<p>তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রস্তাব অনুসারে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করলে ২০২১-২২ অর্থবছরে তিন হাজার ৩৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় বাড়বে। শনিবার ‘তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর এবং জনস্বাস্থ্যে এর প্রভাব’ বিষয়ক ভার্চুয়াল বাজেট সংলাপে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।</p> <p>ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর), বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) ও টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন নাটাবের চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, শিরীন আখতার ও ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমূখ। মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধাপক ড. রুমানা হক।</p> <p>মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে সিগারেট খাত থেকে সরকারের সম্ভাব্য রাজস্ব আয় ২৭ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য তামাক বিরোধী সংগঠনের দেয়া প্রস্তাব অনুসারে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করলে এর পরিমাণ বেড়ে দাড়াবে ৩০ হাজার ৫২০ কোটি টাকায়। বিপরীতে সরকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছে তাতে আয় হবে ২৭ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট করের প্রস্তাব গ্রহণ না করায় সরকার তিন হাজার ৩৪০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা সবসময় তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছি। অথচ নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের মূল্য অপরিবর্তিত রাখায় এবং উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের মূল্য অতি সামান্য বাড়ানোয় মূল্যস্ফীতির বিচারে সিগারেটের গড় মূল্য ০.৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রস্তাব মেনে নিলে এই মূল্য ২০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেতো। তিনি প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতির প্রবর্তন, তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর প্রস্তাব পরিবর্তন করে নতুন করারোপ এবং অতি দ্রুত একটি কমপ্রিহেনসিভ তামাক কর পলিসি গ্রহণের সুপারিশ করেন।</p> <p>আলোচকরা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক বিরোধী সংগঠন, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের কোনো সুপারিশ না মেনে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য কাক্সিক্ষত হারে বাড়ানো হয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এভাবে চলতে থাকলে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সেটা ২০৫০ সালেও বাস্তবায়ন হবে না। কারণ প্রস্তাবিত বাজেটে সব সিদ্ধান্ত তামাক কোম্পানির পক্ষে যাবে। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে তামাক বিরোধীদের প্রস্তাব অনুসারে করারোপ করা জরুরি বলে তারা উল্লেখ করেন।</p>