<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে বছরে প্রায় ৩.১৫ থেকে ৩.৮৪ বিলিয়ন প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে রিসাইকেল করা হয় ২১.৪ শতাংশ। বাকি ৭৮.৬ শতাংশ প্লাস্টিক বোতল নদী, সমুদ্র ও ডাম্পিং স্টেশনে জমা হয়, যা পরিবেশ ও মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলে ঢুকে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে কাচের ব্যবহার এর সমাধান হতে পারে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল মঙ্গলবার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত প্রভাব : দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (ঝটচ) বোতলের পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসডোর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের প্রায় ৮৩.৬ শতাংশ মানুষ প্রতিনিয়ত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করে। শহরে পানির বোতল এবং গ্রামে কোমল পানীয়ের বোতল বেশি ব্যবহৃত হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভোক্তাদের মধ্যে শহরে ১৮.৪ শতাংশ এবং গ্রামে মাত্র ৫.৫ শতাংশ মানুষ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শহরে প্রায় ৫১ শতাংশ এবং গ্রামে ৪২ শতাংশ ভোক্তা মাত্র একবার ব্যবহারের পর এসব প্লাস্টিক বোতল ফেলে দেয়। বাকি অধিকাংশ ভোক্তা একাধিকবার ব্যবহারের পর প্লাস্টিক বোতল ফেলে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্লাস্টিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যুক্ত বর্জ্য সংগ্রহকারীদের মধ্যে ৩.৪ শতাংশ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল থেকে নির্গত রাসায়নিক, যেমন বিসফেনল এ (ইচঅ), গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি যেমন, শরীরের হরমোন সিস্টেমে বিঘ্ন এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের সম্ভাবনা তৈরি করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক সচিব এবং এসডোর চেয়ারপার্সন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, প্লাস্টিক বোতলের প্রভাব, পরিবেশ দূষণ ও মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্লাস্টিক দূষণ, বিশেষ করে একবার ব্যবহারযোগ্য বোতল থেকে সৃষ্ট দূষণ আমাদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি উদ্বেগজনক চ্যালেঞ্জ। প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যবস্থা উন্নত করা এবং আমাদের প্রতিবেশতন্ত্র রক্ষার জন্য সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেভাবে পরিচালিত হয়েছে গবেষণা  </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন শ্রেণির তিন হাজার ৪১৬ জন ভোক্তার মধ্যে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। এ ছাড়া বিক্রি এবং প্লাস্টিক বোতল পুনর্ব্যবহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ২৮৮ জন খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। আর ঢাকা শহরের ১৮০ জন বর্জ্য সংগ্রাহকের কাছ থেকেও তথ্য নেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার প্রফেসর ড. মো. আবুল হাশেম প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবেশগত এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি উপেক্ষা করা যায় না। বিসফেনল এ (ইচঅ) এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকের মতো রাসায়নিক আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করছে, যা মানবস্বাস্থ্য এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ সংকট মোকাবেলায় নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে টেকসই বিকল্প এবং দায়িত্বশীল ভোক্তা আচরণকে উৎসাহিত করা যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের সংকট মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই গবেষণা প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমরা প্রতিটি স্তরে পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করতে চাই, যাতে পরিবেশবান্ধব সমাধান গ্রহণ, বর্জ্য সংগ্রহকারীদের সহায়তা এবং পরিবেশ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় কঠোর নীতি প্রয়োগ করা যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গবেষণা প্রতিবেদনে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের প্রভাব হ্রাসে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং সাশ্রয়ী বিকল্প ব্যবহার করা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য বোতলের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের উৎপাদন ও ব্যবহার কমানো, একটি পূর্ণাঙ্গ নীতি ও নিয়ন্ত্রক নির্দেশিকা প্রণয়ন করা, বিকল্প সমাধান প্রচার করা এবং উৎপাদন করা, পরিবেশসম্মত রিসাইকেল নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান পুনর্ব্যবহার এবং বিপজ্জনক প্লাস্টিক বর্জ্য বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসডোর গবেষণা প্রতিবেদনে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতলের জীবনচক্র নিয়ে গবেষণা করে দেশের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানানো হয়েছে। </span></span></span></span></p>