<p>পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলছে। তবে এবার যশোর পর্যন্ত প্রকল্পের ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন ব্যবহার করে খুলনা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার পথে ছেড়ে আসবে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস। এর মধ্য দিয়ে নতুন পুরো পথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।</p> <p>ওই দিন জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনে স্বাগত জানাতে উপস্থিত থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এটিই মূলত আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।</p> <p>পর্যাপ্ত বগি ও ইঞ্জিন না থাকা, লোকবলসংকটের কারণে ট্রেন চলাচল নামমাত্র শুরু হচ্ছে। মাঝের বেশির ভাগ স্টেশনেই ট্রেনের যাত্রাবিরতি থাকছে না। এতে প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষ রেলের মাধ্যমে নিজেদের আন্ত জেলা পর্যায়ে যোগাযোগের সুফল পাবে না।</p> <p>রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ ২৪ তারিখ ট্রেন চলাচল শুরু হবে। কিছু জিনিসের সংকট রয়েছে। অপারেশন বিভাগ এগুলো নিয়ে কাজ করছে।’</p> <p>পদ্মা রেল সেতু দিয়ে নতুন আট জোড়া ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা ছিল। পথগুলো হলো ঢাকা-যশোর-খুলনা, ঢাকা-যশোর-বেনাপোল, ঢাকা-ভাঙ্গা-গোপালগঞ্জ ও ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা। বর্তমানে পদ্মা সেতু দিয়ে তিনটি আন্ত নগর ট্রেন চলাচল করছে। এর মধ্যে রয়েছে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস এবং রাজশাহীগামী মধুমতী এক্সপ্রেস। এ ছাড়া চলাচল করছে খুলনাগামী কমিউটার ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস।</p> <p>নতুন পথে নতুন ট্রেন বাড়ছে না। মাত্র একটি র্যাক (পূর্ণাঙ্গ ট্রেন সেট) দিয়ে দুই নামে দুটি ট্রেন নামানো হচ্ছে। এই ট্রেনটি ঢাকা-খুলনা-ঢাকা নামে যখন চলাচল করবে তখন এর নাম থাকবে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস। আর ঢাকা-বেনাপোল-ঢাকা পথে চলবে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামে। এক দিনে মোট চারবার দুই প্রান্তে যাতায়াত করবে ট্রেনটি।</p> <p>বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আফজাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে খুলনা এবং ঢাকা থেকে বেনাপোল পথে নতুন ট্রেন চালুর প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। এরই মধ্যে ট্রেন দুটির নামও চূড়ান্ত করা হয়েছে। খুলনার আদি নাম অনুসারে খুলনার ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সেই অর্থে করা হবে না। কমলাপুরে হয়তো অল্প একটু আনুষ্ঠানিকতা থাকতে পারে।’</p> <p>রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এই দুটি পথে একটা ট্রেন চারবার চলাচল করবে। প্রথমে ট্রেনটি খুলনা থেকে ঢাকা আসবে, সেটাই আবার ঢাকা থেকে বেনাপোল যাবে, আবার বেনাপোল থেকে ঢাকা আসবে, তারপর রাতে ঢাকা থেকে আবার খুলনা যাবে।</p> <p>পদ্মা সেতুর পুরো পথ চালু হলেও সব স্টেশনে ট্রেন আপাতত থামতে পারবে না। কারণ এখনো লোকবল অনুমোদন হয়নি। ফলে কয়েকটি স্টেশনে ট্রেন যাত্রাবিরতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আপাতত বিভিন্নভাবে ১০০ জনবল দিয়ে এসব ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে চালানো    </p> <p>হবে। আবার এই পথে যশোরে ট্রেন না থামানোর জন্য এক ধরনের আলোচনা রয়েছে।</p> <p>এই প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যমান ছয়টি স্টেশনের উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন স্টেশন চালানোর জন্য এখনো লোকবল নিয়োগ হয়নি। স্টেশনসহ ট্রেন পরিচালনার কাজের জন্য আপাতত আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১০০ লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে।রেলওয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকা-খুলনা পথে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস বিরতি দেবে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী, লোহাগাড়া ও সিঙ্গিয়া স্টেশনে। একইভাবে ঢাকা-বেনাপোল পথে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিরতি দেবে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী, লোহাগড়া, যশোর ও বেনাপোল স্টেশনে। নতুন পথে ঢাকা থেকে খুলনা যেতে তিন ঘণ্টা ৪৫ মিনিট এবং ঢাকা থেকে বেনাপোল যেতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে।</p> <p>গত বছরের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। তখন ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু করা হয়। এবার ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার রেলপথ চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে যশোরের ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথে সরাসরি যোগাযোগ চালু হতে যাচ্ছে।</p> <p> </p>