ঢাকা, শুক্রবার ২৮ মার্চ ২০২৫
১৪ চৈত্র ১৪৩১, ২৭ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শুক্রবার ২৮ মার্চ ২০২৫
১৪ চৈত্র ১৪৩১, ২৭ রমজান ১৪৪৬
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্র-শিক্ষকদের ফ্যাসিস্ট বলায় উপাচর্যের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
শেয়ার
ছাত্র-শিক্ষকদের ফ্যাসিস্ট বলায় উপাচর্যের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল
ছবি: কালের কণ্ঠ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদেরকে ফ্যাসিস্ট আমলের বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গতকাল রবিবার দুপুরে এমন মন্তব্য করেন উপাচার্য। এই বক্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রবিবার রাতে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেছে। 

শিক্ষাথী‌দের পাশাপা‌শি আজ সোমবার শিক্ষক কর্মকর্তারাও সংবাদ স‌ন্মেল‌নের মাধ‌্যমে কর্মসূচী ঘোষনা কর‌তে যা‌চ্ছেন।

এমন মন্তব্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতরা বলেন, নিয়োগ এমনকি শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম দলের ভিত্তিতে হয় না। উপাচার্য সবাইকে ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যা দিয়ে নিজের পদকে রক্ষার অপচেষ্টা করছেন। তিনি নিজেই অতীতে ফ্যাসিস্টের দোসরদের নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি তিনি নিজেই ফ্যাসিস্টদের পক্ষে বিবৃতিও দিয়েছিলেন।

তাই অবিলম্বে তার এ মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান কর্মরতরা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল শিক্ষার্থী উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, তিনি ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন’ করছেন। এ নিয়ে তিন দিন ধরে অস্থিরতা চলছে। এ পরিস্থিতিতে উপাচার্য রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

 

এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।'

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, 'এই বিশ্ববিদ্যালয় ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত। সেই সময় থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা নিয়োগ পেয়েছেন এবং যারা শিক্ষার্থী তারা সবাই ফ্যাসিস্ট আমলের। এ পর্যন্ত নতুন কেউ যোগদান করেনি এবং কেউ যদি বলে আমি ফ্যাসিস্টের কেউ নই, সেটা দাবি করতে পারবে না। সেই আমলে সে রিক্রুয়েটেড।

আমরা জানি কীভাবে রিক্রুয়েটমেন্ট হয়েছে। এখন প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের কেন উসকে দেওয়া হচ্ছে?'

এদিকে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুজয় শুভ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলা থেকে মশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস ও ভিসির বাসভবন ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় এসে শেষ হয়।

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শিক্ষক লিখিতভাবে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বরাবরে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বলেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ হিসেবে অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয় কিছু ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু-স্বাভাবিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে এমন কার্যক্রম বন্ধ হওয়া জরুরি।’

উপাচার্যের বক্তব্যের বিরোধীতা করে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘উপাচার্য কীভাবে এখানকার সব ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীকে ফ্যাসিস্ট বলেন? ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেছেন। এই ছাত্ররা কি ফ্যাসিস্ট হতে পারে? তিনি যে মামলা দিয়েছেন, সেই মামলায় আমাদেরও অভিযুক্ত করেছেন। সরকারকে অবহিত না করে কীভাবে তিনি ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করেন?’

৪২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা, উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের প্রবেশ গেট ভাঙচুরের অভিযোগে ৪২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন এজাহার নামীও এবং অপর ২৫ জন অজ্ঞাত। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি জনতাবদ্ধে অনধিকার প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন ও খুন জখমের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। 
গতকাল রবিবার বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানায় মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার কেএম সানোয়ার পারভেজ লিটন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. গোলাম রাব্বানী, ট্রেজারার মামুন অর রশিদ ও ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন সিন্ডিকেট সভা বয়কট করে অসহযোগিতা করেছে বলেও জানানো হয় এজাহারে।

উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন মামলায় প্রধান স্বাক্ষী হয়েছেন। এ ছাড়াও সহকারী প্রক্টর মারুফা আক্তার, মো. সাইফুল ইসলাম, ড. সোনিয়া খান সনি ও মো. ইলিয়াস হোসেন মামলার স্বাক্ষী হিসেবে রয়েছেন।

বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগ মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। আসামিরা লাঠি, লোহার রড, ইট-পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপাচার্যের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে তারা হুমকিমূলক শ্লোগান দিতে থাকে।

অভিযোগের বিষয়ে উপ-উপাচার্য ড. গোলাম রব্বানী বলেন, ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত। সেখানে মামলা করে আমাদের নাম উল্লেখ করার বিষয়টি বোধগম্য নয়।

শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করবেন কিনা জানতে চাইলে ভিসি বলেন, আমার কাছে আসতে হবে। বলতে হবে। ভুল স্বীকার করলে তখন করব।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নাড়ির টানে বাড়ি নয়, থাকবেন ক্যাম্পাস পাহারায়

কুবি প্রতিনিধি
কুবি প্রতিনিধি
শেয়ার
নাড়ির টানে বাড়ি নয়, থাকবেন ক্যাম্পাস পাহারায়
ছবি : কালের কণ্ঠ

পরিবারের সদস্যের সঙ্গে হাসিমুখে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমেই যেন ঈদকে ঘিরে মানুষের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা ও আনন্দের ষোলোকলা পূর্ণ হয়। আর ঈদ আনন্দকে পরিপূর্ণ করতেই শিকড়ের টানে দূর-দূরান্ত থেকে বাড়ির উদ্দেশে পথ পাড়ি দেয় সবাই। স্বস্তির হাসি নিয়ে কাজ সেরে ঘরে ফিরে।

কিন্তু ভাগ্য বিড়ম্বনায় আপামর কর্মজীবী সবার পক্ষে ঈদ আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করার সুযোগ হয়ে ওঠে না।

বলছিলাম পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি না করতে পারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী তথা আনসার সদস্যদের কথা।

জীবিকা নির্বাহের দায়ে পরিবারের মুখে এক ফোটা হাসি ফোটাতে হাজারটা ঝড়ঝাপটার মধ্যেও দায়িত্বকে এতটুকু অবহেলা করার অভিপ্রায় নেই তাদের মাঝে। কারো কাছে মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আংকেল। ফাঁকা ক্যাম্পাসেও তখন নির্বিকার চিত্তে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ক্যাম্পাসকে আগলে রাখছেন তারা।

নীরবে-নিভৃতে, হাসিমুখে কাজ করে যাচ্ছেন। দায়িত্বটা পালনেই যেন সুখ। চেয়ে চেয়ে দেখছেন আর পরিচিতদের হাসিমুখে বিদায় দিচ্ছেন। এ যেন একা রেখে চলে যাওয়া বিচ্ছেদ।

ঈদ আসে, ঈদ যায়, উৎসব আসে, পূজ আসে কিন্তু তাদের বাড়ি ফেরা হয় না। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষক-কর্মচারী সবাই যখন পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ বা অন্যান্য উৎসব বা অনুষ্ঠান উদযাপনের পরিকল্পনা সাজাতে ব্যস্ত, তখন নিরাপত্তা প্রহরীরা বন্ধের দিনগুলোতে বন্ধ পরবর্তী একটি অপরিবর্তিত ক্যাম্পাস উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলোর নিরাপত্তায় বর্তমানে ৪৯ জনের মতো নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন ছুটিতে থাকলেও বাকি ৩৯ জন ক্যাম্পাসে রয়ে গেছেন।

তিন শিফটে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা, দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা, এবং রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ভাগ হয়ে কাজ করছেন তারা। 

ঈদে দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরীর সঙ্গে কথা হয় দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকের। তাদের ভেতর একজন মোহাম্মদ মালেক। তার বাড়ি উত্তরবঙ্গের রংপুর জেলায়। পরিবারকে রেখে এবছর ঈদ করবেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

তিনি বলেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাড়িতে যাওয়া হয় না। যখন চাকরিতে ঢুকি তখনই সব কিছু ত্যাগ করেই এখানে আসতে হয়েছে। এই ত্যাগের জন্য বউ-বাচ্চা পরিবার সব ফেলে রেখে এখানে ঈদ করতে হচ্ছে।

আরেক নিরাপত্তাকর্মী মো. উসমান আলী। বাসা গাইবান্ধা জেলায়। তিনি বলেন, ‘ছাত্র মামারা সবাই বাসায় ঈদ পালন করতে গেছে। এখানে ক্যাম্পাস ফাঁকা। ঈদে বাড়িতে যেতে পারছি না, এ নিয়ে অনেক খারাপও লাগছে। এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত আছি। এ জন্য সবার সঙ্গে ঈদ পালন করতে পারছি না।’

আরেকজন মোহাম্মদ ফয়সাল। তারও নিজ জেলা গাইবান্ধা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসেই ঈদ পালন করবেন।

তিনি বলেন, ‘প্রশাসন ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে গেছে, এ জন্য ঈদে বাড়ি যাওয়া হবে না। এই দায়িত্বটা যেন সুন্দর করে পালন করতে পারি, সেটাই লক্ষ্য। মা-বাবার সঙ্গে ঈদ পালন করতে পারব না, এটা খুবই খারাপ লাগার মতো একটি বিষয়। কারো সঙ্গেই দেখা হবে না, তাই পরিবারের সবাইকে অনেক মনে পড়বে।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসব কর্মী বছরের পর বছর ধরে একইভাবে ঈদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের অনেকেই পরিবারের মুখ চেয়ে চাকরিটা আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। উৎসবের আনন্দ ছেড়ে ক্যাম্পাস পাহারায় কাটানো ঈদ তাদের কাছে নতুন কিছু নয়।

মন্তব্য
ঈদের ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি

রাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের ধস্তাধস্তি

রাবি প্রতিনিধি
রাবি প্রতিনিধি
শেয়ার
রাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের ধস্তাধস্তি
ছবি : কালের কণ্ঠ

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আবাসিক হল বন্ধ রাখার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরের দিকে প্রক্টর এলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব কার্যালয়ে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি ‘ইতিবাচক’ কোনো মনোভাব না দেখিয়ে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা ভবনের ফটক তালাবন্ধ করে কর্মসূচি চালিয়ে যান। এতে ভবনের ভেতরে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, উপ-উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে যায়।

পরে দুপুর দেড়টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে ভবনের তালা খুলে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন। মুক্ত হয়েই আন্দোলনকারীদের ওপর উচ্চবাচ্য করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসুদ। তবে এ ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া হল বন্ধের সিদ্ধান্ত, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ভ্রূক্ষেপ না করা, প্রক্টরের হামলা এবং হল বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকা ফ্যাসিবাদী আচরণেরই অন্তর্ভুক্ত।

তবে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

প্রশাসন বলছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা করতে এবং তাদের সংকট নিরসনে প্রশাসন কাজ করছে। তবে, প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে এ ধরনের কর্মসূচি সে কাজকে ব্যাহত করে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি প্রশাসন ভবনে প্রবেশের সময়েই তাদের আলোচনার জন্য আহ্বান করি। কিন্তু তারা আহ্বানে সাড়া দিয়ে আলোচনায় আসেনি।

তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।’

হল ভ্যাকেন্টের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও বিপদে পড়ে তাদের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব। আমি শিক্ষার্থীদের বিষয়টা সমাধানের জন্য প্রাধ্যক্ষ পরিষদকে পরামর্শ দিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই সংকটের সুষ্ঠু সমাধান হবে।’

উল্লেখ্য, আগামীকাল ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহ ‘ভ্যাকেন্ট’ থাকবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলগুলো।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

নববর্ষে জবিতে হবে বৈশাখী মেলা

জবি প্রতিনিধি
জবি প্রতিনিধি
শেয়ার
নববর্ষে জবিতে হবে বৈশাখী মেলা
সংগৃহীত ছবি

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবার আয়োজিত হতে যাচ্ছে বৈশাখী মেলা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে। মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক স্টল বা দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের আগ্রহী সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই মেলায় স্টল বা দোকান বরাদ্দ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

আরো পড়ুন
কাজী হায়াতের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শাকিব ভক্তদের, ওমর সানী বললেন ‘দুঃখজনক’

কাজী হায়াতের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শাকিব ভক্তদের; ওমর সানী বললেন, ‘দুঃখজনক’

 

এতে আরো বলা হয়, যারা আবেদন করতে আগ্রহী তাদের ১০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে হবে। নিবন্ধন ফরম ৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসে পাওয়া যাবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে স্টল বরাদ্দের আবেদন করতে ছাত্র-ছাত্রীদেরও উৎসাহিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন লিমন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট এই দাবি উত্থাপন করেন। এতে অন্য ছাত্র প্রতিনিধিরা একাত্মতা পোষণ করেন।

মন্তব্য

পরীক্ষাকেন্দ্র পুনর্বহালের দাবিতে শিবচরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
পরীক্ষাকেন্দ্র পুনর্বহালের দাবিতে শিবচরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

জানা যায়, উপজেলার দত্তপাড়া ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে ২০১৭ সালে কলেজের দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপিত হয়।

সম্প্রতি পরীক্ষাকেন্দ্র এই কলেজ থেকে সরিয়ে শিবচরে নেওয়া হচ্ছে। এতে ভোগান্তির কথা জানিয়ে কেন্দ্র বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, এই কলেজটি শিবচর ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফরিদপুরের ভাঙ্গা, সদরপুর, মাদারীপুরের রাজৈর, টেকেরহাটসহ দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।

বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এই কলেজে বেশি। শিবচরে গিয়ে পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টদায়ক। কেন্দ্র সরিয়ে শিবচরে নেওয়া হলে দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের শিবচরে যেতে সময় বেশি ব্যয় হবে। আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শিক্ষার্থীরা।

উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ইমন বলেন, ‘এখান থেকে কেন্দ্র শিবচরের কলেজে নিলে প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের শিবচরে গিয়ে পরীক্ষা নেওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে। এই কলেজটি ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সাথে। দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা সহজেই কলেজে আসতে পারে। কিন্তু শিবচরে কেন্দ্র স্থানান্তর হলে সময় এবং আর্থিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’

শাহনাজ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা এই কলেজেই উচ্চ মাধ্যমিকের কেন্দ্র পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি।

আমাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।’

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ হাফিজুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘আমাদের কলেজে ভাঙ্গা, সদরপুরসহ দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। কলেজটি ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে এবং ছাত্রী সংখ্যা আমাদের ছাত্রের চেয়ে বেশি। বিশেষ করে ছাত্রীদের কথা বিবেচনা করেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে এখানে কেন্দ্র স্থাপিত হয়। এরপর থেকে সুনামের সাথেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছরই হঠাৎ করে কেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার চিঠি পাই, যা দুঃখজনক। আমরা কেন্দ্র পুনর্বহালের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি।’

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজটি ১৯৯৭ সালে স্থাপিত হয়। বর্তমানে এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় ১৫ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়া ডিগ্রি, অনার্সসহ সব মিলিয়ে কমপক্ষে ৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ