<p>সারের সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন উত্তরের ৫ জেলার (রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম) কৃষকরা। কৃষকদের দাবি দাম বেশি দিয়েও তারা সার পাচ্ছেন না। অপরদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রংপুর অফিস বলছে- সারের সরবরাহে ঘাটতি নেই। ডিলার ও চাষি পর্যায়ে তারা সার সরবরাহ সময়মতো। তবে সারের বাজারের পরিস্থিতি হচ্ছে বস্তা প্রতি দাম বেশি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ১ হাজার টাকা বেশি। তবুও কৃষকরা পাচ্ছেন না সার।</p> <p>বাজারে বর্তমান ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট সারই টিএসপি সার (টিএসপি), ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি), মিউরেট অব পটাশ সারে (এমওপি) সারের চাহিদা অনেক। কৃষকরা বলছেন, এই সার যদি সঠিক সময়ে না পাওয়া যায় তাহলে কৃষিতে উৎপাদন ঘাটতি হবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="এলাকা ছেড়ে ফেনীতে লাঞ্ছিত মুক্তিযোদ্ধা কানু, ফিরতে চান বাড়িতে" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735025593-9bf4989c13221da464270f151d4201b2.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>এলাকা ছেড়ে ফেনীতে লাঞ্ছিত মুক্তিযোদ্ধা কানু, ফিরতে চান বাড়িতে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460797" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রংপুর কার্যালয় বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা ইউরিয়া ৩০ হাজার ৩৯৪ মেট্রিক টন, টিএসপি ১০ হাজার ৮০৭ মেট্রিক টন, ডিএপি ৩১ হাজার ৮৮৮ মেট্রিক টন, এমওপি ১৭ হাজার ৪৮৮ মেট্রিক টন সার সরবরাহ করা হয়েছে। এর আগের বছর (২০২৩) সালে এই সারের সরবরাহ ছিল প্রায় একই রকম।</p> <p>সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সার কৃষকদের কিনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের থেকে ২০০ থেকে ১৭০০ টাকা বেশি দামে। বর্তমানে টিএপির ৫০ কেজির বস্তা ২৮০০-৩০০০ টাকা, ডিএপি ১৩০০-১৩৫০ টাকা ও এমওপি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১২৫০ টাকায়। অথচ সরকার নির্ধারিত দাম অনুসারে যা বিক্রি হওয়ার কথা যথাক্রমে ১৩৫০ টাকা, ১০৫০ টাকা ও ১০০০ টাকায়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিএনপিতে নেওয়া হবে না : মির্জা ফখরুল" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735024549-a4dba9b67cf54c1c9da7b162dfbc1b74.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিএনপিতে নেওয়া হবে না : মির্জা ফখরুল</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460795" target="_blank"> </a></div> </div> <p>কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার আগমনী এলাকার বাসিন্দা মো. মোমিনুণ ইসলাম জানান, এবার তার নিজের জমিতে বাধাকপি, আলু, মরিচসহ একাধিক ফসলের আবাদ করেছেন। তবে তিনি ভুগছেন হতাশায়, কারণ- তিনি টাকা দিয়েও সার পাচ্ছেন না।</p> <p>তিনি বলেন, ‘আলুতে পটাশ, টিএসপি, ইউরিয়া লাগে কিন্তু হামরা সার পাই না। দোকানত গেলে কয় সার নাই। টিএসপি সার অক্টোবর মাসে কিনছি ৩০ টাকা কেজি। এ মাসে আসি কেনা খাইল ৩৫ টাকা কেজ। হামরা বাচমো কেমন করি। এত্তি সারেএ পাইনা সার আনছি চিলমারী, নাগেশ্বরী (পার্শ্ববর্তী উপজেলা) থাকি। বস্তা প্রতি বেশি দাম নিবার নাকছে ২০০ থাকি ৩০০ টাকা।’</p> <p>কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের কৃষক শফিয়ার রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে সার কিনতে গেলে বিভিন্ন রকমের সারের প্রতি বস্তায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি নিচ্ছেন। এতে আমার আলু চাষে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থা চরতে থাকলে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হবে। কারণ দিন শেষে আমরা ফসলের দাম পাই না।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="১৭ বছর পর মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা পিন্টু" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735023567-a992f07d19721dbf74df68c1ed4e7c56.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>১৭ বছর পর মুক্তি পেলেন বিএনপি নেতা পিন্টু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460792" target="_blank"> </a></div> </div> <p>উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের চাষি দুলাল হোসেন বলেন, ‘সারের সংকট দেখিয়ে স্থানীয় বাজারের খুচরা বিক্রেতারা ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সার বেশি দামে বিক্রি করছেন। প্রতি বস্তা সারে বেশি দাম রাখতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। কেউ কেউ দাম রাখছে আরো বেশি।’</p> <p>ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নে সার সরবরাহকারী বিএডিসির ডিলার মেসার্স অফিসার ঘরের স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগরের বিএডিসির গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুদ না থাকায় ও পরিবহন সমস্যায় আমরা গত নভেম্বর মাসের বরাদ্দের সার চলতি ডিসেম্বরে উত্তোলন করতে হয়েছে। আমাদের নিকট থেকে সরকারি মূল্যে সার কিনে খুচরা বিক্রেতারা সারের সংকট দেখিয়ে অধিক মূল্যে বিক্রি করছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। তবে সারের কোনো সংকট নেই।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গর্তে ঢুকিয়ে মাথাহীন ‘তরুণীর’ দেহ আগুনে পোড়াচ্ছিলেন যুবক!" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/24/1735021324-794cdb9c73f8c687c66ee249c67e263a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গর্তে ঢুকিয়ে মাথাহীন ‘তরুণীর’ দেহ আগুনে পোড়াচ্ছিলেন যুবক!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/24/1460778" target="_blank"> </a></div> </div> <p>নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক ব্যবসায়ী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অভিযান দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা এখন সার নিজের বাড়িতেও রাখছে না। রাখছে আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখান থেকে সার বিক্রি হচ্ছে গোপনে বেশি দামে। যারা সার পাচ্ছে না তারা বেশি দাম দিয়েই কিনছে বিপাকে পড়ে।’</p> <p>লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি আমার জমিতে বেগুণ, আলু আবাদ করেছি। কিন্তু বাজারে টিএমপি, পটাশ সার না পেয়ে আমি হতাশ। এবার মনে হয় ভালো আবাদ করতে পারব না।‘ </p> <p>কৃষক ও কলামিস্ট নাহিদ হাসানের মতে, কৃষককে যদি জৈব সার বিষয়ে দক্ষ করে তোলা যায় তাহলে কৃষক রাসায়নিক সারের দিকে কম ধাবিত হবে। তিনি বলেন, ‘জৈব সার ব্যবহারের জন্য কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তার দায়িত্ব নিতে হবে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের। তথাকথিত বহুজাতিক সার কম্পানির দালালি না করে তাদের কৃষকের কাছে যেতে হবে সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধানের জন্য।’</p> <p>রংপুর বিএডিসি অতিরিক্ত পরিচালক (সার) নির্মালায়া কুমার দাশ বলেন, ‘আমাদের কাছে এই মৌসুমে যে পরিমাণ সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল তার প্রায় ৯৫ শতাংশেরও বেশি সার বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের হিসাব মতে সারের ঘাটতি নেই। তবে কেউ কৃত্রিম সংকট করলে সেটা আলাদা বিষয়। তবে আমরা সে বিষয়গুলো নজরদারিতে রাখছি।’</p>