<p>মায়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের অদূরে থান্ডওয়ে নৌঘাঁটির দখল নিয়েছে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। পাশের গাওয়া শহরও তাদের দখলে বলে দ্য ইরাবতী গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।</p> <p>ইরাবতী নদীসংলগ্ন ওই অঞ্চল সামরিক অবস্থানগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাওয়া থেকেই পথ গেছে ইয়াঙ্গুন ও রাজধানী নেপিডোর দিকে। কয়েক মাস আগে কায়কতাও নৌঘাঁটি দখল করেছিল আরাকান আর্মি। কিন্তু এবার কার্যত মায়ানমারের মূল প্রশাসনিক কেন্দ্রের কাছে চলে এসেছে তারা। জান্তা সরকারকে উত্খাত করতে এরপর বিদ্রোহীদের যৌথ বাহিনী সেদিকেই এগোতে পারে বলে দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ১৩ মাসের গৃহযুদ্ধে এই প্রথম ইরাবতী নদীর অববাহিকায় অনুপ্রবেশ করল আরাকান আর্মি।</p> <p>বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনের পর স্থানীয় সময় গত রবিবার রাতে মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের দখল নিয়েছে মায়ানমারের বিদ্রোহীরা। এই অংশেই মায়ানমারের কুকি জনগোষ্ঠীর (যারা সে দেশে কুকি-চিন নামে পরিচিত) বসবাস। ফলে নতুন করে সীমান্ত পেরিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জান্তা সরকারের বাহিনীকে হটিয়ে থাইল্যান্ড ও চীনের সীমান্তবর্তী এলাকার বড় অংশ কয়েক মাস আগেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বিদ্রোহী জোট। চলতি মাসের শুরুর দিকে বৃহত্তম বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নেতৃত্বে বিদ্রোহী জোট দখল করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশ। এবার মণিপুরসংলগ্ন অঞ্চলও তাদের দখলে গেল। গাওয়ার অদূরেই সৈকত শহর এনগাপালিতে জান্তা সেনার ‘ওয়েস্টার্ন কমান্ডে’র সদর দপ্তর। এরই মধ্যে সেখানে আরাকান আর্মি ও তাদের সহযোগী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি হামলার প্রস্তুতি শুরু করেছে।</p> <p>জান্তাবিরোধী নতুন জোট ‘চিন ব্রাদারহুড’-এর শরিক ‘ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স’, সাগাইন অঞ্চলে সক্রিয় ‘ইয়াও আর্মি’ ও ‘মনিওয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ চিন রাজ্য দখলের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে দ্য ইরাবতীর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চির দল ‘ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উত্খাত করেছিল মায়ানমার সেনারা। শুরু হয়েছিল সামরিক জান্তার শাসন। এর আড়াই বছরের মাথায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহীগোষ্ঠী ‘তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’র (এমএনডিএএ) নতুন জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’। সূত্র : দ্য ইরাবতী</p> <p> </p>