<p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মণিপুরে অস্থিরতা থামছেই না। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। এ সময় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এতে উভয় পক্ষের সংঘাতে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পূর্ব ইম্ফল জেলার সাইবল গ্রাম থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী হটানোর দাবিতে আন্দোলন করছে কুকি জনগোষ্ঠী। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কাংপোকপির পরিবহন ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে বিক্ষোভকারীরা। নিরাপত্তারক্ষীরা যখন সেই কাজে বাধা দেন, তখন পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সহিংসতার রাশ টানতে কয়েক মাস ধরে মণিপুরের নানা অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। কুকি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে অভিযান চালিয়ে এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর সাইবল গ্রামে অভিযান চলাকালে নারীদের বাধার মুখে পড়ে নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযোগ ওঠে, নারীদের লাঠিপেটা করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে কুকি সংগঠনগুলো বিক্ষোভ শুরু করে। রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি গত শুক্রবার সেই বিক্ষোভ চরম আকার নেয়। শুক্রবার কাংপোকপি জেলায় ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। কাংপোকপির ডেপুটি কমিশনারের ভবন লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে তারা। পাল্টা জবাব দেয় নিরাপত্তা বাহিনীও। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। সেই সঙ্গে শূন্যে গুলিবর্ষণ করা হয়। হুড়াহুড়িতে আহত হয় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী। এ ছাড়া কাংপোকপি জেলার এসপিসহ পুলিশ সদস্যরাও আহত হন। এমন একটি দিনে এই হামলার ঘটনা ঘটল, যেদিনই মণিপুরের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সেখানে গেছেন ভারতের সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে সাইবল গ্রামে নারীদের নিরাপত্তা বাহিনীর লাঠিপেটার অভিযোগ ঘিরে কুকিদের একটি সংগঠন অর্থনৈতিক অবরোধ কর্মসূচি দেয়। কুকি-জো কাউন্সিল সংগঠন জানায়, আদিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি অবজ্ঞার প্রতিবাদে ২ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ শুরু করেছে তারা। গতকাল শনিবার রাত ২টা পর্যন্ত তাদের এই অবরোধ কর্মসূচি চলার কথা। সংগঠনের চেয়ারম্যান হেনলিয়েনথাং থাঙ্গলেট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর লাঠিপেটায় আহত নারীদের ক্ষতিপূরণ না দিলে তাঁরা বিক্ষোভ আরো জোরদার করবেন। তিনি বলেন, বাফার জোনের পবিত্রতা রক্ষায় সরকার ব্যর্থ হলে ফের অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"> </p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অবৈধভাবে মাস্কের স্টারলিংক ডিভাইসের ব্যবহার </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারত সরকারের লাইসেন্স না থাকার পরও অবৈধভাবে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক ডিভাইস মণিপুরে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাতিগত সহিসংতা ঘিরে ভারত সরকার রাজ্যটিতে বিভিন্ন সময় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখছে। আর এই সময়গুলোতে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো স্টারলিংকের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছে। সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও পুলিশ সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এমন খবর দেয়। মণিপুরের পিপলস লিবারেশন আর্মি নামের মেইতে জনজাতির একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা বলেন, সহিংসতার সময় কর্তৃপক্ষ যখন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে রাখে, তখন তাঁরা স্টারলিংক ডিভাইস ব্যবহার করে ইন্টারনেট সেবা নেন। ওই নেতা আরো বলেন, শুরুর দিকে তাঁরা মায়ানমারে গিয়ে স্টারলিংকের ডিভাইস ব্যবহার করতেন। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন যে মণিপুর সীমান্তজুড়ে এই ডিভাইস কাজ করে। মণিপুরের এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাও বলেছেন, প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, স্টারলিংকের ডিভাইস ব্যবহার করে বাস্তবিকই মণিপুরের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষত মায়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি এলাকাগুলোয় ইন্টারনেট পাওয়া যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। সহিংসতা ঘিরে রাজ্যটিতে এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। মাঝে কিছুদিন বিরতির পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বাড়ির পাশাপাশি বেশ কয়েকজন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কারফিউ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির অদূরে বোমা পাওয়া যায়। এই পরিস্থিতিতে বীরেনের নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। ২০২৪ সালের শেষ দিন রাজ্যের অস্থিরতার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে করজোড়ে ক্ষমা চান বীরেন। নতুন বছরে রাজ্যে শান্তি ফেরানোর আশ্বাস দেন তিনি। তবে এমন আশ্বাস সত্ত্বেও এখনো মণিপুরে শান্তি ফেরেনি। সূত্র : দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা, দ্য গার্ডিয়ান, এনডিটিভি</span></span></span></span></span></p>