ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন বন্ধের দাবি

  • ► দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ► রাজধানী থেকে ৪ দাবি উত্থাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন বন্ধের দাবি
বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে হাজারো মানুষ। ছবি : কালের কণ্ঠ

কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠছে দেশ। দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল শনিবার উত্তাল ছিল রাজধানীর শাহবাগ। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীসহ হিন্দু ধর্মাবলম্বী নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়।

কালের কণ্ঠ’র প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, ময়মনসিংহ, নাটোর, কুড়িগ্রাম, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার, পঞ্চগড়, ফরিদপুর, বরিশাল ও নীলফামারীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিলিছ হয়েছে।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল বিকেল ৩টার পর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধরা। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে শাহবাগ হয়ে ফার্মগেট, মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ হয়ে এলিফ্যান্ট রোড এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশে হিন্দু নাগরিকদের ওপর বৈষম্য ও নিপীড়ন মেনে নেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বিকেল ৩টায় কর্মসূচি পালনের ঘোষণা থাকলেও দুপুর ২টা থেকে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবাদী ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে শাহবাগে জড়ো হতে থাকে। আগের দিনের বিক্ষোভ সমাবেশে শুধু হিন্দু সংগঠনের নেতাকর্মীরা থাকলেও গতকালের বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্যরাও অংশ নেয়। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে পুলিশ না থাকলেও সেনা সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে চার দফা দাবি উত্থাপন করে তা দ্রুত বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। চার দফা দাবিতে বলা হয়, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করতে হবে। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

সমাবেশে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ সচিবালয় সনাতন কমিউনিটির আহ্বায়ক মিঠু কুমার রায় বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হচ্ছে। কিন্তু নিরাপত্তা দেওয়ার কেউ নেই। প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে অনেকে বর্ডারে গিয়ে বসে আছে। তাদের সম্মানের সঙ্গে বাড়ি ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে হবে। আজ থেকে যেন আর হিন্দু বাড়ি, মন্দির পাহারা দিতে না হয়। মসজিদের মতো মন্দিরও যেন নিরাপদ থাকে।

সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়টি কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা মল্লিক। তিনি বলেন, ‘আমরাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। সেখানে বিজয়ী হলেও আমাদের মুক্তি নেই। তাই আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা নিরাপত্তা চাই।’

এদিকে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে। তাতে বক্তারা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসবের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্যদিকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গতকাল বরিশালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। কালের কণ্ঠ’র বরিশালের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গতকাল সকাল ১০টায় অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গণে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। সনাতনী বিদ্যার্থী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, ইসকনসহ সমমনা সংগঠন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

গতকাল বিকেল ৪টার দিকে কক্সবাজারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা নানা স্লোগানের পাশাপাশি হামলা, ভাঙচুরের বিচারের দাবি জানায়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে হবিগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকেলে হবিগঞ্জ শহরের আরডি হল প্রাঙ্গণে হবিগঞ্জের সনাতনী সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

গতকাল দুপুরে কুড়িগ্রাম শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে সারা দেশে হিন্দু নাগরিকদের ওপর নির্যাতন, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও হিন্দু সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ ছাড়া গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহের ফিরোজ জাহাঙ্গীর চত্বরে এবং নাটোর শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল দুপুরে পঞ্চগড় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে হিন্দু ছাত্র-জনতা কিছু সময় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

গতকাল বিকেলে ফরিদপুরের পৌর শহরের আলীপুর-টেপাখোলা সড়কে বিক্ষোভ শেষে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী সম্মিলিত হিন্দু সমাজের ব্যানারে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়।

এদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শুক্রবার থেকে বসতভিটাসহ সব ফেলে রেখে ভারতীয় সীমান্তে অবস্থান করছে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতির পর গতকাল বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত বর্তমানে শান্ত উল্লেখ করে গুজবে কান না দেওয়ার আহবান জানানো হয়।

গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বলেন, ‘সীমান্তে হঠাৎ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হয়। তারা ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করে। সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এই দেশ সবার, কেউ গুজবে কান দেবেন না। আমরা আপনাদের নিরাপত্তায় সর্বদা কাজ করছি।’

[প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা তথ্য দিয়েছেন]

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

‘বৈসাবি’ শব্দটি যেভাবে এসেছে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘বৈসাবি’ শব্দটি যেভাবে এসেছে
ছবি : কালের কণ্ঠ

পার্বত্য চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে বৈসাবি উৎসব। আজ শনিবার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব শুরু হয়। এটি পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব।

বৈসাবি উৎসব ঘিরে পাহাড়জুড়ে বইছে আনন্দের বন্যা।

সকালে রাজবনবিহার, গর্জনতলী ত্রিপুরা এলাকা, কেরানী পাহাড়সহ জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ফুল ভাসানোসহ চলছে বৈসাবির বর্ণাঢ্য আয়োজন।

বৈসাবিকে চাকমা ভাষায় ‘বিজু’, ত্রিপুরাদের ভাষায় ‘বৈসুক’, মারমাদের ভাষায় ‘সাংগ্রাই’, তংচঙ্গ্যাদের ভাষায় ‘বিজুু’ এবং অহমিয়াদের ভাষায় ‘বিহু’ নামে আখ্যায়িত করা হয়।

গত শতকের নব্বই দশক থেকে বিভিন্ন নামের একই উৎসব অভিন্ন নামে ‘বৈসাবি’ হিসেবে উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গঠিত হয় বৈসাবি উদযাপন কমিটি।

অনেকের মনে করেন, পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রয়োজনেই বৈসাবি শব্দটি এসেছে।

জানা গেছে, পাহাড়ের বর্ষবিদায় ও বরণ উপলক্ষে ১৯৮৭ সালে রাঙামাটি কলেজে একটি দেয়ালিকা প্রকাশিত হয়। পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উৎসবের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয় দেয়ালিকাটির। ওই নামটি পরে পাহাড়ি বিভিন্ন সংগঠনের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

সামরিক শাসনের সেই সময়ে কোনো সংগঠনের নামে উৎসব, শোভাযাত্রা করা সম্ভব ছিল না। এ জন্য পাহাড়ের সব জাতিগোষ্ঠীকে একই সাংস্কৃতিক সংহতির গাঁথুনিতে নিয়ে আসার জন্য ‘বৈসাবি’ নামে প্ল্যাটফরম করা হয়েছিল।

মন্তব্য

‘মহাকাশ প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বাংলাদেশ ও তুরস্কের জন্য লাভজনক হবে’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘মহাকাশ প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বাংলাদেশ ও তুরস্কের জন্য লাভজনক হবে’
সংগৃহীত ছবি

মহাকাশ প্রযুক্তিতে ঢাকার একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার প্রয়োজন উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্ক যদি একে অন্যকে সহযোগিতা করে, তাহলে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।’

তুরস্কে ‘আনাতোলিয়া কূটনীতিক ফোরামের (এডিএফ) ফাঁকে ‘টার্কিশ এয়ারোস্পেস’-এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহমেত ডেমিরোগ্লুর সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমও অংশ নেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশে বিনিয়োগের খাত অন্বেষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আমন্ত্রণে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুযোগ অন্বেষণ ও ভবিষ্যতে সহযোগিতার জন্য ‘টার্কিশ এয়ারোস্পেস’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে তুরস্কের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসতে সম্মত হয়েছে।

তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল শুক্রবার তুরস্কের আনাতোলিয়ায় তিন দিনব্যাপী ‘আনাতোলিয়া কূটনীতিক ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ শুরু হয়েছে।

এই ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো, ‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ফোরামের আয়োজন করেছে। 

বিশ্বনেতা, নীতি-নির্ধারক, শিক্ষাবিদ, ব্যাবসায়িক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়েছেন ফোরামে। এই ফোরামের মাধ্যমে কিভাবে কূটনীতির পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায় এবং একটি বিভক্ত বিশ্বে সম্মিলিত পদক্ষেপের একটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়, তা অনুসন্ধান করার কথা জানিয়েছেন আয়োজকরা।

২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, ৫০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধি, পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ৪ হাজার জনেরও বেশি অতিথি ফোরামে অংশগ্রহণ করেছেন।

মন্তব্য

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চেয়ে কাঁদল লাখো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চেয়ে কাঁদল লাখো মানুষ
ছবি : বিএনপি মিডিয়া সেলের সৌজন্যে।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় করা হয় এই বিশেষ মোনাজাত। মোনাজাতে অংশ নেওয়া মানুষের চোখে ছিল অশ্রু। শনিবার (১২ এপ্রিল)  বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ৪টার দিকে।

মোনাজাত করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। 

মোনাজাতে বলা হয়, ইসরাইল ফিলিস্তিনে যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা মানবতার ওপর চরম আঘাত। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, যেন তিনি নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষা করেন এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতার আলো দেখান।

আরো পড়ুন
চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় মামলা

চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় মামলা

 

মোনাজাতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের চোখে ছিল অশ্রু।

ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলা, শিশু ও নারীদের মৃত্যু, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার করুণ বাস্তবতা হৃদয়ে নিয়ে মানুষ প্রার্থনা করে শান্তির জন্য।

একই সঙ্গে মোনাজাতে গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলা বন্ধ হওয়া, ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধার ও আহতদের সুস্থতা, শিশু ও নিরীহ নাগরিকদের জীবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ, বিশ্বনেতাদের বিবেক জাগ্রত হওয়া, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত আগ্রাসনের বিচার চেয়ে দোয়া করা হয়েছে।

এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে বিখ্যাত কারী আহমদ বিন ইউসুফের কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে এই কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক।

কর্মসূচির মূল মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

ঘোষণাপত্রে অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের চুক্তি বাতিল ও সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিমবিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

আরো পড়ুন
দ্রুত দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি বিএফইউজের

দ্রুত দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি বিএফইউজের

 

এদিন সকাল থেকেই দেশ ও রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমবেত হয় নানা বয়স ও পেশার মানুষ। সমাবেশে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও প্রতিনিধিরা ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়।

উল্লেখ্য, ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে একত্রিত হয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিল্পী, কবি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিচিত মুখরা। এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে দল-মত-নির্বিশেষে সবাই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয় এবং সাহসী কণ্ঠে প্রতিবাদ জানায়।

শনিবার সকাল থেকেই ‘মার্চ ফর গাজা’ গণজমায়েত কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যেতে শুরু করে। শাহবাগ ও আশপাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মন্তব্য

জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ : আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ : আলী রীয়াজ
সংগৃহীত ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের। কমিশন ও সরকার দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। কী প্রক্রিয়ায় সংস্কার কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চায় কমিশন।’

আজ শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ জাসদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

 

আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি শেষ করতে চায় কমিশন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঐকমত্য কমিশন রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করতে পারবে বলে আশা করি।’

আরো পড়ুন
পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হবে ‘মেগাপ্রকল্প’

পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হবে ‘মেগাপ্রকল্প’

 

সংলাপে বাংলাদেশ জাসদের নেতারা জানান, সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টার মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করা হয়েছে।

এই প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধানের শুরুতে রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ রাহমানির রাহিম রাখা, নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বয়সসীমা কমানোর বিষয়ে দ্বিমত জানিয়েছেন তারা।

সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

সংলাপে জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

শুরুতে নিজেদের প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ পাঠ করেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন।

এদিকে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে বিকেলে ঐকমত্য কমিশনের সাথে জাকের পার্টির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ভুইয়া, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এজাজুর রসুল, অতিরিক্ত মহাসচিব মুরাদ হোসেন জামাল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নেছা জামান রেণু প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন সংস্কারে গঠিত পাঁচটি কমিশনের ১৬৬ সুপারিশে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চায় কমিশন।

এ পর্যন্ত ৩২টি দল তাদের মতামত দিয়েছে। 

লিখিত মতামতের ভিত্তিতে এলডিপি, খেলাফত মজলিস, লেবার পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি ও নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপ করেছে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে একমত হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে সই হবে জুলাই সনদ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ