মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। ফাইল ছবি : এএফপি
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি দপ্তরের সদর দপ্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে, যেখানে দেখা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্কের পা চুষছেন। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক মুখপাত্র।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের গৃহায়ন ও নগর উন্নয়ন (এইচইউডি) বিভাগের স্ক্রিনে সোমবার এই ভিডিওটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য প্রদর্শিত হয়। ভিডিওতে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সমালোচনা করা হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির (ডিওজিই) দায়িত্বে রাখা হয়েছে, যেখানে তার কাজ হবে সরকারি কর্মীর সংখ্যা ও ব্যয় কমানো।
ভিডিওটির ওপর লেখা ছিল ‘লং লিভ দ্য রিয়েল কিং’। এটি ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফরমে দেওয়া এক বার্তার ইঙ্গিত, যেখানে তিনি নিউইয়র্ক সিটির যানজট নিয়ন্ত্রণমূলক মূল্য নির্ধারণ পরিকল্পনা বাতিলের সিদ্ধান্ত উদযাপন করেছিলেন।
এইচইউডির এক মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, এই কর্মকাণ্ডটি ‘করদাতাদের অর্থের অপব্যবহার’।
যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বরখাস্ত করার জন্য একটি তদন্ত শুরু করা হবে।
ভিডিওটি বারবার চলছিল এবং এটি সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনার দিনই ইলন মাস্ক ফেডারেল কর্মীদের ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের কাজের সাফল্য ব্যাখ্যা করার জন্য শেষ সময়সীমা বেঁধে দেন।
তবে মার্কিন ফেডারেল সরকারের বেশ কয়েকটি সংস্থা এই ই-মেইল আপাতত উপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়, যাদের অনেকগুলোই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নেতৃত্বে রয়েছে।
এতে কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
নিজের সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফরম এক্সে সোমবার মাস্ক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মীদের কাছে তাদের কাজের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করার ‘আরো একটি সুযোগ’ রয়েছে, অন্যথায় তাদের চাকরি হারাতে হবে।
এ ভিডিওর প্রতিক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাট হাউস কমিটি অন ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস এক পোস্টে মন্তব্য করে, ‘সব নায়কই কিন্তু ক্যাপ পরেন না।’
ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ডিনিপ্রোতে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন হামলায় চারজন নিহত এবং আরো ২১ জন আহত হয়েছেন। হামলার ফলে বহুতল ভবন, একটি হোটেল, সার্ভিস স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বাড়িঘরে আগুন ধরেছে।
অঞ্চলটির আঞ্চলিক প্রধান সের্হি লিসাক বলেন, ‘শুক্রবার গভীর রাতে হামলার পর একটি রেস্তোরাঁ কমপ্লেক্স এবং বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শত্রুরা শহরে ২০টিরও বেশি ড্রোন পাঠিয়েছে এবং এর বেশির ভাগই গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
’ উদ্ধারকারী দল একটি হোটেল এবং রেস্তোরাঁ কমপ্লেক্সে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
রাজধানী কিয়েভসহ আরো বেশ কয়েকটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলে বিমানের সাইরেন বাজতে শোনা গেছে। তবে সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পশ্চিম বেলগোরোড অঞ্চলে তিনটি ইউক্রেনীয় ড্রোনকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি আবারও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছেন। যদিও এর আগে রাশিয়া সম্মত হয়েছিল যে, ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামোতে আক্রমণ করবে না।
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, ইউক্রেনকে সাময়িকভাবে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত, যাতে তারা আরো যোগ্য সরকার নির্বাচন করতে পারেন। এটিকে কিয়েভ সরকারের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ক্রেমলিনের সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ জন্য ইউক্রেনের মিত্ররা ব্যাপকভাবে নিন্দা জানিয়েছে।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ব্যয়বহুল যুদ্ধের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রেমলিন এবং কিয়েভকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চাপ দেওয়ার পরেও রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ই তাদের বিমান হামলা জোরদার করেছে।
মধ্য-উত্তর নাইজেরিয়ার একটি গ্রামে সশস্ত্র ব্যক্তিরা ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। শুক্রবার স্থানীয় সূত্র এ খবর জানিয়েছে। এই অঞ্চলটিতে নিয়মিতভাবে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ঘটনা ঘটে।
প্লেটো রাজ্যে অবস্থিত রুউই গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রাজ্যটি দেশের বেশিরভাগ মুসলিম-অধ্যুষিত উত্তর অর্ধেক এবং খ্রিস্টান-অধ্যুষিত দক্ষিণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সীমান্তে অবস্থিত। এটি এমন একটি রাজ্য যেখানে যাযাবর পশুপালক এবং পশুপালক কৃষকদের মধ্যে নিয়মিত সহিংসতা দেখা যায়।
গ্রামের নেতা মোসেস জন এএফপিকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সম্প্রদায়ের ভেতরে এসে এলোপাতাড়িভাবে গুলি চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা করে। আরো তিনজন আহত হয়েছে এবং তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আমি আপনাকে ঠিক বলতে পারছি না কেন আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।’
জোশুয়া মারেন নামে একজন গ্রামবাসী কর্তৃপক্ষকে তাদের উদ্ধারে নিরাপত্তা কর্মীদের পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। প্লেটো রাজ্য কমান্ডের পুলিশ মুখপাত্র আলফ্রেড আলাবো শুক্রবার এক বিবৃতিতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে নিহতদের সংখ্যা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ কিছু অজ্ঞাত সশস্ত্র দুষ্কৃতীর বৃহস্পতিবার রুই গ্রামে আক্রমণের খবর পায় এবং সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা বিক্ষিপ্তভাবে গুলি চালাতে শুরু করে।
’ তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি শোক অনুষ্ঠানে উপস্থিত কিছু মানুষ দুর্ভাগ্যবশত প্রাণ হারান, অন্যরা বিভিন্ন মাত্রায় আহত হন।’
দেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে এ জঘন্য অপরাধের অপরাধীদের খুঁজে বের করার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্য কমিশনার জয়েস রামনাপ। ২০২৩ সালের ক্রিসমাসে সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টান গ্রামে রক্তাক্ত হামলায় প্রায় ২০০ জন নিহত হওয়ার পর থেকে রাজ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। গত বছরের মে মাসে ওয়াসে শহরে প্রায় ৪০ জন নিহত হয় এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
৫৮তম জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল অধিবেশনে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্ট (বিএনএম) এর পররাষ্ট্র সচিব ফাহিম বালুচ। তিনি মাহরাং বালুচ, সাম্মি দীন বালুচ, বেবো বালুচসহ আরো অনেক কর্মীর সাম্প্রতিক আটকের নিন্দা জানান।
এক্সে করা একটি পোস্টে ফাহিম বালুচ বলেন, বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্টের প্রতিনিধিদল বেলুচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো বিশেষ করে বেলুচিস্তানে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বর্তমান পর্যায়টি তুলে ধরতে জাতিসংঘে এসেছে। খবর দ্য প্রিন্টের।
ফাহিম বালুচ উল্লেখ করেন, সম্প্রতি কোয়েটা শহরে ১৩টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের পরিবারের সম্মতি ছাড়াই সেগুলো এনে স্থানীয় একটি কবরস্থানে তাড়াহুড়ো করে দাফন করা হয়েছে। পরদিন সেই কবরগুলো খোঁড়া অবস্থায় পাওয়া যায়, পশুরা সেগুলো নষ্ট করছিল। পরবর্তীতে নিহতদের পরিবার লাশগুলো যথাযথ শনাক্তকরণ এবং দাফনের দাবিতে বিক্ষোভ করে।
তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সেগুলো দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে মাহরাং বালুচ, বেবো বালুচ এবং সাম্মি দীন বালুচসহ বেশ কয়েকজন বালুচ মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
এসব ঘটনায় ফাহিম বালুচ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোকে এগিয়ে আসার এবং বেলুচিস্তানে চলমান নৃশংসতার বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তোলার জন্য অনুরোধ জানান।
বিশ্বশান্তির জন্য গ্রিনল্যান্ড দখল করা প্রয়োজন: ট্রাম্প
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : এএফপি
বিশ্বশান্তির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড দখল করা দরকার বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ডেনমার্কের আধা স্বায়ত্তশাসিত এ ভূখণ্ডকে নেজ দেশের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরো বাড়িয়ে তুললেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শান্তির কথা বলছি না। আমরা বিশ্বশান্তির কথা বলছি।
আমরা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার কথা বলছি।’
গতকাল শুক্রবার গ্রিনল্যান্ডের একটি আমেরিকান সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, তার স্ত্রী এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা। গ্রিনল্যান্ডবাসী এবং ডেনিশদের মধ্যে উত্তেজনার পর এই সফরের সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়। পরামর্শ না করেই মূল ভ্রমণ পরিকল্পনা করায় গ্রিনল্যান্ডবাসী এবং ডেনিশরা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
পৌঁছানোর পরপরই ভ্যান্স ঘাঁটিতে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে বসেছিলেন এবং বলেছেন, ‘আর্কটিক নিরাপত্তায় সত্যিই আগ্রহী আমরা এবং যদি আমেরিকা এই অঞ্চলে নেতৃত্ব না নেয় তবে, চীন বা রাশিয়ার মতো শক্তিগুলো তা করবে ‘
ভ্যান্স বলেন, ‘আমরা গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সমালোচনা করছি না। আমার মনে হয়, তারা অসাধারণ মানুষ এবং এখানে তাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের সমালোচনা আসলে ডেনমার্কের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে, যারা গ্রিনল্যান্ডে কম বিনিয়োগ করেছে ও সেখানকার নিরাপত্তায় কম নজর দিয়েছে। এটির অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
আর যুক্তরাষ্ট্রের নীতি হলো, এটি পরিবর্তন করা।’
আধা-স্বায়ত্তশাসিত ডেনিশ ভূখণ্ডে ভ্যান্স এমন এক সময়ে ভ্রমন করছেন, যখন ট্রাম্প বারবার বলে আসেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত কোনো না কোনোভাবে ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রিত খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করা। এরপর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নর্ডিক দেশটির মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে।