বেতন-বোনাস পরিশোধ করুন

  • উত্তপ্ত শিল্পাঞ্চল
শেয়ার
বেতন-বোনাস পরিশোধ করুন

নানামুখী সংকটে নিমজ্জিত দেশের শিল্প খাত। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ক্রমেই প্রবল হচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। রয়েছে ডলার সংকট।

কমছে ঋণপত্র খোলা এবং নিষ্পত্তির হার। কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েক শ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ধুঁকছে অনেক কারখানা।
অনেক কারখানা নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। ফলে বাড়ছে শ্রম অসন্তোষ। এরই মধ্যে চলে এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা সবাই বেতন-বোনাসের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, কিন্তু অনেক কারখানাই এখনো তা দিতে পারেনি।
ফলে বাড়ছে আরো অসন্তোষ।

গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঈদে বেতন-বোনাস, ছুটি ও বিভিন্ন দাবিতে শিল্পাঞ্চলগুলোতে রীতিমতো উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। বরং প্রতিদিনই আন্দোলন, বিক্ষোভ, কর্মবিরতিতে সোচ্চার আছেন কর্মীরা। সরকারের ত্রিপক্ষীয় কমিটির (মালিক-শ্রমিক এবং সরকারের) বৈঠকে সমন্বিত উদ্যোগের ফলে মজুরি ও বোনাস নিয়ে সংকট কিছুটা প্রশমন হলেও এখনো কয়েকটি কারখানা ঝুঁকিতে রয়েছে। এ নিয়ে গত শনিবার কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষও ছিল।

জানা যায়, শনিবার বকেয়া বেতনের দাবিতে চট্টগ্রাম নগরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জেএমএস গার্মেন্টস লিমিটেড নামের একটি পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিকরা। নগরের ফ্রিপোর্ট এলাকায় বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সমঝোতার পর দুপুর ১টার দিকে সড়ক থেকে অবরোধকারীরা সরে গেলে যান চলাচল শুরু হয়। কারখানাটি চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) অবস্থিত। ওদিকে গাজীপুর মহানগরীর বাসন এলাকার জায়ান্ট নিট ফ্যাশন কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় শনিবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। ফলে সকাল থেকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে দুই ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম কালের কণ্ঠকে বলেন, শনিবার ছিল তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ও মজুরি প্রদানের শেষ দিন। কিন্তু শনিবার বন্ধের দিন হওয়ায় কিছু সমস্যা হয়েছে। তাঁদের ধারণা, এরই মধ্যে ৬০ শতাংশ শ্রমিকের মজুরি হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মজুরি হয়েছে ৮০ শতাংশ আর মার্চের বেতন খুব একটা পাননি শ্রমিকরা। বিজিএমইএর সাবেক জ্যেষ্ঠ সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব কালের কণ্ঠকে বলেন, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০ রোজার মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও বোনাস ৮০ শতাংশের বেশি কারখানার মালিকরা পরিশোধ করেছেন। বাকিগুলো নিয়েও সংকটের আশঙ্কা করছেন না তিনি।

আমরা চাই না সারা বছর কাজ করার পর ঈদের আগে শ্রমিকরা বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসুন। এর আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন, এমনটাই প্রত্যাশিত।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

    মাটি মেশানো কয়লা খালাসের অপচেষ্টা
শেয়ার
তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

গরমের দিন এসে গেছে। তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। সরকার সেই চাহিদা পূরণ করবে কিভাবে, যদি প্রতিনিয়ত এমন ভয়ংকর জালিয়াতির ঘটনা ঘটতেই থাকে।

কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সম্প্রতি কক্সবাজারের মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে দুটি জাহাজে বিপুল পরিমাণ কয়লা আমদানি করা হয়েছে। দুটি জাহাজেই কয়লার সঙ্গে মাটি মেশানো রয়েছে। কয়লা আনলোড করার সময় কয়লার সঙ্গে মাটি মেশানো থাকার বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে আনলোডে নিয়োজিত শ্রমিকদের। পরে একটি জাহাজের কয়লা আনলোডিং বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জানা যায়, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়ে অপর জাহাজের সব কয়লা আনলোড করে ফেলেছে। এখন আটকে দেওয়া জাহাজের কয়লা আনলোডের ব্যাপারেও জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় উন্নতমানের কয়লা। এর স্থলে মাটি মেশানো কয়লা দেওয়া হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হবে।

দেশে বিদ্যুতের সংকট তৈরি হবে। মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। সরকারও বিপাকে পড়বে। তার পরও এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটে কী করে? জানা যায়, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বন্দরে অবস্থান করছেন। তাঁরা ওরিয়েন্ট অর্কিড নামের জাহাজে থাকা মাটি মেশানো আরো ৪০ হাজার ৬৫০ টন কয়লা তদবির করে আনলোড করার কৌশল আঁটছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
গত ১৭ মার্চ ৬৩ হাজার টন মাটি মেশানো কয়লার চালান নিয়ে বন্দরের জেটিতে ভেড়ে ওরিয়েন্ট অর্কিড জাহাজ। বাকি কয়লা আগেই আনলোড করা হয়ে গেছে।

মেঘনা গ্রুপের এ ধরনের কর্মকাণ্ড নতুন নয়। অতীতেও তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অনেক অভিযোগ রয়েছে। বলা হচ্ছে, গত ২০ বছরে গ্রুপটির কর্ণধার অন্তত এক লাখ কোটি টাকা পাচার করেছেন, যার মধ্যে অন্তত ৮০ হাজার কোটি টাকাই আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে। আর হাজার হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর ও ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তো রয়েছেই। টাকা পাচারের বিষয়টি উচ্চতর তদন্তের জন্য একটি অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। একটি গোয়েন্দা সংস্থা, দুদক ও এনবিআরের তৈরি নথিপত্র থেকেও এসব তথ্য জানা গেছে।

বিপুল ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জাতীয় সম্পদ। মাটি মেশানো ভেজাল কয়লা ব্যবহার করে এর ক্ষতি করা কোনোমতেই কাম্য নয়। কয়লা সরবরাহে জালিয়াতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। জনগণের অর্থে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির স্থায়িত্বের প্রয়োজনে ভেজাল কয়লার ব্যবহার বন্ধ রাখা জরুরি। আর এর নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

মন্তব্য

গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে

    ঈদ ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রাণসঞ্চার
শেয়ার
গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে

রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানা কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছিল। অনেক প্রতিষ্ঠান লোকসানের মুখে পড়েছিল। অনেকে ঠিকমতো কর্মচারীদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে পারেনি। প্রায় স্থবির অর্থনীতিতে অনেকটাই গতি এনে দিয়েছে ঈদের কেনাকাটা।

গতকাল কালের কণ্ঠে ঈদ উৎসব ঘিরে রাজধানীর বাজার ও শপিং কমপ্লেক্সগুলোতে চলমান কেনাকাটার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জানা যায়, রোজার দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতার উপস্থিতি বেড়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবারের ঈদে ক্রেতাসমাগম বাড়লেও বিক্রি এখনো গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম।

ঈদ যত নিকটবর্তী হচ্ছে, মার্কেটগুলোতে মানুষের ভিড় তত বাড়ছে।

কাপড়, জুতা, কসমেটিকস কিংবা গয়নার দোকানসবখানেই দেখা গেছে ক্রেতার চাপ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের বাজারে মূলত বিক্রি হয় নতুন পোশাক। পাশাপাশি জুতা, অর্নামেন্টস, প্রসাধনী, ঘর সাজানোর জিনিস এবং কিছু আসবাবও বিক্রি হয়। ঈদকেন্দ্রিক ক্রেতারা যে অর্থ ব্যয় করে, তার ৮০ শতাংশই যায় পোশাকের জন্য।
বাকি ২০ শতাংশ অর্থ অন্য পণ্যে ব্যয় হয়। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এক লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যবসা হয়েছিল। এর আগের বছর হয়েছিল এক লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। এবার তাদের অনুমান, ঈদকেন্দ্রিক বাণিজ্য দুই লাখ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
কারণ শেষ দিকে কেনাকাটায় বেশ গতি এসেছে।

বর্তমানে দোকান, শপিং মল ছাড়াও ঈদের কেনাকাটা হচ্ছে ই-কমার্সে। সেখানেও গতি এখন পর্যন্ত অনেকটাই কম বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, সাধারণ মানুষের হাতে টাকা কম। খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পোশাকে খরচ কমে গেছে। অনেকের চাকরি চলে যাওয়ায় তাঁদের পরিবার সংকটে আছে। এর প্রভাব পড়ছে ঈদের কোনাকাটায়। অনলাইনে এবার বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে কম।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, ধানমণ্ডি এলাকাসহ বেশ কয়েকটি শপিং মল ঘুরে দেখা গেছে, ব্র্যান্ডের দোকানে ক্রেতার ভিড় বেশি ছিল। সাধারণত অভিজাত শপিং মল ও ব্র্যান্ডের দোকানগুলো থেকে পণ্য কেনে  বিত্তশালীরা। বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে ছিল ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। ইয়োলো, জেন্টেল পার্ক, আড়ংসহ ব্র্যান্ডের দোকানগুলোর প্রতিটির কাউন্টারে বিল দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ফুটপাত বা ছোটখাটো মার্কেটগুলোতেও ক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে। অনেকে ক্রেতা টানতে মূল্যছাড় দিচ্ছে। কোথাও কোথাও তা দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত।

আমরা আশা করি, ঈদ ঘিরে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে যে গতি এসেছে, তা স্থায়ী হবে। ঈদের ছুটিতে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও গতি আসবে। এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নসহ সরকারকে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে।

 

মন্তব্য

বেতন-বোনাস পরিশোধ করুন

    ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
শেয়ার
বেতন-বোনাস পরিশোধ করুন

অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। এর মধ্যেও বেশির ভাগ কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু কারখানা এখনো বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে।

তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। ঈদে ঘরমুখো হাজার হাজার যাত্রীর ভোগান্তি চরমে উঠছে। বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের লিংক রোডের সামনে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৪০ জন শ্রমিক এবং ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

প্রতিবছরই ঈদের আগে আগে কমবেশি এ ধরনের দৃশ্য আমাদের দেখতে হয়। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, এবারও ১০ শতাংশ কারখানায় এ ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানা যায়, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় ১২টি কারখানার মালিকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ২৭ মার্চের মধ্যে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাঁরা বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস না দিয়ে একটি কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সকালে কারখানায় তালা দেখে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে ওই মহাসড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয় এবং যাত্রীরা বিপাকে পড়ে। সাভারে ঈদের ছুটি বৃদ্ধি, বন্ধ কারখানা খুলে দিয়ে শ্রমিকদের ওভারটাইম পরিশোধ এবং দাবি আদায়ে আন্দোলনের ঘটনায় আটক ছয় শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় জিন্স ম্যানুফ্যাকচারিং কম্পানি লিমিটেড কারখানার দুই হাজার শ্রমিক। আরো অনেক স্থান থেকেই এ ধরনের অসন্তোষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

অতীতে এমনও ঘটেছে, বেতন-বোনাস না পেয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঈদের দিন সড়কের ওপর ঈদের নামাজ পড়ে সেখানেই অবস্থান করেছেন। এমন দুঃখজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব কারখানায় নির্ধারিত সময়ে বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে না, সেসব কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেই হবে।

 

মন্তব্য

চীনে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে

    প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে আশাবাদ
শেয়ার
চীনে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে

চীন এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ অর্থনৈতিক পরাশক্তি। প্রযুক্তি, সহজলভ্য পণ্য ও সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার অদম্য এক শক্তি নিয়ে সারা বিশ্বে বাণিজ্যের এক অপ্রতিরোধ্য পসরা সাজিয়ে বসেছে দেশটি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সবটুকু সুফল তারা ঘরে তুলতে মরিয়া।

চীন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বাণিজ্যিক সহযোগী।

তবে তা অসম। আমরা বিপুল পণ্য আমদানি করি দেশটি থেকে, কিন্তু রপ্তানি করি খুবই সামান্য। এই অসম বাণিজ্যিক সম্পর্ক কিভাবে আমাদের অনুকূলে আনা যায়, তা নিয়ে অনেক বছর ধরেই বিভিন্ন স্তরে কথা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন দেশটিতে সফর করছেন।
এটি একটি বড় সুযোগ বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও চীনের প্রেসিডেন্ট দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। ড. ইউনূসের বিশ্বজোড়া যে খ্যাতি ও ইতিবাচক ইমেজ, সেটি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়িয়ে কিছুটা হলেও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে লাভজনক করা যায়।

চীন-বাংলাদেশের অসম বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে কালের কণ্ঠ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ১৪১ কোটি মানুষের এই দেশে বাংলাদেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশকে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার পরও চীনে রপ্তানি বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ। উল্টো বেড়েই চলেছে বাণিজ্য ঘাটতি। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফরে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশে চীনের প্রায় ৩০০ প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ রয়েছে।
এটি ১০ গুণ বাড়ানো যেতে পারে।

অর্থনীতিবিদরা আরো বলছেন, চীনের আমদানি বাজেটের ১ শতাংশও যদি বাংলাদেশ থেকে যায়, তাহলেও বাংলাদেশ বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করতে পারবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে প্রয়োজন রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি। তা ছাড়া চীনা বিনিয়োগ বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীন। ২০২২ সালে এসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যকে দেওয়া হয় এই সুবিধা। ২০২৩ সালে যুক্ত হয় আরো ৩৮৩টি পণ্য। ২০২৩ সালের আগস্টে নতুন করে ১ শতাংশ আর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শতভাগ পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীনা সরকার।

শতভাগ শুল্কছাড় পেয়েও বাংলাদেশ চীনে রপ্তানি বাড়াতে পারছে না কেনএর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। ড. ইউনূসের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে চীনের সঙ্গে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। চীনের বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি হারে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে, যাতে তাঁদের বিনিয়োগ করা কারখানায় উৎপাদিত পণ্য চীনে সহজে রপ্তানি করা যায়। পাশাপাশি দেশেও বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ড. ইউনূসের এই সফরের মাধ্যমে এ সুফল যেন নেওয়া যায় নীতিনির্ধারকদের সে বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ