<p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পুলিশের সাত কর্মকর্তা, দুই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ আসামিরা এখনো অধরা। এতে ক্ষুব্ধ আবু সাঈদের সহপাঠী, সহযোদ্ধা ও পরিবার। মামলার তদন্তকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিরা আত্মগোপনে রয়েছেন।</p> <p>পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মামলার পর থেকেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।</p> <p>এদিকে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।</p> <p>জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট পুলিশের সাবেক আইজিসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৩০ থেকে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী। পরে ৩০ অক্টোবর আরো সাতজনকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে আদালতে আবেদন করেন তিনি।</p> <p>মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশিদ, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, সহকারী কমিশনার আরিফুজ্জামান ও আল ইমরান হোসেন, উপকমিশনার আবু মারুফ হোসেন, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, তাজহাট থানার সাবেক ওসি রবিউল ইসলাম, এসআই বিভূতিভূষণ, সুরতহাল প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা এসআই তরিকুল ইসলাম এবং সুরতহাল প্রতিবেদনে স্বাক্ষরকারী নির্বাহী হাকিম আহমেদ সাদাত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, শিক্ষক মশিউর রহমান, আসাদুজ্জামান মণ্ডল, কর্মকর্তা রাফিউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নূরুন্নবী, ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, ছাত্রলীগের কর্মী টগর, বাবুল হোসেন ও শামীম মাহফুজ।</p> <p>জানা গেছে, এই মামলায় আবু সাঈদকে সরাসরি গুলি ছোড়ার অভিযোগে পুলিশ সদস্য সৈয়দ আমীর আলী ও সুজন চন্দ্র ও পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার আসামি সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকায় অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার আছেন। তবে তাঁকে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।</p> <p>জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন ও আরএমপির কমিশনার মনিরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। আর মামলার পর, কর্মস্থলে ফেরেননি আরএমপির উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন, অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার উৎপল কুমার পাল, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, রংপুর কোতোয়ালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান, পরশুরাম সার্কেলের সহকারী কমিশনার আল ইমরান হোসেন, তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম, রোকেয়া বিশ্বদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ বিভূতি ভূষন রায়।</p> <p>আরএমপি কমিশনার মজিদ আলী জানান, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন ও আএমপির সাবেক কমিশনার মনীরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছে সরকার। বাকি ৫ পুলিশ কর্মকর্তা আগস্টের পর কাজে যোগ দেননি। তাঁরা পলাতক রয়েছেন। মামলাটি তদন্ত করছে রংপুর পিবিআই। কাজেই তারাই এ সম্পর্কে ভালো বলতে পারবে।</p> <p>রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, এই ঘটনায় মহানগর পুলিশের এএসআই আমীর আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।</p> <p> </p>