<p style="text-align:justify">রেস্টুরেন্ট খাতে অন্যায় ও অযৌক্তিক বর্ধিত ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও আগের ন্যায় ৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। অন্যথায় রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে তারা।</p> <p style="text-align:justify">বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভ্যাট ও এসডি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং রেস্তোরাঁ সেক্টরের সংকট প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।</p> <p style="text-align:justify">লিখিত বক্তব্যে ইমরান হাসান বলেন, ‘জনজীবনের কথা চিন্তা না করে যদি শুধু আইএমএফের শর্ত পূরণের জন্য ভ্যাট বাড়ানো হয়, এটি আমাদের জন্য হবে দুর্ভাগ্যজনক। বর্তমানে দেশের অস্থিতিশীল বাজার পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে ভ্যাটের হার তিন গুণ বৃদ্ধিতে আমরা আতঙ্কিত, দিশাহীন ও শঙ্কিত যে-রেস্তোরাঁ সেক্টরের এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কত দিন এভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। উদ্বেগের বিষয় হলো—সরকার প্রশাসনকে উল্টো পিরামিড বানিয়ে যেভাবে ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে, তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বহুবার সরকারকে জানিয়েছি যে সরকারের একার পক্ষে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই রেস্তোরাঁ খাতের সবাইকে একটি কমপ্লায়েন্সের আওতাভুক্ত করে, নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেস্তোরাঁ সেক্টরে কর্মরত ৩০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রেনিং, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরিতে সরকারি কার্যকর উদ্যোগের প্রয়োজন। বর্তমানে ১২টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার তদারকিতে কার্যক্রম পরিচালনা করায় আমরা ব্যাবসায়িকভাবে নানা হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছি। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি যেকোনো একটি মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর/সংস্থার মাধ্যমে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চাই।’</p> <p style="text-align:justify">ইমরান হাসানের অভিযোগ, আগের সরকারের মতো এই সরকারও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ভোক্তাদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। আগেও বড় ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া হতো, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা হতো না; এখনো তার ধারাবাহিকতা বজায় আছে।</p> <p style="text-align:justify">ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। তিনি বলেন, তারাও কেবল বড় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করেছে।</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরও বলেন, ‘এতে করে সরকার ও সমিতির ঐক্য প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সব রেস্তোরাঁ, স্ট্রিট ফুড ও সব খাদ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। সব রেস্তোরাঁ ও রেস্তোরাঁ সেক্টরকে ইএফডি মেশিনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এতে করে অসম প্রতিযোগিতা দূর হবে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি বা নবায়নেও এখন সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের, এ বিষয়েও সরকারের হস্তক্ষেপ চাই আমরা।’</p> <p style="text-align:justify">মহাসচিব বলেন, রেস্তোরাঁ ব্যবসার ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নামে আরও একটি ১০ শতাংশ কর আগে থেকেই আছে। অর্থাৎ ভ্যাট ১৫ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১০ শতাংশ যোগ করা হলে ভোক্তাদের মোট ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে। এ অবস্থায় ভোক্তার কাছ থেকে কোনোভাবেই এই ২৫ শতাংশ বাড়তি কর আদায় করা সম্ভব হবে না। উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে ব্যবসা পরিস্থিতি খারাপ যাচ্ছে এবং বর্ধিত ভ্যাট আরোপিত হলে সামনে আরো খারাপ হবে।</p>