<p>যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়ানো দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি অগ্নিনির্বাপনকর্মীরা। প্রচুর বাড়িসহ ১০ হাজারের বেশি কাঠামো আগুনে পুড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে অন্তত দশজনের।</p> <p>ভয়াবহ এই দুর্যোগ মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, প্রতিবেশী কাউন্টিগুলো থেকেও আনা হচ্ছে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম ও কর্মী বাহিনী।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটিতে কেন দাবানল এমন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না সেই প্রশ্নটি এখন সামনে আসছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ফলে খরা আর প্রবল বাতাসের কারণে দাবানল দ্রুত ছড়াচ্ছে।</p> <p>দাবানলের শিখা ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা আনা বাতাসের কথা বলা হচ্ছে। মরুভূমির পরিবেশ বা শুষ্ক অঞ্চল থেকে ঘণ্টায় ৯৭ কিলোমিটার গতিতে এই বাতাস বয়ে যায় উপকূলের দিকে। এ বাতাসকে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার বড় কারণ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।</p> <p>নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, সান্তা আনার এই বাতাসই লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল উসকে দিচ্ছে, যা বাড়িঘর ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে, বাস্তুচ্যুত করছে হাজারো মানুষকে। শুষ্ক আর উষ্ণ সান্তা আনার বাতাস বেশ শক্তিশালী। যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা, উটাহ ও ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের শুকনো এলাকা থেকে এটি উড়ে আসে।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের অনন্য ভৌগলিক বৈচিত্রের কারণে নেভাদা, উটাহর অংশ ও অন্যান্য কাউন্টিগুলোর কিছু অংশ জুড়ে গ্রেট বেসিন অঞ্চল। এই অঞ্চলে যখন বেশি উচ্চচাপ সৃষ্টি হয়, তখন সেটি গতি পেয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার নিম্নচাপ থাকা অঞ্চলের দিকে ধেয়ে এই উষ্ণ বাতাস বইতে থাকে, যাকে বলা হচ্ছে সান্তা আনা বাতাস।</p> <p>বিবিসি লিখেছে, প্রবল বৃষ্টি আর বাতাস দাবানলে ঘি ঢাললেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে, যা এমন দাবানলের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে।</p> <p>ফায়ার ফাইটাররা প্রাণপণ চেষ্টার পরও তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগুন নেভাতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ছয় অঙ্গরাজ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ক্যালিফোর্নিয়ায় আনা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ২৫০টি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এবং ১ হাজার সদস্য দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় গেছেন।</p> <p>ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির পাশাপাশি হেলিকপ্টারও আগুন নেভানোর কাজে মাঠে নেমেছে। অ্যান্থনি ম্যারন বলেন, ‘আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করছি। তবে লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিসের সব বিভাগ মিলেও এই আগুন নেভানোর মতো যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী নেই।’</p> <p>আগুন নেভানোর কাজে নতুন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে পানি। কারণ, গত কয়েক মাস ধরে ক্যালিফোর্নিয়ায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টি হয়নি। ফলে প্যাসিফিক প্যালিসেইডস এলাকার কিছু হাইড্রেন্ট (আগুন নেভানোর জন্য পানি সরবরাহ পাইপ) শুকিয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জেনিস কুইনোনেস বলেন, শহুরে পানি সরবরাহব্যবস্থা দিয়ে দাবানল নেভাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন তারা।</p> <p>ক্যালিফোর্নিয়ার পানি সংকট নিয়ে চটেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার সরকার অযোগ্য। এই পানিসংকটের কারণে আগুন নেভানোয় বাধা আসছে। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে মৃত্যু বেড়ে ১০" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/10/1736496110-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে মৃত্যু বেড়ে ১০</p> </div> </div> </div> </div> </div> <p>তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আগুন নেভাতে যা যা দরকার সব করবে সরকার।</p>