<p>ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ভিজিডি বর্তমান নাম ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডাব্লিউবি) প্রকল্পের বরাদ্দ করা চাল বিতরণস্থলেই বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গিয়ে চাল বিক্রির এই দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের দাবি, উপকারভোগীরাই এ সব চাল বিক্রি করছেন।</p> <p>সংশ্লিষ্টরা জানায়, সরকারের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর দেশের হতদরিদ্র নারীদের (দুস্থ মাতা) মধ্যে বিনা মূল্যে চাল দেওয়ার জন্য ভিডাব্লিউবি নামের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটির সাবেক নাম ছিল ভিজিডি। গত বছর জানুয়ারি থেকে নতুন নামে প্রকল্পটি চালু করা হয়।</p> <p>মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর গৌরীপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, রামগোপালপুর ইউনিয়নে ৩৭৮ জন হতদরিদ্র নারীকে ভিডাব্লিউবি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। প্রতিমাসে একজন কার্ডধারী উপকারভোগী ৩০ কেজি করে বিনা মূল্যে চাল বরাদ্দ পাবেন। বর্তমান বাজারে ৩০ কেজি চালের মূল্য প্রায় এক হাজার ৭০০ টাকা।</p> <p>বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ইউপি চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যে সরকারি প্রকল্পের চাল বেচাকেনা হচ্ছে। পাইকাররা প্রতি বস্তা (৩০ কেজি) চাল কিনছেন এক হাজার ৩০০ টাকায়। পরে চালভর্তি বস্তাগুলো ইজি বাইকে তুলে বিভিন্ন দোকানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে ইউপি থেকে চাল বিতরণের কাজ শুরু হয়। ওই সময় থেকেই চাল বেচাকেনা শুরু। প্রতিবস্তা চাল ১৩০০-১৩৫০ টাকায় কিনে নিচ্ছেন পাইকাররা।</p> <p>কার্ডধারী এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, এখন তো ধান আছে। তা ছাড়া এ সব মোটা চাল। খেতে স্বাদ লাগে না। তাই এই চাল বাড়িতে না নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছি।’</p> <p>চাল কিনতে আসা মো. শামীম মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তি বলেন, তার মাছের খামার আছে। উপকারভোগীরা চাল বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে ২০ বস্তা চাল কিনেছেন তিনি। </p> <p>শামীম আরো বলেন, বাজারে মাছের যেকোনো খাদ্যের কেজি প্রায় ৯০-১০০ টাকা। তবে এখানে ৩০ কেজির এক বস্তা চালের বস্তা এক হাজার ৩০০ টাকায় কেনা যায়।</p> <p>এ সময় ইউপি চত্বরে গিয়ে কোনো তদারকি কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। যদিও সরকারি পরিপত্রে বলা আছে, কোনো অবস্থাতেই তদারকি কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে বরাদ্দ বিতরণ করা যাবে না।</p> <p>ইউপি চত্বরেই সরকারি বরাদ্দের চাল বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি। তবে সচিব টুম্পা রানী সাহা বলেন, ‘উপকারভোগীরা চাল বিক্রি করে দিলে আমার কী করার আছে।’</p> <p>গৌরীপুর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, কোনো অবস্থাতেই সরকারি বরাদ্দের চাল বিক্রি করার নিয়ম নেই। যেসব উপকারভোগী চাল বিক্রি করে দিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করতে ইউপি সচিবকে বলা হবে।</p>