আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার ১১টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। তবে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের প্রার্থীর নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি। কুমিল্লা জামায়াতের দায়িত্বশীল একটি সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তবে জামায়াতের অপর আরেকটি সূত্র বলছেন, এখনো প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
কুমিল্লায় ১১ আসনের মধ্যে ১০ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লা মহানগরীর একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম ১০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন। জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের টীম সদস্য আব্দুস সাত্তারসহ কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের সকল প্রার্থী ও উপজেলা আমির ও সেক্রেটারীসহ অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লায় ১০টি আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) মো. মনিরুজ্জামান বাহালুল, কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) আসনে নাজিম উদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) ইউসুফ হাকিম সোহেল, কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) সাইফুল ইসলাম শহীদ, কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) ড. মোবারক হোসাইন, কুমিল্লা-৬ (কুমিল্লা সদর) কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) অধ্যাপক শফিকুল আলম হেলাল, কুমিল্লা-৯ (মনোহগরগঞ্জ-লাকসাম) ড. সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) মাও. ইয়াসিন আরাফাত ও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াত আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কুমিল্লার ১১টি আসনেও জামায়াত প্রার্থী দেবে। যখন দলের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে তখনই জামায়াত নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাজ আনুষ্ঠানিক শুরু করবে। বর্তমানে নির্বাচনে মাঠ জামায়াতের অনুকূলে রয়েছে আমাদের কাজ করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না, জনগণও আমাদের দিকে সাড়া দিচ্ছেন।
সম্পর্কিত খবর

এসএসসি পরীক্ষা ২০২৫
প্রথম পরীক্ষার দিনেই বাবা হারালেন নাহিদ
সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

চলমান মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার হল থেকে বের হয়েই বাবার লাশের খাটিয়া কাঁধে তুলে নিলেন ছেলে নাহিদ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে বের হয়ে তিনি নিজ গ্রাম বড় হাড়গিলায় গিয়ে বাবার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেন। তিনি এবছর স্থানীয় মাতাইনকোট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।
এর আগে বুধবার রাত দেড় টায় নাহিদের বাবা আক্তার হোসেন (৪৫) কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল কাদের ও রনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষার হল থেকে ফিরে নাহিদ জোহরের নামাজ আদায় করেন। এরপর বাবার লাশের খাটিয়া কাঁধে নিয়ে বাড়ি থেকে বড়হাড়গিলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে যান। জানাজা শেষে আবারও খাটিয়া কাঁধে নিয়ে শরীয়তের নিয়ম মেনে নিজের বাবার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।
জানাজার নামাজে ইমামতি করেন নাহিদের প্রতিবেশী মাওলানা জাকির হোসেন। জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেন লালমাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মোস্তফা কামাল খোকনসহ মাতাইনকোট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বড় হাড়গিলা গ্রামবাসী।
মাতাইনকোট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের স্কুল থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ছাত্র নাহিদ এর বাবা বুধবার রাতে ইন্তেকাল করেছেন। ছেলের পরীক্ষার কারণে সকাল থেকে পিছিয়ে দুপুরে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ ও এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ইলিয়াছ কাঞ্চন বলেন, ‘আজকে (১০ এপ্রিল) এসএসসির বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। আমাদের কেন্দ্রে ৫৮৬জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৮০জন অংশগ্রহণ করেছে। ৬জন ছাত্রী অনুপস্থিত ছিল। ছাত্রদের মধ্যে নাহিদ নামের একজন পরীক্ষার্থী বাবার মৃত্যুর পরও মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে এসেছেন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী নাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বাবা ৪মাস ধরে টিবি রোগে আক্রান্ত। ঋণ করে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বাবার চিকিৎসার চেষ্টা করেছি। গত মঙ্গলবার বিকেলে নাকে মুখে রক্ত বের হতে থাকলে বাবাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। বুধবার সকাল থেকে আমি বাড়িতে থেকে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু রাত দেড়টায় বাবার মৃত্যুর খবর পাই। এরপর থেকে আর পড়তে পারিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে বাবার নিথর দেহ বাড়ির উঠোনে একা রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। পরীক্ষার হলে বসেও বাবাকেই ভাবছিলাম। কিছু লিখতে গেলেই খাতা দেখা যায় না, সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাবার লাশ চোখে ভাসছিল। তারপরও কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। পরিবারে আমার মা রয়েছে। একমাত্র বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। আমার ছোট ভাইটি মাতাইনকোট উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ছে। বাবাহীন একটি অস্বচ্ছল পরিবার কিভাবে? সামনে পথ চলবে সেটাই ভাবছি। সবাই আমাদের পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।’

শরীরে আগুন দিলেন যুবলীগ নেতা, অতঃপর...
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পারিবারিক কলহে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দগ্ধ আশিকুর রহমান (৩৫) নামের এক যুবলীগ নেতার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নিহত আশিকুর রহমান উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে ও সম্ভুপুরা ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে তার নিজ বসতঘরে নিজের শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান বলেন, ৩দিন আগে পারিবারিক কলহের জেরে যুবলীগ নেতা আশিকুর রহমান কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন দিলে দগ্ধ অবস্থায় তাকে জাতীয় বার্ন ইউনিট অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তার মৃত্যু হয়েছে।

খুলনায় সিটি কর্পোরেশনের অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ
খুলনা অফিস

সড়ক ও ফুটপাত থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সংস্থাটি নগরীর দৌলতপুর ও খালিশপুর থানা এলাকায় অব্যাহত অভিযান পরিচালোনা করে।
সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ দপ্তর জানিয়েছে, কেসিসি’র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণার নেতৃত্বে এ অপসারণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
অবৈধ দখল অপসারণকালে ফুটপাতের উপর ফ্রিজ ও জুস তৈরীর মেশিন রাখার অপরাধে যশোর রোডস্থ কোরিয়ান জুস এন্ড ফাস্টফুডের মালিক মাহী খানকে চার হাজার টাকা এবং হার্ডওয়্যার মালামাল ফুটপাতের উপর রেখে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে নিউ মোহাম্মাদিয়া হার্ডওয়্যারের মালিক মো. রহমতকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কেসিসি’র এস্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। জনস্বার্থে এ অপসারণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

মির্জাগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টাসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইব্রাহিম জোমাদ্দার বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) মির্জাগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেছেন। বুধবার (৯ এপ্রিল) বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে মির্জাগঞ্জ থানাকে এজাহার নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে দা, রামদা, জিআই পাইপসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগী ইব্রাহিম জোমাদ্দারের বাড়িতে ঢুকে প্রতিপক্ষের লোকজন। তারা বাড়িতে ঢুকে গােয়ালে রাখা একটি গরুর গলায় বাধা শিকল কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শব্দ শুনতে পেয়ে ইব্রাহিম জোমাদ্দার লাইট জ্বালিয়ে দেখতে পান, দরজার সামনে দেশীয় অস্ত্রসহ কিছু লোক দাঁড়িয়ে আছেন।
পরে অভিযুক্তরা ধারালাে অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম জোমাদ্দারের মাথায় কোপ মারেন।
এসময় আহতরা ৯৯৯ এ কল দিয়ে সহযোগিতা চাইলে মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। আহতরা এখনও মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
আসামিরা হলেন-খালেক জোমাদ্দারের পুত্র কামাল জোমাদ্দার (৩৮) ,জসিম জোমাদ্দারের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৪০), মৃত হাসেম জোমাদ্দারের পুত্র মাজেদ জোমাদ্দার (৫০),গনি হাওলাদারের ছেলে মোশারেফ হাওলাদার (৪৫),শিরু ফকিরের ছেলে তৌহিদ (৪০), ওয়াজেদ ফরাজীর ছেলে বশির ফরাজী (৪৫),হামেল চৌকিদারের ছেলে রাসেল চৌকিদার (৩৫),আদম হাওলাদারের ছেলে হাবিব হাওলাদার (৫৫),কাছেম হাওলাদারের ছেলে মজিবুর হাওলাদার (৩৩), কামাল জোমাদ্দারের ছেলে মাইনুল জোমাদ্দার (১৯)।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইব্রাহিম জোমাদ্দার বলেন, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। এলাকার এমন কোন অপকর্ম নাই যা তারা করে না। তাদের ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ সর্বদা আতঙ্কে থাকে। আমরা ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার বলেন, আদালতের কাগজ এখনো হাতে পাইনি। পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।