<p>দেশের বন্যাদুর্গত জেলাগুলোতে পানি কমতে থাকলেও মানুষের দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না। কোনো কোনো জেলায় নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেও ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে পানি কমেনি। অনেকেই বিধ্বস্ত বাড়িঘরে ফিরতে না পেরে এখনো বাঁধের ওপর বা উঁচু স্থানে ঝুপড়ি ঘর তুলে বাস করছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : </p> <p>কুমিল্লা : টানা আট দিন কুমিল্লাকে ভাসিয়ে অবশেষে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। গতকাল বুধবার বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বর্তমানে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতীর পানি। মঙ্গলবার বিকেলে যা ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।</p> <p>জেলার দক্ষিণের কয়েকটি উপজেলায় সামান্য পরিমাণে কমেছে বানের পানি। তবে মানুষের দুর্ভোগ ও ত্রাণের জন্য হাহাকার বেড়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শিশু খাদ্যের চরম সংকট।</p> <p>গত ২২ আগস্ট রাতে বুড়িচংয়ের ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় ভেঙে যাওয়া গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের স্থান দিয়ে এখনো লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।</p> <p>কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) : এবারের আকস্মিক বন্যায় উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে টিলাগাঁও ইউনিয়নের মিয়ারপাড়া, হাজীপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা। এই ইউনিয়নের প্রায় তিন শত পরিবারের বসতঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি কমে গেলেও তারা এখনো ঘরে উঠতে পারেনি।</p> <p>অনেকেই মনু নদীর পারে উঁচু জায়গায় অস্থায়ী ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে রয়েছে। এই দরিদ্র পরিবারগুলো ঘর মেরামতের জন্য সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পাওয়ার আশায় আছে।</p> <p>এলাকাবাসী জানায়, রোপা আমন ধান ও সবজিক্ষেত চাষ করলেও বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। কৃষক, মৎস্যজীবী, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষরা এখন ত্রাণ নয়, পুনর্বাসন চায়।</p> <p>লালমাই (কুমিল্লা) : উপজেলার পাঁচ সহস্রাধিক মানুষ বন্যায় পানিবন্দি। নিজেদের বাড়িঘরে পানি ওঠায় তাদের অনেকে উঁচু এলাকায় অবস্থিত আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে উঠেছে। বেশির ভাগ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষিত মডেল মসজিদসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।</p> <p>লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, বন্যার শুরুতেই উপজেলার ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিন সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয় নেয়। পানি কমতে থাকায় কিছু মানুষ বাড়ি ফিরেছে।</p> <p> </p>