<p style="text-align:justify">ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ হাসিনা হলের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওই হলের আয়া ও তার মেয়েদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বিচার চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক শেখ হাসিনা হলের সহকারী রেজিস্ট্রার। ভুক্তভোগী রোজিনা খাতুন অভিযুক্তের অফিসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে আয়ার কাজ করেন।</p> <p style="text-align:justify">ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগে বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর ২০১৪ সাল থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে কাজ করছেন তিনি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক তাকে কুপ্রস্তাবসহ তার মেয়েদের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার জন্য বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ভুক্তভোগীকে কাজ থেকে বের করে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।</p> <p style="text-align:justify">এছাড়াও বিভিন্ন সময় স্টাফদের কথায় কথায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দিতেন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক । ২০২১ সালে হলে রোজিনার ছোট মেয়েকে একা পেয়ে অভিযুক্ত রাজ্জাক তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন রোজিনা। তবে লোকলজ্জার ভয়ে এবং অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ না করে বিষয়টি গোপন রাখেন রোজিনা। সবশেষ গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে হলে কাজ করার সময় সুযোগ পেয়ে তাকে অবৈধ মেলামেশা করার জন্য কুপ্রস্তাব দেয় রাজ্জাক। এসময় ভুক্তভোগী রোজিনা কৌশলে তার কবল থেকে বেরিয়ে বিষয়টি তার আস্থাভাজন ছাত্রীদের জানান।</p> <p style="text-align:justify">ভুক্তভোগী রোজিনা খাতুন বলেন, হলে কাজ করার সময় থেকেই সে আমাকে ও আমার মেয়েদের দিয়ে তার অবৈধ যৌনলালসা পূরণের চেষ্টা করে। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সব সময় আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। একপর্যায়ে আমার মেয়ের প্রতিও তার কুনজর পড়লে আমার মেয়ে ভয়ে তার সামনে যেতো না। আমি মেয়েদেরকে নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। আমি তার বিচার চাই।</p> <p style="text-align:justify">হলের আবাসিক ছাত্রী সুপ্রিয়া কুন্ডু বলেন, আমাদের হলে রাজ্জাক এক ধরনের ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। হলে সিট থেকেও যোগ্য ছাত্রীদের দেয় না। সেসব সিটে অবৈধভাবে পছন্দের ছাত্রীদের তোলে। তাছাড়া তার নামে প্রভোস্টের কাছে বিচার দিলেও কিছু হয় না। হলের বিষয়ে রাজ্জাক যা বলে তাই হয়। হলের মহিলা কর্মচারীরাও বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়। কান্নাকাটি করে।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমি একসময় জাসদ ছাত্রলীগ করতাম। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কেউ এটা করে থাকতে পারে।</p> <p style="text-align:justify">শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ কে এম শামছুল হক ছিদ্দিকী বলেন, আমি গতকাল লাস্ট আওয়ারে অভিযোগটা পেয়েছি৷ এজন্য বিষয়টি নিয়ে কোনো কাজ করার সুযোগ পাইনি৷ আমরা হল বডি বসে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিব। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করা হবে। </p>