পাকিস্তানে ৮০০ আফগান আটক, উদ্বিগ্ন কাবুল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পাকিস্তানে ৮০০ আফগান আটক, উদ্বিগ্ন কাবুল
আফগান শরণার্থীরা পেশোয়ারের উপকণ্ঠে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রত্যাবাসনকেন্দ্রে নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষা করছে। ফাইল ছবি : এএফপি

পাকিস্তানে অবস্থিত আফগানিস্তানের দূতাবাস জানিয়েছে, রাজধানী ইসলামাবাদে প্রায় ৮০০ আফগান নাগরিককে আটক করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে কিছু ব্যক্তি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধিত।

দূতাবাস স্থানীয় সময় সোমবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, পাকিস্তানে আফগানদের জন্য অনিশ্চিত ভিসাপ্রক্রিয়া ‘স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার ও নির্বাসনের’ উদ্বেগজনক ঘটনা তৈরি করেছে।

রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ নথিবিহীন আফগানদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।

এর ফলে ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে সাত লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি আফগানকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে পাকিস্তানে কয়েক দশক ধরে বসবাস করছিলেন।

দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেছে, ‘আফগানিস্তান দূতাবাস ইসলামাবাদে সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ৮০০ আফগান নাগরিককে আটকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এর ফলে নারী, শিশুসহ পরিবারের বেদনাদায়ক বিচ্ছেদ ঘটেছে, যাদের অনেকেই এখনো পাকিস্তানে আটকে আছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আটককৃতদের মধ্যে এমন ১৩৭ জন আছেন, যাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন প্রক্রিয়াধীন বা যারা ইউএনএইচসিআরে অস্থায়ীভাবে নিবন্ধিত।

আফগান দূতাবাস বলেছে, ‘আফগান নাগরিকদের লক্ষ্য করে অনাকাঙ্ক্ষিত গ্রেপ্তার, বাড়ি তল্লাশি ও অর্থ আদায়ের ঘটনার খবরে আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে।’

এদিকে এ বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে ছয় লাখেরও বেশি আফগান পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে।

এর মধ্যে হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমা দেশগুলোর আশ্বাসে স্থানান্তরের আশায় গেছে। অনেক আফগান ইসলামাবাদের গেস্ট হাউসগুলোতে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছে, আর সম্প্রতি পুলিশের হয়রানির মাত্রা বেড়েছে বলে জানিয়েছে।

পাকিস্তান সরকার বলেছে, সীমান্ত অঞ্চলে চরমপন্থার উত্থান রোধে তাদের এই অভিযান। তবে আফগানরা বলছে, ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদের কারণে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। আফগানদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী উমের ইজাজ গিলানি বলেন, ‘পাকিস্তানে অভিবাসনের অপেক্ষায় থাকা আফগানরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।

বিগত কয়েক দশকে বিভিন্ন সংঘাত থেকে বাঁচতে লাখ লাখ আফগান পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে এবং তারা পাকিস্তানের সমাজের গভীরে মিশে গেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ আফগান শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীর পাশাপাশি ভিন্ন আইনি অবস্থায় আরো ১৫ লাখের বেশি আফগান রয়েছে। পাকিস্তান নিবন্ধিত শরণার্থীদের জন্য একাধিকবার স্বল্পমেয়াদি ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে, যা বর্তমানে ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
পাকিস্তানের পতাকা। ফাইল ছবি : এএফপি

পাকিস্তানের একটি আদালত অনলাইনে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননা সম্পর্কিত কন্টেন্ট পোস্ট করার অভিযোগে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একজন প্রসিকিউশন আইনজীবী বুধবার এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এএফপি বলছে, দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে এমন মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত কয়েক বছরে পাকিস্তানে বেসরকারি সংগঠনগুলো শত শত তরুণের বিরুদ্ধে অনলাইনে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা করেছে।

মুসলিমপ্রধান পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এমনকি কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও তা জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে।

এবারের মামলাটি আদালতে নেওয়া বেসরকারি সংগঠন লিগ্যাল কমিশন অন ব্লাসফেমি পাকিস্তানের আইনজীবী রাও আবদুর রহিম বলেন, ‘পবিত্র নবীর (সা.) বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননাকর বিষয়বস্তু ছড়ানোর অভিযোগে পাঁচজন অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোরআন অবমাননার অভিযোগে তাদের সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের মধ্যে একজন আফগান ও চারজন পাকিস্তানি নাগরিক। তাদের মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির একটি আদালতে দণ্ড দেওয়া হয়। রাওয়ালপিন্ডি পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তর থাকা শহর এবং রাজধানী ইসলামাবাদের পাশেই অবস্থিত।

আইনজীবী রহিম আরো বলেন, দণ্ডগুলো একই সঙ্গে কার্যকর হবে।

তবে দণ্ডপ্রাপ্তদের উচ্চ আদালতে আপিল করার অধিকার রয়েছে।

শত শত মামলা  
এত দিন পর্যন্ত পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কারো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। এই রায় ঘোষণার এক দিন আগেই পাকিস্তানের একজন ইউটিউব তারকা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তিনি এমন একটি পারফিউম বাজারে ছেড়েছিলেন, যার নাম পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন অনুযায়ী দেওয়া হয়েছিল।

রাজাব বাট নামের ওই ব্যক্তি তার ‘২৯৫’ নামের পারফিউম উদ্বোধন করেছিলেন, যা পাকিস্তানের দণ্ডবিধির ধর্ম অবমাননা আইনের ধারার সঙ্গে সম্পর্কিত।

বর্তমানে তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। দুটি ধর্ম অবমাননা মামলায় তার ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

এর আগে জানুয়ারিতে একই আদালত ‘অনলাইনে ধর্ম অবমাননাকর কনটেন্ট পোস্ট করার’ অভিযোগে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।

এদিকে সরকার পরিচালিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ৭৬৭ জন ব্যক্তি কারাগারে বিচার প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন, যাদের অধিকাংশই তরুণ। এই মামলাগুলো বছরের পর বছর আদালতে চলতে থাকে, যদিও সুপ্রিম কোর্টে আপিলে মৃত্যুদণ্ডের সাজা অনেক সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়া দ্রুত করতে সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননা মামলার জন্য একটি বিশেষ আদালত গঠন করা হয়।

মন্তব্য

সুদানে খার্তুম বিমানবন্দর পুনর্দখল সেনাবাহিনীর

    ৩ দিক থেকে আরএসএফ ঘাঁটি ঘেরা
এএফপি
এএফপি
শেয়ার
সুদানে খার্তুম বিমানবন্দর পুনর্দখল সেনাবাহিনীর
সুদানের সেনাবাহিনীর প্রতি অনুগত একজন যোদ্ধা ২৪ মার্চ খার্তুমের একটি বাজারে টহল দিচ্ছেন। ছবি : এএফপি

সুদানের সেনাবাহিনী বুধবার খার্তুম বিমানবন্দরকে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছ থেকে পুনর্দখল করেছে। এক সামরিক সূত্র এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে। একই সঙ্গে সেনারা শহরের দক্ষিণে আরএসএফের শেষ বড় ঘাঁটিকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে চলা সংঘর্ষে সেনাবাহিনী এবার রাজধানী খার্তুমের কেন্দ্রস্থলে বিমানবন্দর সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে ওই সামরিক সূত্র জানায়।

নাম না প্রকাশের শর্তে সূত্র বলেন, ‘আমাদের বাহিনী বিমানবন্দর পুরোপুরি নিরাপদ করেছে।’

গত শুক্রবার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস পুনর্দখলের পর সেনাবাহিনী খার্তুমের কেন্দ্র দিয়ে অগ্রসর হয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর দখল নিয়েছে, যা সংঘর্ষের শুরুতেই আরএসএফ দখল করেছিল। এরপর তারা দক্ষিণের দিকে অগ্রসর হয়েছে।

সামরিক সূত্র আরো জানায়, ‘রাজধানীর দক্ষিণে আমাদের বাহিনী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জাবেল আওলিয়া এলাকাকে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব—তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে।

প্রতিটি ফ্রন্ট থেকে এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।’

শহরের কেন্দ্র থেকে দক্ষিণে যাওয়ার পথে হোয়াইট নীল নদীর ওপর থাকা জাবেল আওলিয়া সেতুটি আরএসএফের দখলে থাকা একমাত্র সংযোগ পথ। এটি তাদের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের ঘাঁটির সঙ্গে সংযুক্ত রেখেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও অ্যাক্টিভিস্টদের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, আরএসএফের যোদ্ধারা এখন দক্ষিণের দিকে পিছু হটছে এবং মনে করা হচ্ছে, তারা জাবেল আওলিয়ার দিকে যাচ্ছে।

আরএসএফের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।

আরএসএফের ঘাঁটি খালি
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ নিহত ও এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ যুদ্ধ বিশ্বে সবচেয়ে বড় ক্ষুধা ও মানবিক সংকট তৈরি করেছে। যুদ্ধের ফলে খার্তুম শহর কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের কারণে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ রাজধানী ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, ফলে বহু এলাকা পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।

আরো লাখো মানুষ, যারা যেতে পারেনি বা যেতে চায়নি, তারা অনাহার, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সেনাবাহিনী ও আরএসএফ—উভয়ের নির্বিচার গোলাবর্ষণের শিকার হয়েছে।

দুটি চিকিৎসা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, আরএসএফ সেনারা খার্তুম বিমানবন্দরের দক্ষিণে তামায়োজ হাসপাতাল থেকে সরে গেছে, যা তারা যুদ্ধের শুরু থেকেই তাদের যোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করছিল। সাহাফা এলাকার বাসিন্দা ওসামা আবদেল কাদের বলেন, ‘গত রাত থেকে ওই এলাকা পুরোপুরি আরএসএফ শূন্য হয়ে গেছে।’

দক্ষিণ বেল্ট এলাকায়, যেখানে যুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা ইসা হোসেন জানান, ‘রবিবার থেকে রাস্তায় আরএসএফ কম সক্রিয়। গতকাল আমি দেখেছি আরএসএফের সাতটি গাড়ি আসবাবপত্র ও পরিবার নিয়ে জাবেল আওলিয়ার দিকে যাচ্ছে।’

যুদ্ধের শুরু থেকেই আরএসএফের বিরুদ্ধে লুটপাট, মানুষের ঘর দখল, যৌন সহিংসতাসহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বহু মাস ধরে একের পর এক পরাজয়ের পর গত বছরের শেষ দিকে সেনাবাহিনী যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং মধ্য সুদানে অগ্রসর হয়ে প্রায় পুরো রাজধানীর দখল ফিরে পায়।

মন্তব্য

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ যুক্তরাষ্ট্রে

রয়টার্স
রয়টার্স
শেয়ার
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ যুক্তরাষ্ট্রে
প্রতীকী ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ আরো খারাপ হচ্ছে। একই সঙ্গে সংস্থাটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংয়ের (র) বিরুদ্ধে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লক্ষ্যভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে।  

এ ছাড়া কমিউনিস্টশাসিত ভিয়েতনাম ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে বলেও কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা সত্ত্বেও দেশটিকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এই কমিশন একটি দ্বিদলীয় মার্কিন সরকারি উপদেষ্টা সংস্থা, যা বিদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণ করে এবং নীতিগত সুপারিশ প্রদান করে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবেলার কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করেছে এবং সে কারণে ভারতের মানবাধিকার ইস্যুগুলো এড়িয়ে গেছে। কমিশনের সুপারিশ বাধ্যতামূলক নয়, তাই যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে—এমন সম্ভাবনা কম।

২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ ভারতের বিরুদ্ধে উঠেছে, যা দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যর্থ হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দেশটির আদালত সাবেক ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে। তবে ভারত সরকার শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতির অবনতি
মার্কিন কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হামলা ও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।  

প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নির্বাচনী প্রচারে মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক বক্তব্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে মোদি মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে অভিহিত করেন এবং দাবি করেন, তারা বেশি সন্তান জন্ম দেয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলোতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভারত এসব প্রতিবেদনকে ‘অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে নাকচ করেছে।  

২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মোদি তার সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, বিদ্যুতায়ন ও ভর্তুকি প্রকল্পের মতো নীতিগুলো সব সম্প্রদায়ের জন্যই উপকারী।

 

নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ
কমিশন মার্কিন সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে, ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করা হোক এবং বিকাশ যাদব ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর ওপর লক্ষ্যভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক।

এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।  

মানবাধিকারকর্মীরা ভারতের সংখ্যালঘুদের দুর্দশার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সেখানে ঘৃণাত্মক বক্তব্যের পরিমাণ বাড়ছে। জাতিসংঘ যে নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে মন্তব্য করে বলেছে এটি ‘মূলত বৈষম্যমূলক’, সেটিও উদ্বেগের একটি কারণ। এ ছাড়া সমালোচকদের মতে বিশ্বাসের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করা ধর্মান্তরবিরোধী আইন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ও মুসলমানদের মালিকানাধীন সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনাও সংখ্যালঘুদের জন্য গুরুতর সংকট তৈরি করেছে।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ভিয়েতনামে একটি নতুন ডিক্রি জারি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ ধর্মীয় সংগঠনগুলোর আর্থিক লেনদেনের হিসাব জানতে পারবে এবং অস্পষ্ট ‘গুরুতর অপরাধের’ অজুহাতে ধর্মীয় কর্মকাণ্ড স্থগিত করতে পারবে।  

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ৮০ জনেরও বেশি বন্দির নাম যুক্তরাষ্ট্রের ‘ধর্মীয় স্বাধীনতার জন্য কারাবন্দি’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাদের ভিয়েতনাম সরকার ধর্মীয় কার্যক্রম বা ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলার জন্য শাস্তি দিয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ভিয়েতনামের দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

ইউক্রেনের মাইকোলাইভ বন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইউক্রেনের মাইকোলাইভ বন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া
ছবিসূত্র : এএফপি

ইউক্রেনের মাইকোলাইভ বন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যে বন্দর দিয়ে দেশটি কৃষ্ণ সাগরে প্রবেশ করে। এ ছাড়াও ক্রিভি রিহ শহরেও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আজ বুধবার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরটিতে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

 

গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৃষ্ণ সাগরে এবং একে অপরের জ্বালানি লক্ষ্যবস্তুরতে আক্রমণ বন্ধ করার জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে পৃথক চুক্তিতে পৌঁছেছে, তবে চুক্তিগুলো কখন এবং কীভাবে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়।

মাইকোলাইভের মেয়র বলেছেন, বুধবার ভোরে শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। অঞ্চলটিতে সাতটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট কি সতর্কতামূলক ছিল নাকি মাইকোলাইভের ওপর রাতে আক্রমণের ফলে হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।

রাশিয়া কেন্দ্রীয় ইউক্রেনীয় শহর ক্রিভি রিহতেও আক্রমণ করেছে। সেখানে আগুন জ্বলছে এবং ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।  তবে কোনো প্রাণহানি হয়নি বলে শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান জানিয়েছেন।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট রাশিয়ার ছোড়া ১১৭টি ড্রোনের মধ্যে ৫৬টি গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেক্সান্ডার ভিলকুল টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে লিখেছেন, ‘স্পষ্টতই, দখলদাররা এভাবেই শান্তি চায়।’

তিনি এটিকে শহরের ওপর সবচেয়ে বড় ড্রোন আক্রমণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কোনও মৃত্যু বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।’

রয়টার্স মাইকোলাইভ এবং ক্রিভি রিহ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। ক্রিভি রিহ-এ হামলার আকার এবং সেখানে কী লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট ছিল না।

ভলোদিমির জেলেনস্কির জন্মস্থান এবং রাশিয়ান আক্রমণের ঘন ঘন লক্ষ্যবস্তুতে থাকা ক্রিভি রিহে কমপক্ষে ১৫টি বিস্ফোরণের কথা জানা গেছে। 

রাশিয়ার তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো রাতভর নয়টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে দুটি কৃষ্ণ সাগরের ওপরে ছিল।

সূত্র : রয়টার্স 


 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ