কীটনাশকের স্বাস্থ্যঝুঁকি

শেয়ার
কীটনাশকের স্বাস্থ্যঝুঁকি

কৃষকদের একটিই লক্ষ্য, কিভাবে অধিক পরিমাণে ফসল উৎপাদন করা যায়। এর জন্য বর্তমানে তাঁরা তাঁদের কৃষি ফসল নিরাপদ করা ও অধিক উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে শাক-সবজি বা ফসল রোগ ও পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য যথেচ্ছভাবে অতিরিক্ত পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করে যাচ্ছেন। কীটনাশক বা বালাইনাশক হলো বিষাক্ত পদার্থ, যা মানুষ, পশুপাখি, কৃষি, পরিবেশ, বাতাস, পানি, মাটি, আবহাওয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। প্রতিবছর দেশে ৩০ হাজার টনেরও বেশি কীটনাশক আমদানি করা হয়।

ডিডিটি ও ক্লোরিন গ্রুপের কীটনাশক দেশে নিষিদ্ধ হলেও চোরাই পথে এসব আসে অবাধে এবং ব্যবহার করা হয় বিপদের কথা না জেনে। কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারে ফসলের সঙ্গে সম্পর্কিত উপকারী পোকামাকড় ও মাটির ছত্রাক-ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যা প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র ও জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে প্রাকৃতিক পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ ও পরাগায়ণের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষিবিদদের মতে, রাসায়নিক বালাইনাশকের পরিবর্তে জৈব বালাইনাশক ও আইপিএম পদ্ধতির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বালাই দমন করা সর্বোত্তম।
এতে অর্থের সাশ্রয় হবে, ফসলের উৎপাদন খরচ কমবে এবং মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষিত হবে।

ওসমান গণি

চান্দিনা প্রেস ক্লাব

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য দূর করুন

শেয়ার
স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য দূর করুন

চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার, কিন্তু আমাদের দেশে দেখা যায় তার ভিন্ন চিত্র। খ্যাতিমান প্রভাবশালী ব্যক্তি সহজেই উন্নত চিকিৎসা পেয়ে যান, অথচ সাধারণ মানুষকে সেই একই সেবা পাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা এবং হয়রানির শিকার হতে হয়। সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসাসেবায় যে দীর্ঘসূত্রতা অব্যবস্থাপনা লক্ষ করা যায়, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের সংকট, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের উদাসীনতার কারণে সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ধরনের বৈষম্য কাম্য নয়।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সমান দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের সরবরাহ এবং জরুরি সেবা ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি। ভিআইপি সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হোক।

নুসরাত জাহান অর্পিতা

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

মন্তব্য

বই পড়ার বিকল্প নেই

শেয়ার
বই পড়ার বিকল্প নেই

একসময় ছিল, যখন বিকেল নামলেই দেখা যেত কারো বারান্দায়, কারো ছাদে কিংবা নিরিবিলি কোনো পার্কের বেঞ্চে বইয়ের ভাঁজে মুখ গুঁজে বসে আছে মানুষ। তাদের কাছে বই ছিল এক উন্মুক্ত জানালার মতো, যা খুললেই দেখা যেত এক ভিন্ন জগৎ।

সময় বদলেছে। বদলে গেছে বিনোদনের ধরন, যোগাযোগের মাধ্যম এবং দৃষ্টিভঙ্গি।

এখন সবাই স্মার্টফোনে। সময় ছুটে চলে রিলস, মিম আর স্ক্রলিংয়ের বৃত্তে। বইয়ের গন্ধে যে অপার্থিব আকর্ষণ ছিল, তা যেন মুছে গেছে ডিজিটাল পিক্সেলের রঙিন ভুবনে।

বই পড়ার অভ্যাস একসময় ছিল পারিবারিক ও সামাজিক চর্চা।

পাঠাগার ছিল মিলনমেলা, পাঠচক্র ছিল আত্মিক বন্ধনের জায়গা। এই সময়ের অনেক তরুণই হয়তো জানে না যে প্রমথ চৌধুরী কে ছিলেন কিংবা আহমদ ছফার অলাতচক্র কোন প্রেক্ষাপটে লেখা। বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক এখন অনেকটাই পরীক্ষাকেন্দ্রিক বা চাকরির প্রস্তুতির নিগড়ে বন্দি। বই না পড়লে আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা, কল্পনার বিস্তার ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো সম্ভব নয়।
বই পাঠককে গভীরভাবে ভাবতে শেখায়। সমাজের পরিবর্তনের ধারায় আমরা যখন দিশাহারা, তখন বই-ই পারে আমাদের ফের শান্তির পথ দেখাতে। একটি ভালো বই সময়কে অর্থবহ করে তোলে। যদি আমরা সত্যি নিজেদের মানুষ হিসেবে গড়তে চাই, তবে বইয়ের কাছে ফেরা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

মো. শাকিল আহমেদ

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য

শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

শেয়ার
শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

ক্লাস, কোচিং ও প্রাইভেট পড়ার চক্রে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব-কৈশোরের আনন্দ। মা-বাবারা চান সন্তান হোক ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। শিক্ষক চান সর্বোচ্চ ফলাফল। এমন প্রতিযোগিতার রোলার কোস্টারে বিপর্যস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দেশীয় বিভিন্ন গবেষণা বলছে, এই মানসিক চাপ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি এক নীরব মহামারি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৫৫.৯% বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছে। নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই হার ৬২.৮%।

কভিড-১৯-র পর এই সংকট আরো গভীর হয়েছে। পড়াশোনার চাপ, পরিবারের উচ্চ প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আর সোশ্যাল মিডিয়ার কৃত্রিম ঝলকানি। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বইছে অদৃশ্য ভার।

পড়াশোনার ধাপগুলোতে কোথাও একটু পিছিয়ে পড়লেই মনে হয় সব শেষ।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেন একটি দীর্ঘ প্রতিযোগিতার ময়দান। টেস্ট, বোর্ড, ভর্তি, চাকরি প্রতিটি ধাপে প্রথম হতে হবে এই চাপ কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অনেকে ভালো ফল করেও নিজেদের অসফল ভাবেন। কারণ তাঁরা কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠান বা পেশায় পৌঁছাতে পারেননি।
ডব্লিউএইচওর তথ্য বলছে, ১৫-২৪ বছর বয়সী তরুণদের আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ হলো এই একাডেমিক চাপ। এসব থেকে উত্তরণের পথ খোঁজা উচিত রাষ্ট্র তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর।

পুনম পাল

বিএসসি ইন এডুকেশনাল টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (দ্বিতীয় বর্ষ)

বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (বিডিইউ)

মন্তব্য

কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে

শেয়ার
কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে

কৃষিপ্রধান দেশ বাংলাদেশ। আর কৃষকরা হলেন অমূল্য রত্ন। তাঁরা আমাদের খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করেন। তবে আফসোস থেকে যায়, যুগে যুগে অবহেলিত থেকেছেন তাঁরা।

আধুনিক অর্থনীতি ও প্রযুক্তির উন্নতির পরও তাঁরা দরিদ্রতা, ঋণের বোঝা, ন্যায্যমূল্যের অভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও নীতিনির্ধারকদের অবহেলার শিকার হচ্ছেন। কৃষি খাতে বিনিয়োগ কম থাকায় তাঁরা উন্নত প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ পান না। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন, অথচ উৎপাদন ব্যয় ক্রমেই বাড়ছে। সহজ শর্তে ঋণ না পেয়ে তাঁরা উচ্চ সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন এবং দারিদ্র্যের চক্রে আটকে পড়েন।
এই সমস্যার সমাধানে সরকার ও সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানো, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষিকে সম্মানজনক পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা এবং তরুণদের কৃষিতে আগ্রহী করে তুলতে কৃষিশিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষকদের উন্নয়ন ছাড়া সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তাই কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’—এই সত্য উপলব্ধি করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

সফিউল ইসলাম

শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ, ফেনী

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ