বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে হবে

  • বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন
শেয়ার
বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে হবে

দেশের শিল্প খাত, বিশেষ করে বেসরকারি শিল্প খাত ভালো নেই। প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। গত আগস্টে সরকার পতনের পর থেকেই দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো নয়।

ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদের হার, ডলার সংকট, এলসি জটিলতায় কাঁচামাল আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসবের পাশাপাশি গ্যাস ও জ্বালানি সংকটের কারণে কমছে উৎপাদন। অনেক কারখানায় ঠিকমতো বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে বাড়ছে শ্রমিক অসন্তোষ।
এই অবস্থায় বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিও কমছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। গত ডিসেম্বরে ঋণের প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৭.২৮ শতাংশে, যা এখন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম। তারল্য ব্যবস্থাপনায় ভয়াবহ সংকট, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, টাকার অবমূল্যায়ন, বিনিয়োগ মন্দাসহ নানা কারণে দেশের বেসরকারি বিনিয়োগে ভাটার টান শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণে প্রবৃদ্ধি ৭.২৮ শতাংশ হয়েছিল, দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭.৫৫ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে অর্জিত প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে নিচে রয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ৫০ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি ঋণ ছিল চার লাখ ১৫ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।

অন্যান্য সরকারি খাতের ঋণ ছিল ৫০ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই সময়ে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বেসরকারি খাতের ঋণ বেড়েছে মাত্র এক লাখ ১৪ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা বা ৭.২৮ শতাংশ। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের কারণে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ ছিল না। ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন অনেকেই বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমেছে। ফলে ঋণের চাহিদা কম।

আমরা মনে করি, বেসরকারি খাতের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি এই খাতে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জনসংখ্যা হোক জনসম্পদ

    বিদেশে কর্মসংস্থান
শেয়ার
জনসংখ্যা হোক জনসম্পদ

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। বরাবরই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার ছিল সৌদি আরব। এর পাশাপাশি ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান।

পাশাপাশি ছিল কুয়েত। কাছের দেশ মালয়েশিয়াও একসময় দেশের অভিবাসী কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, অতীতে বিভিন্ন সময়ে শ্রমবাজার নিয়ে সিন্ডিকেটসহ নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে বন্ধ হয়ে যায় ওমানের শ্রমবাজার।

এর সাত মাস পর একই অভিযোগে গত বছরের ৩১ মে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। অভিবাসনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশি কর্মীদের পছন্দের এই তিনটি শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৌদি শ্রমবাজারে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে যাওয়া এক লাখ ২০ হাজার ৮৭৬ জন কর্মীর মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে গেছেন ৭৬ হাজার ৬১৮ জন আর ফেব্রুয়ারি মাসে গেছেন ৪৪ হাজার ২৫৮ জন।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) মনে করে, মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত, ওমান বন্ধ ও কুয়েত, জর্দান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্যে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা কমা এবং সৌদির ওপর চাপ পড়লেও তার কোনো প্রভাব পড়েনি শ্রমবাজারে। কাতার, সিঙ্গাপুর, ইতালি ও জাপানে কর্মী যাওয়া বেড়েছে। একসময় ইউরোপের নানা দেশেও জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ ছিল। প্রচলিত বাজারের বাইরে আমাদের বাজার হচ্ছে ইউরোপ। ইউরোপের বাজারের বড় সমস্যা, যেসব দেশ বাংলাদেশি কর্মী নেয়এমন অনেক দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই।

জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বাস্তবতায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ। ফলে যেসব দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ আছে, সেসব দেশে জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। বর্তমান সময়ে দক্ষতার বিকল্প নেই, কিন্তু বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ। অনেক পেশায় আমাদের কর্মীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। তাই ভালো ও বেশি আয়ের পেশায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ কম। পর্যাপ্ত দক্ষতা নিশ্চিত করতে পারলে এসব পেশায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ করা সম্ভব হতো। আমাদের এখন শ্রমবাজারের চাহিদার পরিবর্তন ও দক্ষতার বিষয়ে নজর দিতে হবে। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্নদের কদর বাড়ছে। দক্ষ জনশক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিতে পারে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। দক্ষ জনশক্তির রপ্তানি বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্সও বাড়বে। জনশক্তিকে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে জনসংখ্যা জনসম্পদে পরিণত হবে।

মন্তব্য

বাজারে হস্তক্ষেপ বাড়াতে হবে

    চালের দাম বাড়ছেই
শেয়ার
বাজারে হস্তক্ষেপ বাড়াতে হবে

সাধারণত অঘ্রান মাসে আমন ধান তোলার সময় বাজারে চালের দাম অনেকটাই কমে আসে। এবার তা হয়নি। আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম না কমে বরং বেড়েছে। চালের দাম বাড়ার সে ধারা অব্যাহত আছে।

একটু একটু করে দাম ক্রমেই বাড়ছে। মোটা চালের দামও বাড়ছে, তবে বেশি বাড়ছে সরু চালের দাম। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। দেশি কাটারি (নাজির) চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত।
আর মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত।

চালের দাম বেড়ে গেলে তা নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষের জীবনে অনেক বড় প্রভাব ফেলে। দরিদ্র মানুষ ভাতের জোগান থাকলে লবণ-মরিচ দিয়েও দু-এক বেলা পার করে দিতে পারে। কিন্তু চালের আকাল হলে তাদের সামনে আর কোনো পথই খোলা থাকে না।

সে কারণে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য সব সরকারই চেষ্টা চালায়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। চাল আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে। ভারত ছাড়াও কয়েকটি দেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আমদানি করা চাল যথেষ্ট পরিমাণে বাজারে প্রবেশও করেছে।
তার পরও চালের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক মনে করছে না অনেকেই। অতীতে দেখা গেছে, কিছু মিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট চালের বাজারকে অস্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে নানাভাবে ভূমিকা রাখে। প্রশ্ন উঠেছে, বর্তমানে বাজারে হঠাত্ করে দাম বাড়ার পেছনে কি সেই সিন্ডিকেটের কোনো ভূমিকা রয়েছে? অবশ্য মিলারদের বক্তব্য, অন্যান্য চালের দাম অতটা বাড়েনি, যতটা বেড়েছে মিনিকেট চালের দাম। এর কারণ বাজারে এই ধানের অভাব রয়েছে। ফলে তাদের ধানই কিনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে। তাঁদের মতে, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে নতুন ধান উঠলে দাম কমে যাবে।

বাজারে সবজির দামে এখনো কিছুটা স্বস্তি আছে। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেল এখনো কম মিলছে। দামও বেশি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে আছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) পূর্বাভাস দিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় এ বছর বাংলাদেশে চালের উৎপাদন চার লাখ টন কমে যেতে পারে। এতে চাহিদার তুলনায় ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে এবং বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাবই পড়বে।

আমরা মনে করি, দেশে চালের উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর আরো জোর দিতে হবে। এর আগে বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানি আরো বাড়াতে হবে। সিন্ডিকেট ও মজুদদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। টিসিবির ট্রাক সেল ও ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) মতো অন্যান্য কর্মসূচি চালু করতে হবে। যেকোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিন

    গণপরিবহনে ডাকাতির আশঙ্কা
শেয়ার
নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিন

বছরে দুটি ঈদ বাঙালি মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসব। কাজের প্রয়োজনে যে যেখানেই থাকুক, এ সময় সুস্থ-সবল প্রায় সবাই নাড়ির টানে পরিবার বা স্বজনদের কাছে ফিরবেই। সামনে ঈদুল ফিতর। এখনো সপ্তাহ দুয়েক বাকি।

এরই মধ্যে ট্রেন, বাস ও লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রেলপথে অনলাইনে অগ্রিম টিকিট কেনার অ্যাপে প্রথম দিন সকাল ৮টার মধ্যেই ৭৩ লাখ বার টিকিট কেনার চেষ্টা হয়েছে। সোয়া ৮টার মধ্যে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টিকিট। টিকিট না পেয়ে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ঈদের আগে ট্রেন, বাসসহ অন্যান্য পরিবহনে কয়েক কোটি মানুষ চলাচল করবে। কিন্তু এবার নিরাপত্তা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন বাস মালিকরা। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে পরিবহন খাতের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে রাতে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির আশঙ্কা বেশি করছেন।

গবেষণা ও সচেতনতামূলক প্রতিষ্ঠান সেভ দ্য রোডের তথ্য মতে, গত আট মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে চার হাজার ৫০৫টি ছিনতাই এবং ২৫৫টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু সড়কপথে এক হাজার ৮৬৮টি ছিনতাই আর ১১৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে ১৬৮ জন। এ ছাড়া ফুটপাত বা চলার পথে দুই হাজার ৪৩২টি ছিনতাই ও ৩৫টি ডাকাতির ঘটনায় এক হাজার ১৭ জন আহত এবং একজন নারীসহ দুজন নিহত হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য মতে, গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে নিবন্ধিত যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪৭৪।

এর মধ্যে আন্ত জেলা বাস প্রায় ২২ হাজার। আর রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে প্রায় ১০ হাজার বাস। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সূত্র জানায়, ঈদ ঘিরে রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় একটি বাস দিনে অন্তত তিনটি করে ট্রিপ দেবে। প্রতি ট্রিপে গড়ে ৪০ জন যাত্রী থাকলে ১০ হাজার বাসে দিনে আট লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। এবার ডাকাত আতঙ্ক নিয়েই যাত্রীসেবা দিতে হবে। এ অবস্থায় সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। টহল বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সম্প্রতি হাইওয়ে পুলিশ স্পেশাল হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর (০১৩২০-১৮২২০০) চালু করেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে এই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাত্ক্ষণিক সাড়া পাওয়া যাবে।

আমরা চাই, এবারের ঈদ যাত্রা নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হোক। ডাকাতি-ছিনতাই থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

মন্তব্য

মহাসচিবের ইতিবাচক বার্তা

    সংলাপে সহায়তায় প্রস্তুত জাতিসংঘ
শেয়ার
মহাসচিবের ইতিবাচক বার্তা

রমজান সংহতি সফর শেষে বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন তিনি। শুক্রবার তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজার সফর করেন। সেখানে তাঁরা লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেন।

শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি। সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে জানানো হয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ এই বৈঠকে পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি জাতিসংঘ মহাসচিব জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারি ও দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং শান্তিরক্ষীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জাতিসংঘ ঢাকা অফিসের উদ্যোগে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর এক গোলটেবিল বৈঠক হয়। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংস্কারের বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
নেতাদের গুতেরেস বলেছেন, সংস্কার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফর শেষে গতকাল রবিবার সকালে ঢাকা ছেড়ে যান। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে গত শনিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে জাতিসংঘ শান্তি, জাতীয় সংলাপ, আস্থা ও নিরাময়কে উৎসাহিত ও সহায়তা করতে প্রস্তুত।

জাতিসংঘ মহাসচিব তাঁর বক্তব্যে উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর নিঃসন্দেহে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই জনগোষ্ঠীর বিপুলসংখ্যক মানুষের ভার বহন করতে গিয়ে বাংলাদেশ হিমশিম খাচ্ছে। গত শুক্রবার কক্সবাজারে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে। আর্থিক সহায়তা কাটছাঁটের ফলে ২০২৪ সালে মানবিক সহায়তার তুলনায় এ বছর মাত্র ৪০ শতাংশ সহায়তা পাওয়ার নাটকীয় ঝুঁকির মুখোমুখি আমরা। তিনি উল্লেখ করেন, এর ভয়াবহ পরিণতি হবে।

সামরিক অভিযানের মুখে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মায়ানমার সরকার শুধু টালবাহানা করছে। বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মায়ানমারের সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ এখন এক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে। আগামী দিনের উজ্জ্বল বাংলাদেশে জাতিসংঘ তার সহায়তা দিয়ে যাবে, জাতিসংঘ মহাসচিব সে বার্তাই দিয়ে গেলেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ