<p>ভোলার লালমোহনে দেশীয় অস্ত্র বগি দা বানিয়ে না দেওয়ায় রুবেল চন্দ্র কর্মকার নামের এক কামারকে মারধর করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের বাজারে এ ঘটনা ঘটে।</p> <p>রুবেল দুই দিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এর আগে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নেন রুবেল। তবে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তাকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। রুবেল লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্নদাপ্রসাদ এলাকার সরকারি পুকুর পাড়ের বাসিন্দা নিখিল চন্দ্র কর্মকারের ছেলে।</p> <p>রুবেলের ভাই জুয়েল চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজারে আমাদের কামারের দোকান। সোমবার রাতে ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরীর ছেলে ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মেহেদি দোকানে এসে একটি ভারী রড বের করেন। তা দিয়ে আমার ভাই রুবেলকে চারটি বগি-দা বানিয়ে দিতে বলেন তারা। এতে আমার ভাই অস্বীকৃতি জানালে তাদের দুজনের ভেতর কথা-কাটাকাটি হয়। পরে আমার বাবাকে গালাগাল করেন তারা।’ </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘রুবেল দোকান থেকে বের হলে মেহিদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। তখন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীসহ বাজারের ব্যবসায়ীরা আমার ভাই এবং বাবাকে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। এরপর তাদের কথামতো আমার ভাই বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়। পরে লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজারের দক্ষিণ মাথায় গিয়ে একটি দোকানে চা খেতে ঢোকে রুবেল। সেখানে মেহেদির নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে আমার ভাইকে হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।’</p> <p>জুয়েল চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাবা, আমিসহ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রে নিয়ে যাই। এরপর সেখান থেকে তাকে বাড়ি নিই। তবে সকালের দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। দুই দিন ধরে রুবেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।’</p> <p>মেহেদি বলেন, ‘মজার ছলে আমি রুবেলকে বলেছি, আওয়ামী লীগের আমলে তো অনেক বগি-দা বানিয়ে দিছিলি। এখন আমাদেরও কিছু বগি-দা বানিয়ে দে। সে এতে রাজি না হওয়ায় তার বাবাকেও একই কথা বলি। ওই সময় রুবেল তার মোবাইল দিয়ে আমাদের কথাবার্তার ভিডিও করে। যার জন্য আমি তার মোবাইল ছুড়ে ফেলে দিই। এরপর তারা আমাকে মারধর করেন। বিষয়টি আমার সঙ্গের লোকজন জানতে পেরে রুবেলকে মারধর করে।’</p> <p>মেহেদির বাবা ও ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরী বলেন, ‘রুবেলসহ কয়েকজন মিলে প্রথমে আমার ছেলেকে মারধর করেছে। এরপর আমার ছেলে তাদের মারধর করেছে। তবে তাদের চিকিৎসার জন্য টাকা দিয়েছি। রুবেল সুস্থ হলে এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।’</p> <p>লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জিএম বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করতে বলেছি। এ ছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় এসে মামলা দিতেও বলা হয়েছে। তারা অভিযোগ বা মামলা দিলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’</p>