<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান বলেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ছিনতাইকারীর মতো হিংস্র, সশস্ত্র ডাকাতের মতো ভয়ংকর এবং খুনির মতোই প্রাণঘাতী।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> অর্থনীতির ভাষায় মুদ্রাস্ফীতিকে গরিবের নিষ্ঠুরতম কর বলা হয়, যা ধনী-গরিব-নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়। চলতি বছরের নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১১.৩৮ শতাংশ হওয়ার মানে হলো, যে পরিবারের মাসিক খরচ ছিল ৫০ হাজার টাকা, সরকারি হিসাবে ওই পরিবারের খরচ এক বছরের ব্যবধানে গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার বেশি বেড়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতিসংঘসহ বাংলাদেশে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোর যৌথভাবে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বর্তমানে দুই কোটি ৩৬ লাখ মানুষ উচ্চমাত্রায় খাদ্যসংকটে ভুগছে। তিন কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার মানুষ খাদ্যহীনতার চাপে আছে। শুধু তিন কোটি ৩৯ লাখ মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে। সেই সমীক্ষায় আরো উঠে আসে যে ১৬ লাখ ৪৭ হাজার মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা দরকার। তদ্রূপ মাংস উৎপাদন ও ভোগ গত তিন মাসে অর্ধেকে কমে এসেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছর জুলাই মাসে দেশে মাংস উৎপাদন ছিল ১২ লাখ ২৫ হাজার টন। কিন্তু আগস্ট-পরবর্তী মাসগুলোতে তা নেমে এসেছে ছয় লাখ ৪১ হাজার টনে, যে ধারা অব্যাহত। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাদ্যনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে খাদ্যপণ্যের দাম ও কৃষি উপকরণের বিষয়টিকে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এখন পর্যন্ত চাসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর বাস্তবসম্মত তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের বড় অংশই কৃষিজীবী। তাদের মধ্যে আবার এক-চতুর্থাংশ কৃষিমজুর। বিভিন্ন দুর্যোগ ও তাপপ্রবাহের কারণে তারা ঠিকমতো কাজ পায়নি। কাজ পেলেও মজুরি পেয়েছে কম। এই জনগোষ্ঠীর বড় অংশ কৃষিমজুরি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের দৈনিক আয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ খাদ্যের পেছনে ব্যয় হয়। ফলে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের খাদ্যগ্রহণ কমে চরম দুর্ভোগে রূপ নিতে থাকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিবিএসের হিসাবে একজন মানুষের দৈনিক ন্যূনতম দুই হাজার ১০০ কিলোক্যালরি গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার সেট বা ফুড বাস্কেট গঠন করা হয় মৌলিক ১১টি খাদ্যের পরিমিত হিসাব বিবেচনায় নিয়ে। এই ১১টি খাদ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, গম, দুধ, মাছ, মাংস, আলু, ভোজ্য তেল, অন্যান্য সবজি, চিনি ও ফল। এসব খাবার খেতে হলে একজন মানুষকে কমপক্ষে এক হাজার ৮০০ টাকা খরচ করতে হবে। এর কম ব্যয়ে একজন মানুষের পক্ষে প্রয়োজনীয় পুষ্টির সংস্থান করা অসম্ভব। সরকারি ভাষায় এটিকে ফুড পোভার্টি লাইন বা খাদ্য দারিদ্র্যসীমা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডব্লিউএফপির পরিসংখ্যান বলছে, উল্লেখিত নির্ধারিত ফুড বাস্কেটের উপাদান ক্রয়ে মাথাপিছু ব্যয় হচ্ছে তিন হাজার ৫১ টাকা। সেই হিসাবে একজন মানুষের ব্যয় হচ্ছে খাদ্যতালিকার দারিদ্র্যসীমার চেয়ে ৬৯.৫ শতাংশ বেশি। এর প্রধান কারণ খাদ্যপণ্য মূল্যের লাগামহীন মূল্যস্ফীতি। গত দুই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ১০-১১ শতাংশে ওঠানামা করছে। এই মূল্যস্ফীতি কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু উদ্যোগ নিলেও কিছু ভুল নীতির কারণে ভোক্তা পর্যায়ে তার বিন্দুমাত্র সুফল এসে পৌঁছাতে পারছে না। বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি রোধ না করে ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি কমানোর ফর্মুলা ভুল তথা অর্থহীন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ দেশের মানুষের খাদ্যঘাটতি স্থায়ীভাবে মেটাতে এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদনে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি আরোপ করে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন বাড়ানো এবং আবাদযোগ্য অনাবাদি কৃষিজমি (প্রায় চার লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর) জমি চাষের আওতায় আনা। সে লক্ষ্যে খরপোশ (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">subsistence)</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কৃষিকে বৈজ্ঞানিক ও বাণিজ্যিকভাবে রূপান্তর করে খাদ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতি খুব সহজেই রোধ করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে প্রধান যে কয়টি পণ্য আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য হিসেবে বিবেচিত, তার মধ্যে চালের পরেই আটা, তেল, ডাল, আলু ও পেঁয়াজের নাম উল্লেখযোগ্য। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার উৎপাদনবিষয়ক পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের স্থান সপ্তমে। ওপরে আছে চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউক্রেন ও জার্মানির নাম। আন্তর্জাতিক কৃষিবিদরা খাদ্যপণ্য উৎপাদনে মাটির দিক থেকে বাংলাদেশকে সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বিবেচনা করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেবল বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় গবেষণা আর সঠিক প্রয়োগের অভাবে এই দেশটি খাদ্যপণ্য উৎপাদনে স্থবির হয়ে আছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রপ্তানির দেশ আমদানিকারকে পরিণত হওয়া খুব দুঃখজনক। এ পরিস্থিতিতে রপ্তানি তো দূরের কথা, আমদানি করেও বাজার সামাল দিতে পারছে না সরকার। আসলে এখন কিছু পণ্য উদ্বৃত্ত নেই। সে সুযোগে আবার ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সুবিধা নিচ্ছেন। অথচ উপযুক্ত মেধা, জনবল আর উর্বর জমি থাকার পরও আমরা খাদ্যপণ্য উৎপাদনে ক্রমাগত পিছু হটে চলছি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিগত আওয়ামী শাসনামলে কৃষি সেক্টরে সীমাহীন দুর্নীতির ফলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি লাগামহীন পন্থায় যেভাবে ছুটে চলেছিল, তার গতি এখনো রোধ করা যায়নি। দেশে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে যে বিগত আওয়ামী সরকার রাজনৈতিক সুবিধা পেতে আগে মূল্যস্ফীতি কম দেখাত। অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্র প্রতিবেদন অনুসারে, গত এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১৫ থেকে ১৮ শতাংশের মধ্যে ছিল। সরকারি হিসাবেই গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ শতাংশ। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৮ লাখ সাত হাজার টন গম আমদানি করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, সদ্যোবিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলু আমদানি হয়েছে ৯৭ হাজার ২১৯ টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক লাখ ৬০০ টন রসুন এসেছে দেশে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ৩৯ লাখ টন ভোজ্য তেল আমদানিতে ব্যয় হয় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছর বিদেশ থেকে বিভিন্ন পদের প্রায় ১৩-১৪ লাখ টন ডাল আমদানি করে সরকার। এতে ব্যয় হয় প্রায় ছয়-সাত হাজার কোটি টাকা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিটিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিসর, চীন ও মায়ানমার থেকে সাড়ে ৯ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে চিনির চাহিদা ২০ লাখ টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি করা হয়েছিল ১৫ লাখ ২৫ হাজার টন। ঠিক এ কারণে সময় এসেছে এ দেশের কৃষি খাতকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন করে ভাবার। নিজেদের বুদ্ধি, মেধা, কারিগরি দক্ষতা আর সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে খাদ্যপণ্য উৎপাদনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর এখনই সময়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা যদি আমাদের সেই নিত্যপ্রয়োজনীয় তেল, ডাল, পেঁয়াজ, আলু এই চারটি পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে আলাদাভাবে পর্যালোচনা করি, তাহলে আমাদের সামনে উঠে আসে একটি সহজ চিত্র। এ দেশের উৎপাদিত উল্লেখিত খাদ্যপণ্যগুলো বর্তমানে কৃষকরা তাদের জমিতে উৎপাদন করে চলেছেন খানিকটা শৌখিন ফুলবাগান করার মতো করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই খরপোশি মনোভাব (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">subsistence mind</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) থেকে কৃষকদের বের করে এনে বৃহৎ আকারে বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় ভোজ্য তেল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। সে লক্ষ্যে কোন পণ্যটি কোন জেলায় উৎপাদনে বাম্পার ফলন হবে, সেটি নির্বাচন করে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে কর্মপরিকল্পনা স্থির করতে হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুক্তবাজার অর্থনীতির সঙ্গে খাদ্যপণ্য উৎপাদনে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করে বহির্বিশ্বে রপ্তানির বাজার ধরতে হলে এই মুহূর্তে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া জরুরি তার কয়েকটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলো</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">* এক বছর কিংবা দুই বছরের টার্গেট নির্ধারণ করে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অ্যাকশন এগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কিংবা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্য রেভল্যুশন অব ফুড মুভমেন্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এজাতীয় যেকোনো একটি আকর্ষণীয় বিপ্লবের নাম দিয়ে প্রজেক্ট হাতে নেওয়া। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">* সরকারের কৃষি, খাদ্য, বাণিজ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই চার মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি সেল গঠন করা। সেই সেলে কৃষিবিজ্ঞানী এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্যঃসমাপ্ত তরুণদের চুক্তিভিত্তিক প্রেষণে এনে একটি চৌকস টিম সাজানো। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">* এই সেল নির্দিষ্ট জেলা-উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে সার্ভের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষক শনাক্ত করে তাকে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া নিশ্চিত করবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">* খাদ্যপণ্য উৎপাদনে কৃষকদের ফসল অনুসারে জমি বাছাই, চাষপ্রক্রিয়া, আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও সেসব ব্যবহারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক সরবরাহসহ ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত কৃষকদের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে উল্লেখিত সেল কৃষকের পাশে থাকবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">* ফসল উত্তোলনের পর তা বাজারজাতকরণে উল্লেখিত সেলের ব্যক্তিবর্গের তত্ত্বাবধানে সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে উৎপাদিত খাদ্যপণ্য যৌক্তিক মূল্যে কিনে সরকারি যানবাহনে করে গুদামজাত করে তা চাহিদা মোতাবেক এ দেশের পাইকারি বাজারে নির্দিষ্ট দাম বেঁধে দিয়ে পণ্যগুলো বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া। সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখিত টিম প্রশাসনের সহায়তায় শক্ত হাতে বাজার মনিটর করা, প্রতিযোগিতা কমিশনকে শক্তিশালী করা। পাশাপাশি মজুদদার ও অসৎ আড়তদারদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে নজির সৃষ্টি করা এবং চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধ করা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লেখিত প্রক্রিয়া সততার সঙ্গে অনুসরণ করে কৃষকদের সহযোগিতার মাধ্যমে প্রান্তিক প্রকল্প দাঁড় করিয়ে এগিয়ে গেলে এ দেশ থেকে মধ্যস্বত্বভোগী অসাধু ব্যবসায়ী বা তথাকথিত বাজার সিন্ডিকেট চক্র লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে। পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি সংগত কারণেই নিয়ন্ত্রণে আসতে বাধ্য হবে। ফলে সাধারণ ভোক্তারা তাদের চাহিদা মোতাবেক কম মূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনতে আর বাধা থাকবে না। অন্যদিকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। আর এই অর্জনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের মূল জিডিপির ওপর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : কৃষিবিদ</span></span></span></span></p> <p> </p>