<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চন্দিকা হাতুরাসিংহে তখন প্রথমবার প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। টিম ডিনারে সাকিব আল হাসানের খাওয়ার কৌশল দেখে বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চপস্টিকের এত সুন্দর ব্যবহার শিখেছ কোথা থেকে?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> উত্তরে সাকিব বলেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৫ দলে খেলি, তখন আমার কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম স্যার আমাকে শেখান।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সাকিব সৌভাগ্যবান, ক্রিকেটার তৈরির </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারখানা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বিকেএসপিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন, নাজমুল আবেদীনের মতো একজন কোচ পেয়েছেন। আরেকটি কারণেও সাকিবকে ভাগ্যবান বলা যায়। পেস বোলিং যে করতে হয় না তাঁকে! </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাত্র ১৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক সাকিবের, খুব বড়সড় চোট ছাড়াই এই পথচলায় দুই দশক কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। সাকিব স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার না হয়ে পেসার হলে কি এত দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখনো খেলা চালিয়ে যেতে পারতেন? বাংলাদেশের কজন পেসার তা পেরেছেন? কেউই পারেননি, শৈশব থেকে চোটের সঙ্গে লড়াই করা মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্যারিয়ারও বারবার থেমেছে চোটের স্টেশনে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী পেস বোলিং অলরাউন্ডার অভিষেক দাসের কথা মনে আছে? ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রফি জিতে দেশে ফেরার পরের মাসে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নেমে চোটে পড়েন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। এর পর থেকে লড়ে যাচ্ছেন তিনি চোটের সঙ্গে। এখনো ফিরতে পারেননি অভিষেক। হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, তানজিম হাসানরা ভুগেছেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের গণ্ডি পেরিয়েই। একইভাবে এখন ভুগতে হচ্ছে রোহনত দৌলা বর্ষণ, আশিকুর জামানকে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাইফউদ্দিন, হাসান, অভিষেকের মতো রোহনতের সমস্যাও পিঠের নিচের দিকে। আশিকুর ভুগছেন পুরনো কুঁচকির চোটে। এইচপি দলের সঙ্গে থাকলেও চোটের কারণে আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফরে নেই রোহনত ও আশিক। অথচ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় পেস বিভাগের অন্যতম সদস্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এই দুজনকে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন বয়সের গণ্ডি টপকালেই চোট ভোগাচ্ছে ক্রিকেটারদের? বিকেএসপির সিনিয়র ক্রিকেট কোচ এস এম আসাদুল হক মনে করেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্পোর্টস নিউট্রিশনে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র অভাবে ভোগেন এই বয়সী পেসাররা, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটা ছেলে বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার পর তিন বছর চলে যায় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে। এর পরও সবার পুরোটা পূরণ হয় না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই কারণে বিকেএসপি থেকে প্রচুর ব্যাটার আর স্পিনার উঠে এলেও এখন জাতীয় পর্যায়ে খুব বেশি পেসারকে দেখা যাচ্ছে না বলে স্বীকার করে নেন আসাদুল, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন তো তবু ওয়ার্কলোডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু আগে এসবও ছিল না। আমি স্বীকার করছি, অজ্ঞতার কারণে আমরাও অনেক ছেলের ক্ষতি করেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিকেএসপির মতো নামি প্রতিষ্ঠানের এই ছবি বলে দেয় তৃণমূলে পেস বোলারদের লড়াই কতটা কঠিন। সদ্য বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের পাট চুকিয়া আসা এক ক্রিকেটারের কথায় সেই ছবি আরো পরিষ্কার, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় কোচরা জানেন যে হাত ঘুরিয়ে বল ছোড়াকে বোলিং বলে। আমরা এভাবেই শিখে এসেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে বিসিবির ট্রেনার তুষার কান্তি অন্য একটি সমস্যা সামনে আনলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের পর কোনো টুর্নামেন্ট বা এইচপির কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার মাঝে চার থেকে পাঁচ মাসের একটা গ্যাপ থাকে। এই সময়ে কেউ কোনো কোচ বা ট্রেনারের অধীনে থাকে না। নিজের মতো অনুশীলন করে, বোলিং বৈচিত্র্য বাড়াতে গিয়ে বেশি লোড নিয়ে ফেলে। এ জন্য বেশি ভুগতে হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেসারদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফর্মুলা আছে ৭-৪-২ মানে, এক সপ্তাহে চার দিনের বেশি বল করা যাবে না এবং সেটা টানা দুই দিনের বেশি কোনোভাবেই নয়। বিসিবির ছায়াতলে জায়গা করতে পারলে এই নিয়মের অংশ হয়ে যান পেসাররা। ম্যাচ, ভ্রমণের  চাপও বাড়ে। চোট চোখ রাঙায়। ছুটিতে গিয়ে মজাচ্ছলে এটা-ওটা করতে গিয়েও চোটে পড়েন কেউ কেউ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ জন্য কোচ, ট্রেনার, ফিজিওদের সঙ্গে নিজেদের সচেতনতাও প্রয়োজন। মাশরাফি তবু মনের জোরে দেড় যুগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে গেছেন, বাকিরা অতটা পথ পাড়ি দিতে পারবেন তো? </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>
