<p style="text-align:justify">নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘আমাদের কাজ হলো নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া। কারা নির্বাচনে আসবে বা আসবে না, কারা যোগ্য কিংবা যোগ্য নন, সেই সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।’</p> <p style="text-align:justify">আজ রবিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময়সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।</p> <p style="text-align:justify">অনেক দল গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের নির্বাচনে সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে আমাদের সুপারিশ থাকবে। ওই সব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, আইনগত সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত আদালত ও নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আসবে। আগে যা ঘটেছে তার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে। নির্বাচনীব্যবস্থাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে, সেটা ফিরিয়ে আনতে সবাই বদ্ধপরিকর।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আজকে কথা বলেছেন। উনারা ব্যবহৃত হতে চান না। নাগরিক হিসেবে তারা স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তারাও চান সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। তাই তারা সেভাবেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করবেন।’</p> <p style="text-align:justify">নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইভিএমের আর প্রশ্নই আসে না। ওটা হবে না। নির্বাচন কমিশনও বলেছে, আমরাও একই মত দিয়েছি।’</p> <p style="text-align:justify">বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘প্রার্থীদের হলফনামায় অনেক ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য থাকে এবং তথ্য গোপনও করা হয়। এগুলো যাতে যাচাই-বাছাই করা হয় সেই প্রস্তাব দেওয়ার কথাও আমরা বিবেচনা করছি। আমাদের প্রস্তাবনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমরা সবগুলো বিবেচনায় নিচ্ছি। আমরা আশা করছি, যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, সেই সময়ের আগেই আমরা আমাদের প্রস্তাব দেব।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপক দাবি আছে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচনী ট্রেনটা যেন ট্র্যাকে ওঠে। এ জন্য প্রথম কাজ যেটা দরকার ছিল নির্বাচন কমিশন গঠন করা, তাই করেছেন। আমাদের কাজের সাথে তাদের কোনো রকম সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ করছে না। ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে তাদের অনেকগুলো কাজ আছে, এটা শুরু করা দরকার। এই জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যাদেরকে নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়েছে তারা অত্যন্ত সম্মানিত এবং দলনিরপেক্ষ ব্যক্তি। তারা যাদের নাম প্রস্তাব করেছেন তাদের থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তারা সঠিক ব্যক্তি এবং তারা আমাদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন।’</p> <p style="text-align:justify">বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা আশা রাখি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরবে। এখানে বেশ কিছু পদক্ষেপ আছে। হাইকোর্টের যে রায়, সেটা সুপ্রিম কোর্টে যাবে। আমরা আশা করছি, সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ের পক্ষেই থাকবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে আরেকটা যে মামলা আছে, সেটা নিয়েও আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’</p> <p style="text-align:justify">এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষ তাদের মনের আকুতি ব্যক্ত করতে চায়। তারা বিভিন্ন প্রস্তাব দিতে চায়। ই-মেইলে হাজার মানুষ মতামত দিচ্ছে। তাদের সবারই আকুতি একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। যার মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র একটা শক্ত ভীতের ওপর দাঁড়াবে। এটা জন-আকাঙ্ক্ষা এবং আমাদেরও একই আকাঙ্ক্ষা। আমরা সততা এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করছি। মানুষের কাছ থেকে যা শুনেছি এবং আমাদের জ্ঞানবুদ্ধি, অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে কিছু প্রস্তাব দেব। কিন্তু বাস্তবায়ন আমাদের দায়িত্ব নয়। আমরা আশা করছি, রাজনৈতিক দল, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন এগুলো বাস্তবায়ন করবে।’</p> <p style="text-align:justify">এ সময় নির্বাচনীব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন টুলী, তোফায়েল আহমেদ, আবদুল আলীম এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম উপস্থিত ছিলেন।</p>