চেয়ারম্যানের দুর্নীতি, ফেসবুক লাইভে তথ্য দিলেন ইউপি সদস্য

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
শেয়ার
চেয়ারম্যানের দুর্নীতি, ফেসবুক লাইভে তথ্য দিলেন ইউপি সদস্য
প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের লাইভে এসে গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে বক্তব্য দেন ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন। তিনি উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। এঘটনায় সর্বত্র চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। ফেসবুক লাইভে চেয়ারম্যানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ ইউপি সদস্য সেলিমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সেখানে তিন কার্য দিবসের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য বলা হলেও তিনি নির্দিষ্ট লিখিত জবাব না দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভ করেন।

২৫ মিনিটের ওই লাইভ ভিডিওতে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, ‘গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাশিড়া দিঘীরপাড় গ্রামীন ইট বিছানো রাস্তার কাজ চেয়ারম্যান নিজেই করছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে গিয়ে দেখি তিনি ভাঙা অর্ধেক ইট দিয়ে অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করছেন।

সেই কাজের বরাদ্দ ছিল ৩ লাখ টাকা। এই নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করেছি কিন্তু কাজে বাধা দেইনি। এর পরই চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এ ছাড়া আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের মাতৃভাতার কার্ড ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
যার সাথে সরাসরি চেয়ারম্যান জড়িত। তিনি মাতৃভাতার কার্ড করে দেওয়ার নামে নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু কার্ড করেও দিতে পরেননি এবং ভুক্তভোগীকে টাকাও ফেরত দেয়নি। যার প্রমান আমার কাছে আছে। অনেকের ভাতা হলেও পরে হিসাব নম্বর বদলে দিয়ে ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
গ্রাম আদালতে অভিযোগ ফি ২০ টাকা হলেও চেয়ারম্যানের হুকুমে বিনা রশিদে ৩০০ টাকা নেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান কাশিড়া তালুকদার পাড়া মাদ্রাসায় ও এতিম খানার টাকাও আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়া ওয়ারিশান সনদ প্রদানে রশিদ ছাড়াই টাকা নেওয়া হয়।’

তার অভিযোগ, ‘অন্যান্য ইউনিয়নে রশিদ দিয়ে ৫০ টাকা নিলেও এই ইউনিয়নে রশিদ ছাড়া ২০০ টাকা নেওয়া হয়। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে এটা তার ইচ্ছা বলে আমাকে সাফ জানিয়ে দেন। আবেদন করতে ১০০ এবং সনদ নিতে ২০০ টাকা সহ মোট ৩০০ টাকা গুনতে হয় সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে। জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও গাফিলতি রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন করতে ৫০ টাকা ফি নির্ধারিত থাকলেও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। গত ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরে বিতরকৃত ভিজিএফ চালে ১ হাজার ২০০ জনকে এক থেকে দেড় কেজি চাল কম দিয়েছেন।’

লাইভে তিনি আরো বলেন, ‘গত বছর এর প্রতিবাদ করায় এ বছর আমাকে না ডেকে অন্যের মাধ্যমে আমার ওয়ার্ডে ভিজিএফ চালের কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। যাদের কার্ড দিয়েছে তারাও কোন চাল পাননি। পরে তাদের টাকা দিয়ে বিদায় করা হয়েছে। তাহলে বরাদ্দকৃত চাল গেল কোথায়? চেয়ারমান হাবিবুর রহমানের ছত্রছায়ায় ঘটে যাওয়া নানা অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমাকে পরিষদ থেকে বাদ দিতে সে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। তার জবাব দিতে গেলেও পরিষদ থেকে তা গ্রহন করা হয়নি। পরে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জবাব দাখিল করেছি।’

ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান বিভিন্ন কৌশলে আমাকে হয়রানি করার অপচেষ্টা করছে। আমি ফেসবুক লাইভে যে অনিয়মের বিষয়গুলে তুলে ধরেছি তার উপযুক্ত তথ্য প্রমান আমার কাছে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী ইউয়নের সকল উন্নয়ন কাজ করা হয়। যা সরকারের নির্ধারিত দপ্তর প্রতিনিয়ত তদারকি করে থাকেন। এখানে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। ইউপি সদস্য সেলিম একজন উশৃঙ্খল প্রকৃতির ছেলে। সে অসৎ উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। সেই কারণে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সে কোন জবাব দিতে পারেননি। একারণে সে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ বিষয়ে আমার জানা নেই। ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন আমার অফিসে আসলেও সে কোন প্রকার লিখিত জবাব আমার অফিসে দাখিল করেননি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নৈশ প্রহরীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

কি‌শোরগঞ্জ প্রতি‌নি‌ধি
কি‌শোরগঞ্জ প্রতি‌নি‌ধি
শেয়ার
অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নৈশ প্রহরীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে (৩০) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে হাকিম (২৫) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন। এর আগে সোমবার ঈদের দিন রাতে কটিয়াদী উপজেলার টান চারিয়া গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত যুবক হাকিম (২৫) কটিয়াদী উপজেলার টান চারিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কটিয়াদী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান। 

হাবিবুল্লাহ খান বলেন, ‘ঈদের দিন রাতে কটিয়াদী পৌরসভার বোয়ালিয়া বাজারের পাশে টান চারিয়া এলাকায় ঘরের জানালা দিয়ে প্রবেশ করে ওই বাজারের নৈশ প্রহরীর স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন হাকিম মিয়া নামের এক যুবক। এমন খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, স্বামী রাতে বোয়ালিয়া বাজারে কর্মস্থলে চলে যাওয়ার পর ছোট সন্তানকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তিনি।

গভীর রাতে জানালা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন ওই যুবক।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজ ভিকটিম নিজেই হাকিম মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।

ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে।’

মন্তব্য

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
শেয়ার
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও লঞ্চঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়ি ছুটছে হাজার হাজার মানুষ। আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথের উভয় ঘাটের লঞ্চটর্মিনালে যাত্রীর ভিড় লেগেই আছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, যাত্রাপথে ভোগান্তির আশঙ্কাসহ নানা কারণে ঈদের আগে যারা বাড়ি যাননি, আজ তারা রাজধানী ছেড়ে নিজ নিজ গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর দৌলতদিয়া ঘাট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঈদের দ্বিতীয় দিনেও সেখানে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবোঝাই একেকটি লঞ্চ পনের মিনিট পরপর এসে ভিরছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে। টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে সেখান থেকে রাজধানীমুখো সামান্য কিছু যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো দ্রুত পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। এদিকে লঞ্চ থেকে ঘাটে নেমে হাঁটাপথ পেরিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট টার্মিনালে যাচ্ছে শত শত যাত্রী। সেখান থেকে বাস, মাহেন্দ্র, অটোরিকশায় বিভিন্ন গাড়িতে করে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে।
 

ঢাকার সাভার থেকে আসা পোশাককর্মী আফরোজা খাতুন বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুরে। ইচ্ছে ছিল ঈদের আগের দিন বাড়ি যাব। কিন্তু বিশেষ কাজ থাকায় যেতে পারিনি। আজ যাচ্ছি।

ছুটি শেষ হওয়ার এক দিন আগেই আবার সাভারে ফিরব।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, ‘সাড়ে চার বছর সাভারে থাকি। প্রতিবছর ঈদের আগে পাটুরিয়া ঘাটে যানজট থাকত। ঈদের পরে দৌলতদিয়া ঘাটে। তখন অনেক কষ্টে বাড়ি যেতে হতো।

কিন্তু এবার কোনো যানজট নেই। লঞ্চঘাটে মানুষের ভির থাকলেও কোনো ভোগান্তি নাই।’ 

এদিকে ঘাট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, যাত্রাপথে ভোগান্তির আশঙ্কাসহ নানা কারণে যারা ঈদের আগে বাড়ি যাননি, আজ তারা রাজধানী ছেড়ে স্বাচ্ছন্দ্যে নিজ নিজ গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। ঈদের পরদিন এই নৌপথে এতো মানুষ লঞ্চ পারাপার হতে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। 

দৌলতদিয়া লঞ্চ টার্মিনালে কর্তব্যরত বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক সুপারভাইজার শিমুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদের দ্বিতীয় দিন আজও রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়ি ছুটছে হাজারো মানুষ। ছোট-বড় ২০টি লঞ্চে সার্বক্ষণিকভাবে যাত্রী পারাপার করছে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
ঈদ আনন্দ

ভাড়া মিলনায়তনে চলছে বাংলা সিনেমা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
ভাড়া মিলনায়তনে চলছে বাংলা সিনেমা

ঈদে সব শ্রেণির দর্শকদের সুস্থ বিনোদন দিতে সিরাজগঞ্জ শহরের ইবি রোডের পৌর ভাসানী মিলনায়তনে বাংলা সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছে। ঈদের দিন থেকে চালানো হচ্ছে মেহেদি হাসান হৃদয় পরিচালিত ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান ও ভারতের নায়িকা ইধিকা পাল অভিনীত বাংলা ছায়াছবি ‘বরবাদ’। জনপ্রতি দেড় শত টাকায় টিকিট কেটে সিনেমা দেখছেন দর্শকরা। প্রজেক্টরের মাধ্যমে সিনেমা দেখানো হচ্ছে, ভিড়ও অনেক।

প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৩টা, সাড়ে ৬টা ও রাত্রী সাড়ে ৯টায় ৩টি শো’তে সিনেমা চলছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাগানো হয়েছে পোস্টার, করা হয়েছে মাইকিং। আগামী ১৫ থেকে ২০দিন এই সিনেমা প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

সিনেমা দেখতে আসা দর্শক নাজমুল হাসান, সুমন সেখ, আলী হোসেন ও রুবাইয়া জামান বলেন, প্রদর্শিত ছবিটা অনেক সুন্দর।

সিনেমা হলবিহীন সিরাজগঞ্জে ঈদ উপলক্ষে এ ধরনের আয়োজন করায় তারা অনেক খুশি। এ ধরনের বিনোদনের আয়োজন করায় আয়োজকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলগুলো পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন আগত দর্শকরা। 

আরো পড়ুন
চোখের পানিতে কাটল ফয়সালের মায়ের ঈদ

চোখের পানিতে কাটল ফয়সালের মায়ের ঈদ

 

সিনেমার আয়োজক ও চলচিত্র নৃত্যু পরিচালক সাইফুল ইসলামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ শহরের চক কোবদাসপাড়ায়।

তিনি চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সমিতির সাবেক সহসভাপতি এবং জাসাসের চলচ্চিত্রবিষয়ক সম্পাদক।

সিনেমা চালানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৪০০ সিটের এই মিলনায়তনটি দৈনিক ৫ হাজার ৭৫০ টাকা ভাড়ায় সিনেমা চালানো হচ্ছে। টিকিটের দাম ধরা হয়েছে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। প্রতিটি শোতে কিছু সিট খালি থাকলেও মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য এই আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যে সব জায়গায় সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে, সেই সব অঞ্চলে মিলনায়তন ভাড়া নিয়ে ছবি প্রদর্শনে আইনি কোনো বাধা নেই।

এজন্য মন্ত্রণালয়, সিনেমা হল মালিক, পরিচালক, প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি এবং সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
খেজুর থেকে দূরে থাকবেন যারা

খেজুর থেকে দূরে থাকবেন যারা

 

তিনি আরো বলেন, গত বছরও একই ভাবে সিনেমা চালানো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রতিহিংসামূলক কারণে অবৈধভাবে বাধা দেওয়ায় মাত্র ৩ দিন চালানোর পর সিনেমা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। এবার আশা করছি ১৫ থেকে ২০ দিন সিনেমা চালাতে পারব। সুস্থ বিনোদন উপভোগের জন্য অস্থায়ী এই সিনেমা হলে দর্শকদের আসার আহ্বান জানিয়েছেন এই আয়োজক।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ পৌরবাসীকে সুস্থ বিনোদন উপহার দেওয়ার জন্য দৈনিক ভাড়ার ভিত্তিতে পৌর ভাসানী মিলনায়তনে সিনেমা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মিলনায়তনের সার্বিক নিরাপত্তা দেবে আয়োজকরা। এভাবে সিনেমা চলতে পারে কি না সিনেমাসংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ভাল বলতে পারবেন, আমরা পৌরবাসীর বিনোদন প্রাপ্তির আশায় অনুমোদন দিয়েছি।’

মন্তব্য

চোখের পানিতে কাটল ফয়সালের মায়ের ঈদ

আতিকুর রহমান বাশার, দেবীদ্বার (কুমিল্লা)
আতিকুর রহমান বাশার, দেবীদ্বার (কুমিল্লা)
শেয়ার
চোখের পানিতে কাটল ফয়সালের মায়ের ঈদ
সন্তান ছাড়া ঈদ কাটানোর বর্ণনা দিচ্ছেন মা হাজেরা বেগম। ছবি : কালের কণ্ঠ

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফয়সালের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, হাজেরা বেগম ঘরে বসে কাঁদছেন। তার কান্নার কারণ, ঘরে কোনো ঈদের আনন্দ নেই। সন্তান ছাড়া কোনো মায়ের ঈদ আনন্দের হতে পারে না। হাজেরা বেগম গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ফয়সালের মা।

তার বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামে। জেলায় শহীদ পরিবারের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেছেন বাবা সফিকুল ইসলাম।

সাংবাদিকদের দেখে হাজেরা বেগম বলেন, ‘কত মানুষ দেখি, আমার মানিক ফয়সালকে দেখি না। ঈদ কাটল আমার কলিজার টুকরা মানিক ছাড়া চোখের পানিতে।

ঈদের আগে কেনাকাটার জন্য টাকা পাঠিয়ে আর বলল না, মা টাকা পাঠিয়েছি, তোমার, বাবার এবং ফাহাদের জন্য ঈদের নতুন কাপড় কিনে নিও। ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ে এসে বলল না, মা সেমাই দাও। কী অপরাধ ছিল আমার মানিকের?’

শহীদ ফয়সালের লাশ পায়নি পরিবার। বেওয়ারিশ হিসেবে রাজধানীর রায়েরবাজার বদ্ধভূমিতে গণকবর খুঁড়ে একসঙ্গে ১২০ জনকে দাফন করে দেয়।

সেই আক্ষেপ রয়েছে মায়ের। তিনি বলেন, ‘আমার পুতের লাশটিও পাইনি। মানিকের কবরের পাশে কান্না করার সুযোগও পাচ্ছি না।’

ফয়সাল সরকার পরিবার নিয়ে থাকতেন আবদুল্লাহপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। দুই ভাই ফয়সাল ও ফাহাদ পড়ালেখা করত দক্ষিণ খান এসএম মোজাম্মেল হক টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে।

এইচএসসি পরীক্ষা অংশ নিচ্ছিলেন ফয়সাল। আট বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পর শহীদ হন তিনি।

ছোট ভাই ফাহাদ সরকার জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি একটি বাসের সুপারভাইজার হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন ফয়সাল। গত বছরের ১৯ জুলাই চাকরিতে গিয়ে শহীদ হন তিনি।

ঘটনার ১২ দিন পর (১ আগস্ট) বিকেলে ছবি নিয়ে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে যোগাযোগ করলে ফয়সালের শহীদ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পরিবার। সেখানে শহীদদের তালিকায় ছবি দেখে ফয়সালকে শনাক্ত করা হয়। তবে ততক্ষণে বেওয়ারিশ হিসেবে রায়েরবাজার বদ্ধভূমিতে দাফন করা হয় ফয়সালের লাশ।

পরে প্রত্যক্ষদর্শী ও এক সাংবাদিকের বরাত দিয়ে পরিবার ফয়সালের শহীদ হওয়ার সময়ের ঘটনা জানতে পারে। ফাহাদ জানান, আন্দোলনের সময় রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে ফয়সালের মাথার খুলি উড়ে যায়। তাকে প্রথমে কুয়েত মেডিক্যালে এবং পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

বর্তমানে ফয়সালের বাবা অসুস্থ। সংসারের হাল ধরতে ফাহাদ লেখাপড়া বন্ধ করে এখন একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ