শিল্পের সঙ্গে আবাসিকেও গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শিল্পের সঙ্গে আবাসিকেও গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস

শিল্প কারখানার পাশাপাশি আবাসিকে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি। নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের সঙ্গে বিষয়টি থাকছে বলে জানিয়েছেন কম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহনেওয়াজ পারভেজ। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান।

তিতাসের এমডি বলেন, মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা অনেক বেশি গ্যাস ব্যবহার করছে।

এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের বিল ও দুই চুলা ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে ১০০ ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস ব্যবহারের রেকর্ড রয়েছে।

শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী ও নন মিটার গ্রাহকের ব্যবহারের মধ্যে অনেক তারতম্য রয়েছে। প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহক অনেকটা মিতব্যয়ী হন।

তাই তাঁদের ব্যবহারের পরিমাণ অনেক কম হয়ে থাকে। প্রিপেইড মিটার রয়েছে অভিজাত এলাকায়। তাঁরা অনেক সময় হোটেল-রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে আসেন। তাঁদের সঙ্গে তুলনা করলে চলে না।

বর্তমানে শিল্প-কারখানার গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কিনতে ৩০ টাকা এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে ব্যবহৃত নিজস্ব বিদ্যুৎ) ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা দিতে হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) পেট্রোবাংলার পাঠানো প্রস্তাবে প্রতি ঘনমিটারে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে পুরো গ্যাস বিল হবে নতুন দামে। পুরনোদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় থাকছে প্রস্তাবে। আইনগতভাবে পেট্রোবাংলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ নেই।

শুধু লাইসেন্সের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারেন। সে কারণে বিতরণ কম্পানিগুলোর কাছে মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব চেয়েছে বিইআরসি। এরপর ইস্যু করা পত্রে বিতরণ কম্পানিগুলোকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ট্যারিফ পরিবর্তনের প্রস্তাব কমিশনে দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের নির্ধারিত পরিমাণ গ্যাসের বিল আদায় করা হয়। গ্রাহক ব্যবহার করুক, না করুক অথবা বেশি ব্যবহার করলেও নির্ধারিত বিলেই তাঁকে দিতে হয়।

বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। ওই আদেশের আগে গণশুনানি গ্রহণ করে। তখন বিতরণ কম্পানিগুলোর প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গড়ে এক চুলা ৪০ এবং দুই চুলা সর্বোচ্চ ৫০ ঘনমিটার ব্যবহার করছে। প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩.৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭.৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়। বিইআরসির আদেশের ১০ মাস পর তিতাস গ্যাস বিদ্যমান এক চুলা ৫৫ ঘনমিটার (৯৯০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৭৬.৬৫ ঘনমিটার, দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার (১০৮০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৮৮.৪৪ ঘনমিটার করার আবেদন দিয়েছে। আর পরিমাণ বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দামও বেড়ে যাবে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বান্দরবানের হোটেলগুলোয় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কক্ষ বুকিং সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
শেয়ার
বান্দরবানের হোটেলগুলোয় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কক্ষ বুকিং সম্পন্ন

২০২১ সাল থেকে পাহাড়ে অস্থিরতায় প্রতিটি ঈদ ও উৎসব চরম মন্দায় পার করেছে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসা। কিন্তু এবার সরকারি ছুটি, ঈদুল ফিতর আর সাপ্তাহিক ছুটি মিলে লম্বা অবকাশে অগ্রিম হোটেল বুকিংয়ের হিড়িক পড়ে গেছে। এরই মধ্যে বেশির ভাগ হোটেলের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কক্ষ বুকিং নিয়ে রেখেছে ভ্রমণপ্রত্যাশীরা।

গত মঙ্গলবার পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানা যায়।

বান্দরবান হোটেল-মোটেল, কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, ৩১ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ধরে পাঁচ দিনের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই হিসাবে কাগজপত্রে ২৯ মার্চ শুরু হচ্ছে ছুটি। কিন্তু এর আগের দিন ২৮ মার্চ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ছুটি শেষে অফিস খোলার কথা ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার।

তারপরের দুই দিন আবার শুক্র ও শনিবার। সুতরাং ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন ছুটি ভোগ করবেন সরকারি ও বেশির ভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঈদের যে কয়েক দিন সময় আছে এর মধ্যে বুকিংয়ের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

হোটেল হিল ভিউর ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজার তৌহিদ পারভেজ জানান, ঈদ উপলক্ষে আগামী ২, ৩ ও ৪ এপ্রিল ৬০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং নিয়ে নিয়েছে ভ্রমণপ্রত্যাশীরা।

হোটেল হিল্টনের ম্যানেজার আক্কাস উদ্দিন সিদ্দিকি জানান, তাঁর হোটেলে ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বেশির ভাগ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক জাফর উল্লাহ জানান, আগামী ২ থেকে ৭ এপ্রিল তাঁর হোটেলের ৩৪টি কক্ষের মধ্যে ২৭টি কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। আগামী দিনগুলোতে শতভাগই বুকিং হবে বলে আশা করছেন তিনি।

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দীন জানান, টানা ছুটির কারণে পর্যটকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন। আগত পর্যটকদের সার্বিক সেবা নিশ্চিত করতে হোটেল মালিকদের বলে দেওয়া হয়েছে।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের সদস্যরা কাজ করবেন।

 

মন্তব্য

পরিবেশ অনুকূলে পাঁচ বছরের ক্ষতি এবার কাটিয়ে উঠবে সিলেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
শেয়ার
পরিবেশ অনুকূলে পাঁচ বছরের ক্ষতি এবার কাটিয়ে উঠবে সিলেট

সিলেটের পর্যটনে সেই ২০২০ অতিমারি করোনা নিয়ে এসেছিল দুর্দিন। করোনা বিদায় নিলেও দুর্দশা কাটছিল না। বন্যা, বৈরী আবহাওয়া না হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা মিলিয়ে সিলেটের পর্যটনে সবচেয়ে বড় ব্যবসার মৌসুম ঈদে ছিল শুধুই হতাশার গল্প।

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর এবার পরিবেশ অনুকূলে।

তাই এবার বড় রকমের ব্যবসার স্বপ্ন দেখছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই মিলে সব প্রস্তুতি নিয়েছে। এখন পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সিলেট।

আগত দর্শনার্থীদের বরণ করে নিতে এবং বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে এরই মধ্যে ব্যবসায়ী, শ্রমিক, ফটোগ্রাফার ও নৌকার মাঝিরা সভা করে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

স্পটের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ঘাটে নৌকা বৃদ্ধি এবং পার্কিং এলাকার উন্নয়নকাজ করা হয়েছে।

দেশের একমাত্র জলাবন খ্যাত রাতারগুল পর্যটন কেন্দ্র এলাকার রিসোর্ট সোহেল স্কয়ারের স্বত্বাধিকারী সোহেল আহমদ বলেন, এবার দেশের পরিস্থিতিও তুলনামূলক স্থিতিশীল। আবহাওয়াও অনুকূল। তাই ঈদ মৌসুমে ভালো ব্যবসা হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

গেল বছর ঈদুল ফিতরের সময় পাহাড়ি ঢলের কারণে সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র তলিয়ে গেলে কেন্দ্রটি বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এবার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এ ঈদের ছুটিতে আট থেকে ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হবে।

ভোলাগঞ্জ পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সফাত উল্লাহ বলেন, আশা করছি, ক্ষতি কাটিয়ে উঠে এ বছর বাম্পার ব্যবসা হবে।

ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের পরিচালক জুয়েল মিয়া বলেন, আসছে ঈদে আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে সিলেটে বন্যার আশঙ্কা না থাকায় আমরা আশা করছি, গত পাঁচ-ছয় বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পর্যটকের আগমন ঘটবে।

হোটেল বুকিং শুরু হয়েছে জানিয়ে সিলেট হোটেল-মোটেল রেস্টহাউস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমিত নূরী জুয়েল বলেন, এবার মানুষ দরদাম করছেন বেশি। তবে বুকিং হচ্ছে।

সিলেটের সবচেয়ে বেশি পর্যটন কেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলায়। সেখানকার উপজেলা প্রশাসন পর্যটনসংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সভা করে প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও তাদের সুবিধা নিশ্চিতে আমরা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ব্যবসায়ীসহ সব পক্ষ মিলে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

 

 

মন্তব্য
ঈদ পর্যটন

পর্যটক বরণে সাজগোজ চলছে কক্সবাজারে

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
পর্যটক বরণে সাজগোজ চলছে কক্সবাজারে
ঈদের ছুটিতে পর্যটকে জমজমাট হবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। ছবি : কালের কণ্ঠ

এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ২৮ মার্চ শবেকদর, সেই সঙ্গে ২৯ মার্চ থেকে ঈদের ছুটি শুরু। সব মিলিয়ে ১১ দিনের লম্বা ছুটি। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন, টানা এই ছুটিতে দেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে নামবে ভ্রমণপিপাসুদের ঢল।

আর এই ছুটিতে পর্যটকদের টানতে শেষ মুহূর্তের সাজগোজ চলছে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসসহ খাবারের হোটেলগুলোয়।

রমজানের সময় সৈকত থাকে পর্যটকশূন্য। গত মঙ্গলবার কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঘুরে তেমন পর্যটকের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। হোটেল মোটেল জোন এবং মেরিন ট্রাইভ সড়কে ঘুরে দেখা গেছে, হোটেলগুলোতে ঈদকেন্দ্রিক কর্মতৎপরতার দৃশ্য।

শহরের কলাতলীর তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের বিপণন ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ নুর সোমেল বলেন, পয়লা এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিল কক্সবাজারে পর্যটক সমাগম বাড়বে।

এরই মধ্যে তারকা হোটেলগুলোতে ১-২ এপ্রিলের জন্য ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। আর ৩-৪ এপ্রিলের বুকিং এসেছে ৯০-৯৫ শতাংশ। ৫ এপ্রিল আবার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশে নেমেছে। এই পাঁচ দিনে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ রুম বুকিং থাকবে বলে আশা করা যায়।

পর্যটন উদ্যোক্তা আবদুর রহমান বলেন, রমজানের আগের কয়েক মাস কক্সবাজার পর্যটকে ভরপুর ছিল। তবে রমজানের শুরু থেকে একেবারে পর্যটকশূন্য। আর এই বিরতিতে অনেকে নতুন করে সাজিয়ে নিয়েছেন নিজেদের প্রতিষ্ঠান। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাব ও ট্যুরস অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, নিরাপদ অবকাশ যাপনের সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে হোটেল-মোটেল-কটেজগুলো।

জেলার অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্র যেমন হিমছড়ি, দরিয়ানগর, ইনানী, মহেশখালী, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ সব পর্যটন স্পট ইজারাদাররা সাজিয়ে তুলছেন নতুন করে।

টানা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামবে, তাই ঝামেলা এড়াতে ভ্রমণে আসার আগে অবশ্যই হোটেলের রুম বুকিং দিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন কক্সবাজার হোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধ দমনে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় কয়েকটি ভাগে সাজানো হচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশকে। নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটালে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

মন্তব্য

মসলার বাজার স্থিতিশীল, নাগালের বাইরে এলাচ

সজীব আহমেদ
সজীব আহমেদ
শেয়ার
মসলার বাজার স্থিতিশীল, নাগালের বাইরে এলাচ

এবার ঈদ বাজারে কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে জিরা, দারচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, শুকনা মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদাসহ কয়েকটি মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। তবে এলাচের দাম দফায় দফায় বেড়ে এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকায়। ৫০ থেকে ১০০ টাকার নিচে খুচরা বিক্রেতারা এখন এলাচ বিক্রি করতে চাচ্ছেন না।

তাঁরা বলছেন, পাইকারিতে দাম বাড়ার কারণে তাঁরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং মসলার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার ঈদ ঘিরে দেশের বাজারে এলাচ ছাড়া অন্য কোনো মসলার দাম নতুন করে বাড়েনি। জিরাসহ কয়েকটি মসলার দাম কিছুটা কমেছে বলেও বিক্রেতারা জানান।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে খুচরায় প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকায়।

জিরা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, লবঙ্গ কেজি এক হাজার ৪৫০ থেকে এক হাজার ৬০০, দারচিনি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০, কালো গোলমরিচ কেজি এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০, কিশমিশ কেজি ৭০০ থেকে ৮০০, পেঁয়াজ কেজি ৩৫ থেকে ৪০, দেশি রসুন কেজি ১০০ থেকে ১২০, আমদানি করা রসুন কেজি ২৩০ থেকে ২৪০, দেশি আদা কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি মসলা আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, গুয়াতেমালা, ভারতসহ বিশ্বের প্রধান প্রধান এলাচ উৎপাদনকারী দেশগুলোয় ফলন কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে এর দাম বেড়েছে। এ ছাড়া শুল্ক প্রায় দ্বিগুণ করা ও ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এলাচের আমদানি আশানুরূপ হয়নি।

আমদানির তথ্য থেকে এবং আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পেঁয়াজ, আদা ও রসুন ছাড়া দেশে মসলার বার্ষিক বাজার এখন ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

এই বাজারের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। দেশে এলাচের বার্ষিক চাহিদা সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টন। খাদ্যপণ্য ছাড়াও ওষুধ, কনজিউমার পণ্য উৎপাদনে এলাচের ব্যবহার হয়।

কারওয়ান বাজারের মাসুদ জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মাসুদ রানা কালের কণ্ঠকে বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে এলাচ ছাড়া অন্য সব মসলার বাজার স্থিতিশীল। এলাচের দাম বাড়তে বাড়তে এখন অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে গেছে।

রামপুরা কাঁচাবাজারের মেসার্স মহিউদ্দিন এন্টারপ্রাইজের বিক্রেতা মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, এলাচের কেজি ছয় হাজার টাকা শুনে ক্রেতারা অবাক হয়ে যান। বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে। যাঁরা আগে ১০০ গ্রাম নিতেন, তাঁরা এখন ৫০ গ্রাম বা ২৫ গ্রাম নিচ্ছেন। তবে রোজার ঈদ উপলক্ষে এলাচ ছাড়া অন্যান্য মসলার দামে কোনো অস্থিরতা নেই।     

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গত সোমবারের বাজারদরের তালিকানুযায়ী, ছোট আকারের এলাচের খুচরা দাম কেজি চার হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এক বছর আগে এলাচের দাম ছিল তিন হাজার ৫০০ টাকা। বাজারে বড় আকারের এলাচের দাম আরেকটু বেশি। খুচরা বাজারে বড় আকারের প্রতি কেজি এলাচ সর্বোচ্চ ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির বাজারদরের তথ্য বলছে, প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়, যা গত বছরের এই সময় ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়। লবঙ্গর কেজি এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত। দারচিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়, গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায়।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সর্বশেষ গত ৯ ফেব্রুয়ারি এলাচের শুল্ক প্রায় দ্বিগুণ করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। আগে কেজিপ্রতি শুল্ক ছিল সাড়ে সাত ডলার। বর্তমানে সেটি বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ ডলার। যার কারণে গত এক-দেড় মাসের ব্যবধানে দাম আরো বেড়ে এলাচের কেজি মানভেদে পাঁচ হাজার ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না বাড়লে এলাচের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ