<p>মৌলিক কিংবা যৌগিক—যেকোনো পদার্থের তিনটি অবস্থা থাকে—কঠিন, তরল ও বায়বীয়। এটা নির্ভর করে তাপমাত্রার ওপর।</p> <p>কোনো কোনো পদার্থ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কঠিন অবস্থায় থাকে। যেমন, মাটি, ইট, লোহা, কাঠ, নানাররকম ধাতব পদার্থ ইত্যাদি।</p> <p>কিছু পদার্থ আবার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় তরল। যেমন, পানি, বেশিরভাগ তেল, দুধ, মধু ইত্যাদি। কিছু কিছু পদার্থ স্বাভাবিক অবস্থায় বায়বীয়। যেমন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, নানা ধরনের জ্বালানী গ্যাস ইত্যাদি।</p> <p>তাপমাত্রা পরিবর্তন করে এসব পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব। যেমন, পানিকে তাপ দিয়ে যদি উৎতপ্ত করা হয় বেশ কিছুক্ষণ ধরে, এক সময় তাপমাত্রা যদি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়, পানি তখন পরিণত হয় বাষ্পে। আবার পানিকে ঠান্ডা করে শূন্য ডিগ্রিতে নিতে পারলে কঠিন অর্থাৎ বরফে পরিণত হয়। তেমনি লোহাকে তাপ দিয়ে যদি ১৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেওয়া যায়, লোহা গলে তরলে রূপ নেয়।</p> <p>তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে ২৮৬১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নিলে লোহার বাষ্পও পাওয়া সম্ভব।</p> <p>যে তাপমাত্রায় কোনো কঠিন বস্তু গলে তরলে পরিণত হয়, তাকে বলে ওই বস্তুর গলনাংক। পানির গলনাংক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ শূন্য ডিগ্রিতে বরফ পানিতে পরিণত হয়। অন্যদিকে যে তাপমাত্রায় তরল পদার্থ বাস্পে পরিণত হয়, সেই তাপমাত্রাকে বলে স্ফুটনাংক। পানির স্ফুটনাংক ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।</p> <p>নারকেল তেলেরও একটা গলনাংক আছে, সেটা হলো ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা এর নিচে নামলেই নারকেল তেল জমে যায়। বাংলাদেশে বেশিরভাগ সময়ই তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকে। তাই সাধারণত এখানে নারকেল তেলকে আমরা তরল হিসেবে দেখি। কিন্তু শীতকালে তাপমাত্রা কমে ২৪ ডিগ্রির নিচে নেমে যায়, তখন নারকেল তেল জমে কঠিনে রূপ নেয়। যদিও কঠিন হলে সেটা বেশ নরম ধাঁচের।</p> <p>আমাদের দেশের অবস্থান উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে। তাই আমরা সহজেই তরল নারকেল তেল মাথায় মাখতে পারি সারাবছরই। কিন্তু শীতকালে জমে যায়, তখন মাথায় নারকেল তেল মাখা সমস্যা হয়ে যায়। তাপ দিয়ে গলিয়ে মাখা যায়। কিন্তু মাথায় দিলেই তেল আবার জমে যায়, চটচটে হয়ে যায় চুল। সহজেই ধুলো ময়লা জমে চুল নোংরা হয়। তখন খুশকিসহ নানা ধরনের মাথার অসুখ হতে পারে। তাই শীতকালে নারকেল মাথায় না দেওয়াই ভালো।</p> <p>সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস</p>