<p style="text-align:justify">সামুদ্রিক কাছিমের ডিম ছাড়ার মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে জনসমাগম ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে কাছিম বালুচরে উঠছে না। পরিবেশ অধিদপ্তরে কর্মরতরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। শীতের বেশ কয়েক দিন চলে গেলেও এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি কাছিম বালুচরে উঠে ডিম দিয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গেল বছরে ডিম ছাড়ার মৌসুমে বহু কাছিমের মৃত্যু হয়েছিল। প্রতিকূল পরিবেশের কারণেই এমনটি হচ্ছে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।</p> <p style="text-align:justify">পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো গত তিন দিনে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে তিনটি কাছিম ডিম ছেড়েছে। যা আশানুরূপ নয়।</p> <p style="text-align:justify">কাছিম তিনটির ডিমের সংখ্যা ৩৬৯টি। ডিম ছাড়তে কাছিমের নিরাপদ পরিবেশ দেওয়ার জন্য কাজ করছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মীরা।</p> <p style="text-align:justify">পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ডিম ছাড়ার জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি কাছিমের প্রথম পছন্দ। দ্বীপটির প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে দিন দিন কাছিমের আগমন কমছে।</p> <p style="text-align:justify">গত বছরের শীতে ১০ নভেম্বর সেন্ট মার্টিনের শিলবুনিয়া সৈকতে ডিম ছাড়ার জন্য উঠেছিল কাছিম। কিন্তু এবার আরো ২২ দিন পর গত শনিবার ভোর ৩টার দিকে একটি কাছিম সাগর থেকে উঠে ১০৫টি ডিম ছাড়ে।</p> <p style="text-align:justify">রবিবার ভোরে দ্বীপের শিলবুনিয়া সৈকতের একই স্থানে আরো একটি কাছিম এসে ১৪৪টি ডিম দিয়ে সাগরে গা ভাসায়। এর আগে, গত শুক্রবার রাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের সৈকতে বালুচরে উঠে ১২০টি ডিম দেয় আরেকটি কাছিম।</p> <p style="text-align:justify">পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আওসাফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, দ্বীপের বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিকূলে। ডিম ছাড়তে আসা কাছিমগুলো বিপাকে পড়ছে।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমি দ্বীপে অবস্থান নিয়ে ডিম ছাড়ার স্থানের আলো নিভিয়ে এবং লোকজনের হৈ-চৈ সামাল দিয়ে কাছিমগুলোকে বালুচরে উঠার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘এখন কাছিমের ডিম ছাড়ার সময়, বিধায় খুবই ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে। শত শত কুকুরের উপদ্রব ছাড়াও রয়েছে দ্বীপের সৈকতে গড়ে ওঠা রিসোর্টের লাইটিং এবং পর্যটকদের চিল্লাচিল্লি। এমন বাজে অবস্থায় কাছিমগুলো সহজে বালুচরে উঠতে পারছে না।’</p> <p style="text-align:justify">পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আওসাফ আরো জানান, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিম সৈকতের গলাচিপা ও শিলবুনিয়া এলাকায় অন্তত ৮ থেকে ১০টি রিসোর্ট রয়েছে। এসব রিসোর্টে রাতের বেলায় লাইটিং করা হয়, এতে পুরো সৈকত আলোকিত হয়ে পড়ে। রিসোর্টে থাকা পর্যটকরা রাতে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের আয়োজন করে। এসব কারণে কাছিম ডিম দিতে আসতে পারছে না। রয়েছে কুকুরের উৎপাত।</p> <p style="text-align:justify">কাছিমের ডিম সংগ্রহ ও হ্যাচারিতে ডিম ফুটিয়ে সাগরে অবমুক্ত করার কাজে জড়িত নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) কর্মকর্তা আবদুল কাইউম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গেল বছরের শীতে ডিম দিতে এসে প্রচুর কাছিমের মৃত্যু হয়েছিল।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি জানান, গেল বছরের ৬ মাসে শতাধিক মৃত কাছিম উপকূলে ভেসে এসেছিল। সেই সঙ্গে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার। এসব ডিমের বাচ্চা হ্যাচারিতে ফুটিয়ে অবমুক্ত করা হয়েছিল সাগরে।</p>