<p>আসন্ন দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি, সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। আজ শুক্রবার রাজধানীর প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরে এমন ঘোষণা দেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পলাশ কান্তি দে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা দুর্গাপূজার সরকারি ছুটি তিন দিন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তর পাইনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, যেন এবার থেকেই দুর্গাপূজায় সরকারি ছুটি তিন দিন ঘোষণা করা হয়। এবার দাবি না মানলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।</p> <p>তিনি বলেন, দুর্গাপূজায় হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার। কারণ পাঁচ দিনের দুর্গাপূজায় মাত্র এক দিন সরকারি ছুটি। যার কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই পূজার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থেকে পূজার আনন্দ, ধর্মীয় যজ্ঞ শেষ করতে পারে না। এমনকি পরিবার-পরিজনের সঙ্গে পূজার আনন্দ ভাগ করে নিতে পারে না।'</p> <p>সরকারি ব্যবস্থাপনায় পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, মন্দিরগুলোতে বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায় আজ ভীত। হিন্দু সম্প্রদায় এখন তাদের বাড়ি, নারী, মন্দির ও জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে। দুর্গাপূজার স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যয় উদযাপন কমিটিকেই বহন করতে হয়। আমাদের দাবি, প্রত্যেকটি স্থায়ী ও অস্থায়ী পূজামন্দিরে সরকারি খরচে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা এবং প্রতিটি মন্দিরে পূজার ১০ দিন আগে থেকে পূজা চলাকালীন নিরাপত্তা জোরদার করা।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে দ্রুত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিগত তিন বছরের ইতিহাস দেখলেই বোঝা যায় যে শারদীয়া দুর্গাপূজা নিয়ে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের শঙ্কা বোধ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। মন্দির কিংবা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর ধর্মীয় সহিংসতা জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণের মতো ঘটনা যতটা না বেদনাদায়ক তার চেয়ে বেশি বেদনাদায়ক এসব ঘটনার ক্ষেত্রে বিচারহীনতা এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা। আজ দেশকে হিন্দুশূন্য করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে একটি চক্র। মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অজুহাতে নড়াইলের নিরপরাধ আকাশ সাহাকে ৫৭ ধারায় এখনো জামিন না দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। রাষ্ট্র যথাযথ ব্যবস্থায় এখানে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে ৫৭ ধারা প্রয়োগ আমরা দেখছি না। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সবার জন্য সমান প্রয়োগের দাবি জানাই।</p> <p>সংগঠনের সভাপতি প্রভাস চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন হিন্দু মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী ড. সোনালী দাস। এ ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি প্রভাস চন্দ্র মণ্ডল, জগন্নাথ হালদার, সুনীল মালাকার, হিন্দু যুব মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী পঙ্কজ হালদার প্রমুখ।</p>