<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবদুল লতিফের কথা ও সুরে আমাদের প্রিয় একটি গান, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি দাম দিয়ে কিনেছি বাঙলা, কারো দানে পাওয়া নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বড় বেশি মূল্যের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই দেশ। এটি কারো দান বা দয়ায় পাওয়া নয়। সে কারণেই আমাদের ভালোবাসার এই দেশটি সম্পর্কে কেউ কোনো নির্দয় উক্তি করলে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে। কারণ উপনিবেশবাদী ব্রিটিশ সরকারের কোনো কাগুজে ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এ দেশ। এর প্রতিটি অঞ্চল হয়েছে রক্তস্নাত। পাষণ্ডতার দগদগে ক্ষত এখনো আমাদের দেহ কিংবা মন থেকে মুছে যায়নি। সে অবস্থায় আমাদের অর্জিত বিজয়কে পাশ কাটিয়ে কেউ যখন তাদের দিকটি বড় করে তুলে ধরার প্রয়াস পায়, তখনই জনমনে কিছু প্রশ্ন জেগে ওঠে। একাত্তরে সংঘটিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ৯ মাসব্যাপী যে সশস্ত্র সংগ্রাম, তা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। পাকিস্তান সৃষ্টির অব্যবহিত পর থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য, ব্যবধান ও শোষণ-বঞ্চনার কারণে বাঙালিদের মনে স্বাধীনতার স্পৃহা জেগে ওঠে। তখন থেকেই দিনে দিনে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম একদিন একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। একাত্তরের সশস্ত্র যুদ্ধ ছিল তাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর্যায়ক্রমিক পরিণতি। সে যুদ্ধে অর্জিত বিজয়ের মূল অনুঘটক ছিল তারাই। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মুক্তির লক্ষ্যেই সে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাধ্য হয়ে ভারত শেষ পর্যন্ত সে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। তারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল এবং সরবরাহ করেছিল কিছু প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র। এই অনস্বীকার্য সাহায্য-সহযোগিতার জন্য আমরা তাদের প্রতি অবশ্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/22-12-2024/2/kalerkantho-ed-1a.jpg" height="335" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/22-12-2024/2/kalerkantho-ed-1a.jpg" style="float:left" width="350" />এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে একাত্তরে এই উপমহাদেশের ইতিহাসে যা ঘটেছিল, তা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অধিকারবঞ্চিত মানুষকে কেন্দ্র করেই। তারাই ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ। সে যুদ্ধে যদি কারো বিজয় অর্জিত হয়ে থাকে, তবে সে বিজয়ের মূল দাবিদার বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা। সে ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের কারণেই বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তান তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের বাঙালিদের কাছে (মুক্তিযোদ্ধা) পরাজিত হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু মহাপরিতাপ বা দুঃখের ব্যাপার হলো, পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে; মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে নয়। অথচ পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। তারা শুরু থেকে তৎকালীন প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ অবরুদ্ধ পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র সশস্ত্র হামলা কিংবা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপারেশন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শুরু করে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সে সময় বিশ্বব্যাপী এই সশস্ত্র গেরিলা যোদ্ধারা মুক্তিকামী মানুষের নৈতিক সমর্থন, আর্থিক সাহায্য এবং এমনকি সাধ্যমতো অস্ত্র কেনার অর্থ জুগিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী বড় বড় শহর-নগরে প্রস্তাবিত স্বাধীন বাংলা অর্জনের জন্য বিশাল বিশাল সমাবেশ আয়োজিত হয়েছে। মিছিল বের করা হয়েছে এবং এমনকি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সামনে অবরুদ্ধ পূর্ব পাকিস্তানিদের ওপর গণহত্যা চালানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কিংবা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আইন প্রণেতাদের কাছে লবি করা হয়েছে। সুতরাং সে মুক্তিযুদ্ধ যে ষোলো আনাই পূর্ব পাকিস্তানি বাঙালিদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লিখিত সেসব কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানি বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের ৯ মাস স্থায়ী সশস্ত্র যুদ্ধের সময় একটিই স্বপ্ন ছিল, আর তা হচ্ছে স্বাধীনতা অর্জন। কিন্তু সেদিন বাঙালিদের চরম ত্যাগ-তিতিক্ষার পর এক নদী রক্ত পেরিয়ে যখন বিজয়ের তরণি শেষ পর্যন্ত ঘাটে ভিড়ল, তখন তাকে নিয়ে দেখা দিয়েছিল এক অবমাননাকর পরিস্থিতি। যে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাসব্যাপী পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করলেন, তাদের পরাজিত পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের বেদিতে স্থানই দেওয়া হলো না। ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল অরোরার কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ করলেন। সেদিনের সেই অবিশ্বাস্য বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে প্রস্তাবিত বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সূচনালগ্নেই বিতর্কিত হয়ে পড়ল। চূড়ান্ত বিজয়ের একমাত্র দাবিদার মুক্তিযোদ্ধাদের চোখেমুখে ফুটে ওঠা বিজয়ের গরিমা যেন আচ্ছাদিত হয়ে পড়েছিল এক অজানা আশঙ্কায়। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেওয়াকে অনেকে অবধারিত বা অবশ্যম্ভাবী বলে ধরে নিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি কিংবা কূটনৈতিক চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রের কারণে। মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন অপারগ হয়ে তাতে বাধা দিতে পারেননি, বরং পরোক্ষভাবে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করেছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তের রণকৌশলের কারণে। কিন্তু তাদের অনেকেই পরে সেই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেছেন। তবে ১৬ ডিসেম্বরে অর্জিত বিজয়ের আনন্দে তখন তারা আত্মহারা। তারা ভেবেছিলেন, সে বিজয় একান্তই তাদের। সে বিজয় তাদের একটি প্রত্যাশিত স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়েছে। কিন্তু তথ্যাভিজ্ঞ মহলের কারো কারো মতে, সে বিজয় ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তার দায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাঁধে চাপানো সঠিক হবে না। কারণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এসেছে প্রবাসী সরকারের কাছ থেকে। সরকার ভারতের বিভিন্ন প্রস্তাবে কৌশলগতভাবে সম্মত হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেকে বলেন, আমাদের সশস্ত্র যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সরাসরি আমাদের সঙ্গে জড়ানো ঠিক হয়নি। ভারতের সে সিদ্ধান্তকে প্রবাসী সরকারের মেনে নেওয়া কোনো মতেই যুক্তিসংগত হয়নি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বেগতিক অবস্থা দেখে পাকিস্তান সরকার ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ৩ ডিসেম্বর। এবং গুজরাটসহ ভারতের তিনটি শহরে তারা বোমাবর্ষণও করেছে। হামলা করেছে কাশ্মীর ফ্রন্টেও। সে অবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান দখলের বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ছেড়ে দিয়ে ভারতের উচিত ছিল তৎকালীন পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিতে সাহায্য করা। এবং তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের দিকে মনোনিবেশ করা। পাশাপাশি পেছনে থেকে তৎকালীন ধসে পড়া পাকিস্তানব্যাপী বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বতোভাবে সাহায্য করা। সেটি না করে ভারত তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে একযোগে সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযোদ্ধারা তখন অপেক্ষাকৃতভাবে ভালো অবস্থানে ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তখন পলায়নপর পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করা ছিল অল্প সময়ের ব্যাপার। সে অবস্থায় ভারতীয়রা ট্যাংক ও বিমানবহর নিয়ে ঢাকা অভিমুখে রওনা করেছিল। তখন ছিল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, তখন পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় আশাতীতভাবে ত্বরান্বিত হয়েছিল। তবে তা পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযোদ্ধারা পূর্বাপর গেরিলা কায়দায় আক্রমণ পরিচালনা করছিলেন। সে অবস্থায় ভারতীয় বাহিনী সম্মুখসমরে লিপ্ত হয়েছিল। এতে ভারতকে অনেক নিয়মিত সেনা হারাতে হয়েছে। সমরবিদদের মতে, ভারত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং পরে পশ্চিম পাকিস্তানে একযোগে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চালিয়ে সম্পূর্ণ বিষয়টিকে অতি দ্রুত সমাপ্তির দিকে টেনে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। অনেকটা সে কারণেই তারা এখন একাত্তরের বিজয়কে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয় বলে উল্লেখ করার প্রয়াস পাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা ২৫ মার্চের পর থেকেই উত্তরোত্তর বর্ধিত কলেবরে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত বিজয় অর্জন করেছেন। এখানে আরেকটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে ভারতীয় সেনারা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে মুক্তিযোদ্ধা এবং তৎকালীন মুক্তিকামী স্থানীয় সংগ্রামী মানুষের সমর্থনেই সামনে এগোতে পেরেছে, যা এককভাবে তাদের পক্ষে মোটেও সম্ভব ছিল না। একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে ঢাকা অবরোধ করে ফেলেছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লেখিত প্রেক্ষাপটে একাত্তরে দুই অংশেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সাফল্যকে ভারত তাদের বিজয় বলে উল্লেখ করছে। তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করে, এতে ভারত ১৬ ডিসেম্বরে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) অর্জিত বিজয়, স্বাধীনতা কিংবা সার্বভৌমত্বকে পক্ষান্তরে অস্বীকার করছে। কারণ ১৬ ডিসেম্বরে পালিত বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু যে বাণী দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের কোনো উল্লেখ নেই। সে কারণে বাংলাদেশের জনগণ সম্পূর্ণ বিষয়টি ভিন্নভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে শুরু করেছে। এতে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে দুটি প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার যে আশাবাদ বা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, তাতে যথেষ্ট আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অনেকে আবার একাত্তরের দিকে ফিরে তাকাতে প্রয়াস পাচ্ছেন না। তারা মনে করেন, একাত্তরে আমাদের ভারতে আশ্রয় নেওয়াটাই ভুল হয়েছিল। ঠিক হতো যদি আমরা দেশের মাটিতে থেকেই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারতাম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মরতে হয় দেশের মাটিতেই মাথা উঁচু করে মরতাম। ৩০ লাখের জায়গায় নতুবা মৃতের সংখ্যা আরো দুই এক লাখ বেড়ে যেত, তবু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, বিজয়, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো অবমাননাকর কথা শুনতে হতো না। প্রকৃত বন্ধুত্বের পরিবর্তে অবহেলা, অসম্মান ও তাঁবেদারির গঞ্জনা সইতে হতো না। এ অবস্থায় আমরা চাই এক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে, যেখানে আমরা আমাদের আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ নিয়ে মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়াতে পারব। গত জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের এক নতুন দিগন্তের হাতছানি দিয়েছে। এই সুযোগকে আমরা যেন হাতছাড়া না করি। এই প্রত্যাশা শুধু আমার নয়, এ দেশের বেশির ভাগ মানুষের। তবে একাত্তরে সংঘটিত যুদ্ধ আমাদের নিয়েই সংঘটিত হয়েছিল এবং সে যুদ্ধে বিজয় ছিল একান্তই আমাদের। কারণ সেটি ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ভাষ্যকার</span></span></span></span></p> <p><strong><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">gaziulhkhan@gmail.com</span></span></span></span></strong></p>