্তর প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলা হয়। মেলা উপলক্ষে শনিবার থেকেই সেই সাধুরা ভিড় করতে শুরু করেছেন মহাকুম্ভ মেলায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) তরফে কুম্ভ চলাকালীন একাধিক আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জানুয়ারি সাধ্বী সম্মেলন, ২৫-২৬ জানুয়ারি সাধু সম্মেলন এবং ২৭ জানুয়ারি যুব সাধু সম্মেলন আয়োজিত হওয়ার কথা রয়েছে।</p> <p>‘অ্যাম্বাসেডর বাবা’, ‘চাওয়ালা বাবা’ থেকে শুরু করে ‘পরিবেশ বাবা’— অনেক অদ্ভুত নামের সাধুরাও জড়ো হয়েছেন। কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত অদ্ভুত নাম? একনজরে দেখে নেওয়া যাক। জেনে নেওয়া যাক তাদের নামের মাহাত্ম্য।</p> <p><strong>‘অ্যাম্বাসেডর বাবা’</strong><br /> তালিকার প্রথমেই রয়েছেন ‘অ্যাম্বাসেডর বাবা’। ৫০ বছরেরও বেশি বয়সী ওই সাধু মধ্যপ্রদেশের ইনদোরের বাসিন্দা। রবিবার মহাকুম্ভে এসেছেন তিনি। কিন্তু কেন এ রকম নাম তার? কারণ, সর্বদাই ১৯৭২ সালের একটি অ্যাম্বাসেডর গাড়িতে ভ্রমণ করেন তিনি। ‘ভিনটেজ’ সেই গাড়ি গত ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে তার সঙ্গী।</p> <p><strong>পরিবেশ বাবা</strong><br /> মহামণ্ডলেশ্বর অবধূত বাবা, যিনি ‘পরিবেশ বাবা’ নামেও পরিচিত। তিনি নিজেই জানিয়েছেন তার নামের কারণ। ‘পরিবেশ বাবা’র দাবি, সনাতন ধর্ম দুটি গাছ রোপণ করতে উৎসাহিত করে। একটি শেষকৃত্যের জন্য এবং একটি অক্সিজেনের জন্য। ‘পরিবেশ বাবা’র কথায়, আমি এ পর্যন্ত ৮২টি আচার পালন করেছি। প্রায় ৩০টি দেশজুড়ে থাকা আমার ভক্তরা আমাদের দেশে ১ কোটিরও বেশি গাছ লাগানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০১৬ সালে, বৈষ্ণোদেবী থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত পদযাত্রার সময়, আমরা ২৭টি রাজ্যে গাছ লাগিয়েছিলাম। তখন থেকেই ভক্তরা আমাকে ‘পরিবেশ বাবা’ বলে ডাকতে শুরু করে।</p> <p><strong>রুদ্রাক্ষ বাবা</strong><br /> নিরঞ্জনী পঞ্চায়েতি আখড়ার সাধু দিগম্বর অজয় গিরি ভক্তকুলের কাছে পরিচিত ‘রুদ্রাক্ষ বাবা’ নামে। তিনিও মহাকুম্ভের জন্য প্রয়াগরাজে পৌঁছেছেন। অজয় গিরির শরীরে মোট ১১ হাজার রুদ্রাক্ষ রয়েছে। আর সে কারণেই তার এই নাম।</p> <p><strong>রাবড়ি বাবা</strong><br /> তালিকায় রয়েছেন পঞ্চায়েতি আখাড়া মহানির্বাণীর সাধু ‘রাবড়ি বাবা’। তার আসল নাম শ্রীমহন্ত দেবগিরি। ইতিমধ্যেই মহাকুম্ভে সঙ্গমের পবিত্র ভূমিতে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছেন তিনি। ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে রাবড়ি খেতে দেন বলে তার নাম ‘রাবড়ি বাবা’। রাবড়ি বাবা বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ভক্তদের জন্য রাবড়ি পরিবেশন করছেন তিনি। তার ওই রাবড়ি বহু মানুষের মন জয় করে। আর সেই ভক্তরাই তার নাম দেন রাবড়ি বাবা।</p> <p><strong>চাওয়ালা বাবা</strong><br /> উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ের বাসিন্দা দীনেশ স্বরূপ ব্রহ্মচারী প্রথম জীবনে চা বিক্রি করতেন। পরে আধ্যাত্মিকতাকে বেছে নেন। নাম হয়ে যায় ‘চাওয়ালা বাবা’। ভক্তদের দাবি, ‘চাওয়ালা বাবা’ খাবার খান না। কথাও বলেন না। দিন গুজরান করেন সারা দিন ১০ কাপ চা খেয়ে। সরকারি চাকরি প্রার্থীদের বিনা মূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করার জন্যও ‘চাওয়ালা বাবা’র নাম রয়েছে।</p> <p><strong>ছোটু বাবা</strong><br /> উচ্চতা ৩ ফুট ৮ ইঞ্চি। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রে তিনিও। নারী থেকে পুরুষ, তরুণ থেকে প্রবীণ— সবাই এসে তার পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন। মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ দিচ্ছেন ‘ছোটু বাবা’ ওরফে গঙ্গাপুরী মহারাজ। তার দাবি, গত ৩২ বছর ধরে স্নান করেননি তিনি। মহাকুম্ভেও গঙ্গায় স্নানে নামবেন না। তবে মেলার শেষ দিন পর্যন্ত থেকে যাবেন।</p>