<p style="text-align:justify">মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত চা শ্রমিক গোপাল বাক্তির বাড়িতে গিয়ে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নিহত গোপাল বাক্তির পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন এবং এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।</p> <p style="text-align:justify">প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ। এসময় জাতীয় নাগরিক কমিটির মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রতিনিধি ফাহাদ আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সদস্য রুমন কবির, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি (স্বাস্থ্য বিষয়ক সমন্বয়ক সেল, সিলেট) আলী আব্বাস শাহীন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি তামিম আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">নিহত গোপালের স্ত্রী দয়া বাক্তি বলেন, আমার স্বামী শুধু বাগানে কাজ করতেন। কিন্তু বাগানে কাজ করে ১৭৮ টাকা রোজে তো পেট চলে না। বড় মেয়ের অপারেশনে ৩ লাখ টাকা গেছে। ছেলে-মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ লাগে, কিস্তি আছে। তাই পাহাড়ে মাঝে মধ্যে গিয়ে বাঁশ এনে বিক্রি করতেন। বাঁশ আনতে গিয়েই স্বামী মারা গেলেন। এখন ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কীভাবে সংসার চালাব, এই চিন্তায় আমি দিশেহারা।</p> <p style="text-align:justify">জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ সাংবাদিকদের বলেন, ভারত বাংলাদেশের পতিত স্বৈরাচারকে জায়গা দিয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বুকে গুলি চালাচ্ছে। এভাবে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হতে পারে না। যে সম্পর্ক দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। ভারত সেটা নিজেই তৈরি করেছে। আমরা চাই যে সীমান্তে হত্যা বন্ধে সরকার আন্তর্জাতিক মহলে দাবি তুলুক। একটা মানুষ যাতে আর হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয়। </p> <p style="text-align:justify">বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ূম বলেন, লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। এসময় নিহতের শরীরে ৯টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে। বিষয়টি নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।</p> <p style="text-align:justify">বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, বড়লেখা সীমান্তে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে আমরা তার জন্য নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা উদঘাটনে চেষ্টা করছি। এরমধ্যে বিজিবির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা (বিজিবি) পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন, প্রতিবাদলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পর দুই পক্ষ (বিজিবি-বিএসএফ) পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।</p>