<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে ভূমি একটি মৌলিক সম্পদ। কেননা তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, মৌলিক জিনিস বোঝাতে গাছ ও ভূমিকে বোঝায়। অবশ্য </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শরহু মুনতাহাল ইরাদাহ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> কিতাবের লেখক বলেন, ভূমি, ঘরবাড়ি ও বাগানগুলো মৌলিক জিনিসের অন্তর্ভুক্ত হবে। এমন মৌলিক জিনিস ক্রয়-বিক্রয়ের সময় কোন জিনিস তার অধীন হবে এবং কোন জিনিস অধীন হবে না, তা নিয়ে ফকিহ আলেমদের ভেতরে মতভিন্নতা আছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কোনো ব্যক্তি যখন ভূমি বিক্রি করে, তাতে থাকা গাছ ও ঘরবাড়ি তার অন্তর্ভুক্ত হবে। কেননা এসব জিনিস ভূমির সঙ্গে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত। তাই এগুলো ভূমির অধিকারভুক্ত হবে। এই বিষয়ে ফিকহের ইমামরা ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তবে শাফেয়ি মাজহাবের ইমামরা সপ্রাণ গাছকে ভূমির অধীন বলেন। ফলে তাদের মতে, ভূমি বিক্রি করলে শুকনা গাছ তার অন্তর্ভুক্ত হবে না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভূমিতে সৃষ্ট পাথর ও প্রোথিত পাথর ভূমি বিক্রির অন্তর্ভুক্ত হবে। কেননা এগুলো ভূমিরই অংশ। অন্য প্রোথিত জিনিস ভূমি বিক্রয়ের অংশ হয় না, বরং সেটা বিক্রেতার মালিকানাধীন থাকে। বিক্রয়ের সময় যদি ক্রেতা-বিক্রেতা এই কথার ওপর একমত হন যে ক্রেতা ভূমির বাহ্যিক অংশের মতো অভ্যন্তরীণ অংশেরও মালিক হবে, তবে ক্রেতা ভূমিতে প্রোথিত জিনিসেরও মালিক হবে। যদি ভূমিতে এমন ফসল হয়, যা একাধিকবার কাটা যায়, তবে এর মূলের মালিক হবে ক্রেতা এবং বিক্রির সময় দৃশ্যমান কর্তিত অংশের মালিক হবে বিক্রেতা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কোনো ব্যক্তি যখন বাড়ি বিক্রি করে, তখন তাতে থাকা ঘর, তার আশপাশ, রোপিত গাছ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস বিক্রয়ের অন্তর্ভুক্ত হবে। যেমন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিঁড়ি, স্থায়ী তাক, দরজা ও স্থাপিত পেষণযন্ত্র। তবে পুঁতে রাখা ধনভাণ্ডার, রশি, বালতি ও স্থানান্তরযোগ্য কাঠ ও পাথর বিক্রির ভেতরে পড়বে না। ঘরে স্থায়ীভাবে লাগানো তালা-চাবি বিক্রির অন্তর্ভুক্ত হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কোনো ব্যক্তি যখন গাছ বিক্রি করে, এর ডাল, পাতাসহ গাছের সব অংশ তাতে অন্তর্ভুক্ত হবে। কেননা এর সবটুকুই গাছের অংশ, গাছের প্রয়োজনে সৃষ্টি। যদি কোনো ব্যক্তি গাছ রেখে দেওয়ার জন্য কেনে এবং কেনাবেচার আগের উভয় পক্ষ তাতে সম্মতি দেয়, তবে সর্বসম্মতিক্রমে গাছ রোপণের স্থানও বিক্রির অন্তর্ভুক্ত হবে। ক্রেতা ফল লাভের শর্ত না দিলে পরাগ সংযোজন করা হয়েছে এমন গাছে ফল এলে ফলের মালিক হবে বিক্রেতা। আর ক্রেতা শর্ত দিলে ক্রেতাই এর মালিক হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">যে ব্যক্তি পরাগায়ণের পর খেজুরগাছ বিক্রি করে, সে গাছের ফল বিক্রেতা পাবে। হ্যাঁ, যদি ক্রেতা শর্ত করে, তবে সে-ই ফল পাবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২২০৪)</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আর গাছে পরাগ সংযোগ করা না হলে তা ক্রেতা লাভ করবে। কেননা হাদিসে বিক্রেতার ফল পাওয়ার জন্য পরাগায়ণকে শর্ত করা হয়েছে। হানাফি মাজহাবের বিশুদ্ধ মত হলো, পরাগায়ণ করা হোক বা না হোক, গাছ বিক্রি করলে ফল এর অন্তর্ভুক্ত হবে না। তবে শর্ত করে নিলে ভিন্ন কথা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ফকিহ আলেমরা এ বিষয়ে একমত যে গাছ বাদ দিয়ে কেবল ফল বিক্রি করা জায়েজ। তবে শর্ত হলো, তা উপযুক্ত হতে হবে। উপযুক্ততা প্রমাণের আগে তা বিক্রি করা জায়েজ নেই। হানাফি মাজহাবের মত হলো, ফল ঝরে যাওয়া বা নষ্ট হওয়ার পর্যায় অতিক্রম করলেই ফল উপযুক্ত হয়। অন্যদের মতে, ফল পাকলে ও মিষ্টি হলে তা উপযুক্ত হয়। একইভাবে ফল উপযুক্ত হওয়ার আগে তা তাত্ক্ষণিকভাবে কেটে নেওয়ার শর্তে বিক্রি করা জায়েজ। আর গাছে রেখে দেওয়ার শর্তে বিক্রি করলে তা ফাসিদ বলে গণ্য হবে। গাছের সঙ্গে সঙ্গে যদি ফল বিক্রি করা হয়, তবে সবার মতে তা জায়েজ; কেননা ফল গাছের অধীন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা অবলম্বনে</span></span></span></strong></span></span></p>