<p>৭২-এর সংবিধান বাতিল করার ‘হীন প্রচেষ্টা’র বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৩৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁরা বলছেন, ৭২-এর সংবিধান বাতিল করার অর্থ মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের সঙ্গে বেইমানি করা।</p> <p>সোমবার (১৩ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশনের ৩৬ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।</p> <p>বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তে লেখা ৭২-এর সংবিধান বাতিল করার হীন প্রচেষ্টাকে আমরা খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ৭২-এর সংবিধান বাতিল করার অর্থ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বেইমানি করা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অর্ধশত বছরের অধিক সময়ের মধ্যে বিগত সরকারগুলো তাদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নিজেদের মতো করে ৭২-এর মূল সংবিধান বারবার কাটাছেঁড়া করে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার পরিপন্থী কাজ করেছে।</p> <p>তাঁরা আরো বলেন, সময়ের প্রয়োজনে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে দেশের সংবিধান সংশোধন কিংবা যুগোপযোগী করা রাষ্ট্রের চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ও মীমাংসিত বিষয়গুলো কোনো মতেই প্রশ্নবিদ্ধ ও পরিবর্তন করা যাবে না। ৭২-এর সংবিধান ছুড়ে ফেলা কিংবা কবর রচনা করা নিয়ে কোনো বক্তব্য না দেওয়ার আহ্বান জানাই। কোনো মতেই ৭২-এর সংবিধান বাতিল করা যাবে না, বরং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি ৭২-এর মূল সংবিধান হুবহু পুনঃপ্রবর্তন করা হোক।</p> <p>বিবৃতিতে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা আরো বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, ৫ আগস্ট ২০২৪-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মারধর ও লাঞ্ছিত করাসহ তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।</p> <p>বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন এ ডব্লিউ চৌধুরী বীর উত্তম ও বীর বিক্রম, ক্যাপ্টেন (অব.) শাহাব উদ্দিন (বীর উত্তম), মেজর (অব.) এ টি এম হামিদুল হোসেন (বীর বিক্রম), লে. কর্নেল (অব.) আব্দুর রউফ (বীর বিক্রম), অনারারি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হক বীর বিক্রম, আবুল কালাম আজাদ (বীর বিক্রম), মেজর জেনারেল (অব.) মো. মাসুদুর রহমান বীর প্রতীক, ক্যাপ্টেন কাজী আ. সাত্তার বীর প্রতীক, ডিআইজি (অব.) কাজী জয়নাল আবেদীন বীর প্রতীক, মো. মমিন উল্লাহ্ পাটোয়ারী বীর প্রতীক, আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীর প্রতীক ও মো. শাহাজাহান কবির বীর প্রতীক।</p> <p>স্বাক্ষরকারী বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত অন্য মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মিজানুর রহমান খান, মোজাম্মেল হক মাহবুব এলাহী রঞ্জু, নুর উদ্দিন, মহিউদ্দিন মানিক, বাহার উদ্দিন রেজা, অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, দেলোয়ার হোসেন, রতন আলী শরীফ, সৈয়দ রেজওয়ান আলী, রফিকুল ইসলাম, গোলাম আজাদ, মো. ইদ্রিস আলী, আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান, মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান, সরদার মহসীন আলী, আ. হাকিম, বজলুর মাহমুদ, নুরুল হক, নুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, ফজলুল হক, আবদুল্লাহ ও আব্দুল গফুর। </p>