<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পঞ্চদশ সংশোধনী আইন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।  গত মঙ্গলবার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর দুটি রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল আংশিকভাবে যথাযথ ঘোষণা করা হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন ও প্রতিস্থাপন আনা হয়েছিল। এর মধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তিসংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে রায়ে। রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো হিসেবে ধারা দুটি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার ১৪২ অনুচ্ছেদ থেকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গণভোটের</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বিধান বাদ দিয়েছিল। এই গণভোটের বিধান বাদ দেওয়াকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেছেন, এই রায় কর্তৃত্ববাদ ও ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার বিরুদ্ধে। এর মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথা গণতন্ত্রে ফেরার পথ প্রশস্ত হলো। রায়কে স্বাগত জানিয়ে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বলছে, হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হয়েছে, জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য সংসদ নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হলো। জনগণ এখন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ফিরে পাবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দলীয় স্বার্থে আইন ব্যবহৃত হয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশে এমন অভিযোগ নতুন নয়। দেশ নয়, দল যখন কোনো সরকারের সামনে মুখ্য হয়ে যায়, তখন দেশ ও মানুষের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়। সময়ের প্রয়োজনে আইনের সংশোধন প্রয়োজন হয়। আইনকে সময়োপযোগী ও আধুনিক করতে হয়। তবে এসব প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনের আগে বিশেষভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। যেকোনো পরিবর্তন যেন দেশ ও মানুষের কল্যাণে হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কোনো সরকার আইন পরিবর্তন করলে তা কখনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনে না। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইন পরিবর্তন বা সংশোধন করতে হবে, কিন্তু তা করতে গিয়ে যেন দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এই রায় ভবিষ্যতের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। এই রায়ে গণতন্ত্রের ভিত্তি আরো শক্ত হবে।</span></span></span></span></p>