<p>জাতিসংঘ মহাসচিব সোমবার বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পরিস্থিতি ‘মর্মান্তিক ও ধ্বংসাত্মক’। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের সম্মুখীন অবস্থাগুলো ‘সবচেয়ে গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের’ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন। এ ছাড়া কায়রোতে একটি সম্মেলনে মানবিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের পক্ষ থেকে পাঠানো একটি বার্তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে।</p> <p>২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালালে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, সেই হামলায় এক হাজার ২০৮ জন নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। অন্যদিকে ইসরায়েলের পাল্টা সামরিক অভিযান গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৪২৯ জন নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, যা জাতিসংঘও বিশ্বাসযোগ্য মনে করে।</p> <p>গুতেরেস সংঘাতের ধ্বংসাত্মক প্রভাব ও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অপুষ্টি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে...দুর্ভিক্ষ আসন্ন। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার কাজ চলছে : হোয়াইট হাউস" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/01/1733069965-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার কাজ চলছে : হোয়াইট হাউস</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/12/01/1452782" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জাতিসংঘ মহাসচিব আরো জানান, গাজায় এখন ‘বিশ্বের যেকোনো স্থানের তুলনায় মাথাপিছু অঙ্গচ্ছেদের শিকার শিশুর সংখ্যা সর্বোচ্চ’। তিনি আরো বলেন, ‘অনেকে অঙ্গ হারাচ্ছে, এমনকি অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করাতে বাধ্য হচ্ছে’। এ ছাড়া গুতেরেস ত্রাণ বিতরণের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধের সমালোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি ত্রাণ সরবরাহের বর্তমান স্তরকে ‘অতি অপর্যাপ্ত’ বলে উল্লেখ করেন।</p> <p>এদিকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) জানিয়েছে, গত মাসে গড়ে মাত্র ৬৫টি ত্রাণের ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে যুদ্ধের আগে এই সংখ্যা ছিল ৫০০। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বারবার গাজার অবস্থার অবনতির বিষয়ে সতর্ক করে জানিয়েছে, বেসামরিক লোকজন দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। তারা বলেছে, সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজায় পৌঁছনো ত্রাণের পরিমাণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গাজার প্রধান ক্রসিং দিয়ে জাতিসংঘের ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/01/1733054228-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গাজার প্রধান ক্রসিং দিয়ে জাতিসংঘের ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/12/01/1452696" target="_blank"> </a></div> </div> <p>গত বছর যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে হামাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করা ইসরায়েল ত্রাণ সংগঠনগুলোর বড় পরিসরে ত্রাণ পরিচালনা ও বিতরণের অক্ষমতাকে দোষারোপ করেছে। গুতেরেস সোমবার বলেন, গাজায় ত্রাণ সরবরাহের ওপর অবরোধ ‘লজিস্টিক সংকট নয়’, বরং ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মৌলিক নীতির প্রতি শ্রদ্ধার সংকট’।</p> <p>ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত উত্তর গাজায় তীব্র সংঘর্ষের মাঝে ত্রাণ সরবরাহের জন্য তাদের সব প্রচেষ্টা হয় ‘প্রত্যাখ্যান’ বা ‘বাধাগ্রস্ত’ হয়েছে। গুতেরেস বলেন, ‘যদি ইউএনআরডাব্লিউএ বন্ধ হয়ে যায়, তবে এর গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিস্থাপনের দায়িত্ব ইসরায়েলের ওপর বর্তাবে।’</p> <p>সম্মেলনে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজায় মানবিক প্রতিক্রিয়ার মেরুদণ্ড হিসেবে ইউএনআরডাব্লিউএ কাজ করছে। তিনি গাজায় মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য ‘শক্তিশালী আন্তর্জাতিক আইনি ও রাজনৈতিক কাঠামো’ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা ছাড়া মানবিক কর্মীরা, যতই আত্মত্যাগী ও সাহসী হোক না কেন, (সেখানে) থাকতে ও কাজ চালিয়ে যেতে পারবে না।’</p> <p>সূত্র : এএফপি</p>