<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে, শিল্প, ব্যবসা, বিনিয়োগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব কিছুই যেন তার স্বাভাবিক গতি হারিয়ে ফেলছে। দেশের অর্থনীতি নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। ছোট-বড় সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। দেশে ডলার সংকট আছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে বেড়েছে সুদের হার। উচ্চ সুদের হারে বিনিয়োগ স্থবিরতা প্রকট হচ্ছে। সহিংসতা, শিল্পাঞ্চলে টানা অস্থিরতা, বিক্ষোভ, সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক পরিবেশ এখনো ফেরেনি, বরং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এবং সংস্কার, নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতায় নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ও উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অর্থনৈতিক মন্দায় ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষমতার পালাবদলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে; ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে আস্থাহীনতা। ডলার সংকট, দফায় দফায় করকাঠামোর পরিবর্তন, বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকট, উচ্চ সুদের হারসহ আরো নানা সমস্যা অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সংকট কোনোভাবেই কাটছে না। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ওপর। ব্যবসার পরিবেশটাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গেছে। এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিতে দেশে দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে ব্যবসার পরিধি। মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টায় দফায় দফায় নীতি সুদ হার বাড়ানোতে ব্যাংকঋণের সুদ অনেক বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা-বিনিয়োগ প্রসারের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা বিনিয়োগ তলানিতে নামতে সময় লাগবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে গেছে। পাশাপাশি ব্যবসা প্রসারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায় শ্লথগতির কারণে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের ক্রমেই বেশি করে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এর ফলে নতুন কাজেরও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। উল্টো অনেকের চাকরি হারানোর এবং চাকরির বাজার ক্রমে সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। উদ্যোক্তারা আশঙ্কা করছেন, দেশের অর্থনীতিতে নেমে আসা এই স্থবিরতা দীর্ঘায়িত হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দুর্বল অর্থনীতির সূচকে আটকে গেছে ব্যবসার গতি। সীমিত বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এবং আকাশচুম্বী সুদের চাপে পড়েছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অগ্রগতির ওপর নির্ভর করবে বিনিয়োগ। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের মতে, বিনিময় হার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যাংকব্যবস্থা, বন্দরের সক্ষমতা, অভ্যন্তরীণ বাজার ও বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি নাজুক থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে না। দেশের রাজনৈতিক, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিনিয়োগ অনুকূল পরিবেশ দেখেই আসবেন উদ্যোক্তারা। ব্যবসা পরিস্থিতির অবনতি ও বিনিয়োগ কমে এলে বেকারত্ব বাড়বে। বেকারত্ব না বাড়াতে চাইলে রাষ্ট্রকে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বিনিয়োগের দুরবস্থা থেকে এখন বের হওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে সামনে এগোতে হবে। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারলে মূল্যস্ফীতির সুফল আসবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিনিয়োগ ছাড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে না। আমাদের প্রত্যাশা, ব্যবসা সহজ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আস্থাহীনতার সংকট কেটে গেলে বিনিয়োগ আসবে।</span></span></span></span></p>