<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রত্যেক মানুষ তার মাতৃভূমিকে ভালোবাসে। দেশপ্রেম হৃদয়ে ধারণ করে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‌</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> এই ভালোবাসা মানুষের জীবনের শিকড়, স্মৃতি এবং তার পরিচয়ের সঙ্গে জড়িত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর মাতৃভূমি মক্কাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনা ও উক্তি থেকে বিষয়টি সম্পর্কে সুস্পষ্ট </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‌</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ধারণা পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তাঁর দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মাতৃভূমি </span></span></span></strong></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মাতৃভূমি হলো মক্কা নগরী। পবিত্র কাবার কারণেই এ দেশ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা ইসলামের সূচনাস্থল এবং ইসলামী ঐতিহ্যের প্রাণকেন্দ্র। যুগে যুগে এর সম্মান, গৌরব ও মর্যাদা অটুট থাকবে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন বলেছেন, হিজরতের আর প্রয়োজন নেই, কিন্তু জিহাদ ও নিয়ত অব্যাহত থাকবে। তোমাদের যখন জিহাদের আহ্বান জানানো হয় তখন জিহাদে যোগদান করো। মক্কা বিজয়ের দিন তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তাআলা এই শহরকে সম্মানিত করেছেন, যেদিন তিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকে। অতএব, কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এই শহরের মর্যাদা ও সম্মান অক্ষুণ্ন রাখবেন...। (মুসলিম, হাদিস : ৩১৭২)</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা</span></span></span></strong></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর মাতৃভূমি মক্কা মুকাররমাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন এবং সেই শহরের পবিত্রতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করতেন। কাফিরদের আক্রমণের মুখে তিনি যখন মদিনায় হিজরত করছিলেন তখন মাতৃভূমির প্রতি বারবার ফিরে দেখছিলেন। তখন তাঁর হৃদয়ের গুপ্ত বেদনা কথার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কা মুকাররমা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, কত পবিত্র তুমি এ শহর এবং কত যে প্রিয় তুমি আমার কাছে! আমার কওম যদি আমাকে বের না করে দিত তবে তুমি ছাড়া আর কোথাও আমি বসবাস করতাম না। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৯২৬) </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আরো একটি বর্ণনায় কাবার সম্মান ও নবীজির মক্কা ছেড়ে চলে যাওয়ার দুঃখ-বেদনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আদী ইবনে হামরা জুহুরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে (মক্কার) হাজওয়ারায় দাঁড়ানো দেখেছি। তিনি তখন বলেন : আল্লাহর কসম! (হে মক্কা) তুমি হলে আল্লাহর সর্বোত্তম জমিন। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ভূমি। আমাকে যদি বের না করে দেওয়া হতো, তবে আমি বের হতাম না। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৯২৫) </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাতৃভূমির জন্য কবিতা পাঠ</span></span></span></strong></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মতো সাহাবিদের মাতৃভূমি মক্কার প্রতি গভীর দরদ ও ভালোবাসা ছিল। তাঁদের জীবনযাপন ও বিভিন্ন কথাবার্তায় তা প্রকাশ পেয়েছে। অসুস্থ সময়ের ভেতরেও তাঁরা মাতৃভূমি মক্কার শানে কবিতা পাঠ করেছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন আবু বকর ও বিলাল (রা.) ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আমি তাঁদের দেখতে গেলাম এবং বললাম, আব্বাজান কেমন আছেন? হে বিলাল, আপনি কেমন আছেন? আবু বকর (রা.) জ্বরাক্রান্ত হলেই এ পঙক্তিগুলো আবৃত্তি করতেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজ পরিবারে সুপ্রভাত বলা হয় অথচ মৃত্যু তার জুতার ফিতার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। আর বিলাল (রা.)-এর অবস্থা ছিল এই যখন তার জ্বর ছেড়ে যেত তখন কণ্ঠস্বর উঁচু করে এ কবিতা আবৃত্তি করতেন, হায়! আমি যদি জানতাম আমি ওই মক্কা উপত্যকায় পুনরায় রাত যাপন করতে পারব কি না যেখানে ইজখির ও জলিল ঘাস আমার চারপাশে বিরাজমান থাকত। হায়! আর কি আমার ভাগ্যে জুটবে যে আমি মজান্না নামক কূপের পানি পান করতে পারব! এবং শামা ও তাফিল পাহাড় কি আর আমার দৃষ্টিগোচর হবে! আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গিয়ে এ সংবাদ জানালাম। তখন তিনি এ দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! মদিনাকে আমাদের প্রিয় করে দাও, যেমন প্রিয় ছিল আমাদের মক্কা বরং তার চেয়েও অধিক প্রিয় করে দাও। আমাদের জন্য মদিনাকে স্বাস্থ্যকর বানিয়ে দাও। মদিনার সা ও মুদের মধ্যে বরকত দান করো। আর এখানকার জ্বর রোগকে স্থানান্তর করে জুহফায় নিয়ে যাও।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(বুখারি, হাদিস : ৩৬৪২ ) </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাসুল (সা.) ও সাহাবিদের মতো দেশপ্রেমে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‌</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> উজ্জীবিত হোক প্রত্যেক বাঙালির প্রাণ। রুখে দিক দেশ-বিদেশের সব ষড়যন্ত্র। বিজয়ের মাসে পূরণ হোক সবার স্বপ্ন ও প্রত্যাশা। মহান আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।</span></span></span></span></span></p>