<p>দেশের কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য সারের সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দেশে গ্যাসের চাহিদা পূরণে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এ দুটি বিষয়ই সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।</p> <p>গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের কক্ষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় এই পণ্য দুটি আমদানির ছয়টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।</p> <p>দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি এবং সারের চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বিভিন্ন দেশ থেকে এক লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৯৬৩ কোটি ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার ৯৬০ টাকা।</p> <p>দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা এক লাখ ৩০ হাজার টন সারের মধ্যে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া, ৩০ হাজার টন টিএসপি এবং ৪০ হাজার টন ডিএপি সার রয়েছে। সার কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ৬৭৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।</p> <p>বৈঠক শেষে সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সারের যাতে সংকট না হয় সে বিষয়টি আমরা দেখছি। আজকের বৈঠকে সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশে সারের কোনো সংকট হবে না।</p> <p>এদিন বৈঠকে ক্রয় কমিটি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কম্পানি লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৩৫.৫০ ডলার।</p> <p>সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কম্পানি থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আরেকটি অনুমোদিত প্রস্তাবে ব্যয় হবে ১২৪ কোটি ৬৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৪৬.৩৩ ডলার।</p> <p>কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রস্তাবের মধ্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায় মরক্কোর ওসিপি এসএ এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানি হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৪১৫ ডলার।</p> <p>কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের মাআদেন ও বিএডিসির মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন হয়েছে। এই সার আমদানিতে খরচ হবে ২৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম ধরা হয়েছে ৫৮১ ডলার।</p> <p><strong>সিঙ্গাপুর থেকে কেনা হচ্ছে দুই কার্গো এলএনজি</strong><br /> সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এক হাজার ২৮৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা দিয়ে সিঙ্গাপুরের গানভোর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই এলএনজি কেনা হবে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে জ্বালানির যাতে সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮০ টাকা ব্যয়ে সিঙ্গাপুর মেসার্স গানভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজি। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট (এমএমবিটিই) এলএনজির দাম পড়ছে ১৩.৫৭ ডলার। একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরো এক কার্গো কেনা হচ্ছে ৬৪৯ কোটি ৫৯ লাখ ১৪ হাজার ৮৮০ টাকায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১৩.৭৭ ডলার।</p>